ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অঙ্গীকার দিয়ে পার পেল রবি

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ২ মার্চ ২০১৮

অঙ্গীকার দিয়ে পার পেল রবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ফাঁকি দেয়া রাজস্ব পরিশোধের ‘অঙ্গীকারনামা’ দিয়ে প্রথমবারের মতো পার পেল বেসরকারী মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড। সরকারী পাওনা পরিশোধের অঙ্গীকারনামা দেয়ায় বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব খুলে দিতে সব ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে বৃহৎ করদাতা ইউনিট। বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিউ)-মূসক এর কমিশনার মতিউর রহমান এর সই করা চিঠি দেয়া হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে রবির ব্যাংক হিসাব জব্দে এলটিইউ এর সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা স্থগিত করেছেন আপীল বিভাগ। সকল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দেয়া চিঠিতে বলা হয়, ‘বৃহৎ করদাতা ইউনিট, মূসক দফতরের উক্ত পত্রের মাধ্যমে রবি আজিয়াটা লিমিটেড এর ব্যাংক হিসাব অপরিচালনযোগ্য (ফ্রিজ) করার জন্য পত্র প্রেরণ করা হয়। অতঃপর প্রতিষ্ঠান এ মর্মে অঙ্গীকারনামা দেয় যে, অবলিম্বে সরকারী পাওনা পরিশোধ করবে। এমতাবস্থায়, প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব পরিচালনযোগ্য (আনফ্রিজ) করার অনুরোধ করা হলো।’ এর আগে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) রনি থমি সই করা একটি অঙ্গীকারনামার চিঠি এলটিইউ কমিশনার বরাবর পাঠানো হয়। এ বিষয়ে এলটিইউ কমিশনার মতিউর রহমান বলেন, রবি আজিয়াটা লিমিটেডের সিইও আমাকে বিদেশ থেকে এসএমএস করেছেন এলটিইউ এর যে রাজস্ব পাওনা রয়েছে তা দ্রুতই সমধান করা হবে। এছাড়া সিএফও আমাকে চিঠি পাঠিয়েছেন আজকে ব্যাংক হিসাব খুলে দিলে রবিবার টাকা দিয়ে দেবেন। বাকি যে রাজস্ব রয়েছে যেগুলোর জন্য মামলা হয়নি সে টাকাগুলো দ্রুত দিয়ে দেবেন। তাদের কথার ওপর আস্থা রেখেই আমরা তাদের ব্যাংক হিসাব যে অপরিচালনযোগ্য (ফ্রিজ) করেছিলাম তা পরিচালনযোগ্য (আনফ্রিজ) করে দিয়েছি। আশা করি রবি তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রবিবার সরকারী পাওনা পরিশোধ করবে। এছাড়া পরবর্তী পাওনা যদি সঠিকভাবে দিয়ে দেয় তাহলে রবি আইন অনুযায়ী যে সাপোর্ট পাওয়ার তা তারা পাবে। আর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে তাহলে আমরা আবার শক্ত অবস্থান নেব। রাজস্ব পাওনা আদায়ে রবির ব্যাংক হিসাব জব্দ অন্য কোম্পানিগুলোর জন্য সর্তক সংকেত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, ব্যাংক হিসাব জব্দের একই প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে আমরা দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আদায় করেছি। একটি থেকে ৩০ ও অপরটি থেকে ২০ কোটি টাকা আদায় করেছি। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে এলটিইউতে যতগুলো কোম্পানি রয়েছে বা থাকবে তাদের প্রতি এলটিইউ এর প্রতিশ্রুতি হলো, আমরা সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের সার্ভিস দেব। তাদের যদি কোন আইনগত ব্যাখ্যা লাগে তাহলে আমাদের কাছে আসলে আইনগত ব্যাখ্যা দেব। ট্রেনিং লাগলে ট্রেনিং দেব। সব ধরনের সহযোগিতা দেব, কিন্তু আমাদের একটাই দাবি সরকারের যে পাওনা আছে সঠিকভাবে দেবেন। না দিলে এলটিইউ এর পক্ষ থেকে ছাড় দেব না। উল্লেখ্য, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার ৩২ টাকা ৭০ পয়সা মূসক ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি দেয়ার অভিযোগে এনবিআর রবির ব্যাংক হিসাব তিন কার্যদিবসের জন্য জব্দ রাখতে দেশের সব ব্যাংককে চিঠি পাঠায়।
×