ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কলাপাড়ায় ৫০ স মিলে ফ্রি স্টাইলে বনের কাঠ চেরাই

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২ মার্চ ২০১৮

কলাপাড়ায় ৫০ স মিলে ফ্রি স্টাইলে বনের কাঠ চেরাই

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১ মার্চ ॥ কলাপাড়ায় ৫৫টিরও বেশি স মিলে ফ্রি-স্টাইলে চেরাই হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলসহ সব ধরনের গাছ। সব ধরনের নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে লাইসেন্সবিহীন অন্তত ৫০টি স মিলে বৈধ-অবৈধ কাঠ চেরাইয়ের কাজ চলছে। সমৃদ্ধ পর্যটনসহ সাগরপাড়ের জনপদ কলাপাড়ায় এ কারণে বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাচ্ছে। বনবিভাগের কোন দৃশ্যমান নিয়ন্ত্রণ না থাকায় যে যার মতো করে যত্রতত্র স মিল স্থাপন করছে। অর্ধশতাধিক স মিলের ক’টির লাইসেন্স রয়েছে তার কোন হিসাব খোদ বনবিভাগের কাছে পাওয়া যায়নি। এমনকি কয়টি স মিল রয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যানও জানাতে পারেনি বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ। যেন চরম অরাজক পরিস্থিতি চলছে সেক্টরটিতে। আর এই সুযোগে স মিল স্থাপন করে দেদার বৈধ-অবৈধ গাছ চেরাইয়ের হরিলুট চলছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে জাতীয় উদ্যানসহ কুয়াকাটা, গঙ্গামতি খাজুরা এলাকায় সরক্ষিত বনাঞ্চলের আশপাশেও বসানো হয়েছে স মিল। নিয়ম রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোন স মিল বসানো যাবে না। কিন্তু কে শোনে কার কথা। কোন কাগজপত্র নেই। কেউ কেউ আবার খাস জমিতে এসব স মিল স্থাপন করেছে। কোন ধরনের নিয়ম কানুনের বালাই নেই। যার কারণে উপকূলের সবুজ দেয়ালখ্যাত সংরক্ষিত বনাঞ্চল এখন বিরানভূমিতে পরিনত হয়ে গেছে। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। কলাপাড়া ও মহিপুর দুটি রেঞ্জের অধীন কয়টি স মিল রয়েছে তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান এই দুই রেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানাতে পারেননি। জানাতে পারেননি কয়টির বৈধতা রয়েছে তাও জানাতে পারছে না। ফলে যা হবার তাই। তবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের দেয়া তথ্যমতে, টিয়াখালীতে তিনটি, চম্পাপুরে ৫টি, চাকামইয়ায় দুটি, ধানখালীতে চারটি, লতাচাপলীতে পাঁচটি, মহিপুরে চারটি, বালিয়াতলীতে ছয়টি, ডালবুগঞ্জে পাঁচটি, ধুলাসারে তিনটি, লালুয়ায় পাঁচটি স মিল রয়েছে। এছাড়া কলাপাড়া পৌরশহরে ১৩টি এবং কুয়াকাটা পৌরসভায় কয়েকটি স মিল রয়েছে। এসব স মিলে বনবিভাগসহ অপরিণত বয়সী গাছ ফ্রি-স্টাইলে চেরাই চলে দিন-রাত। ফলে উপকূলীয় দুর্যোগের গ্রাসে থাকা জনপদ কলাপাড়ার মানুষকে দুর্যোগকালীন ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে, উপজেলা বন ও পরিবেশ বিষয়ক কমিটির প্রায় এক বছর ধরে কোন মিটিং পর্যন্ত হয়নি। বন ও পরিবেশ কমিটির সদস্য ও শিক্ষক শাহিদা পরভীন জানান, প্রায় দেড় বছর এ কমিটির কোন সভা হয়না। যার কারণে এ সকল সমস্যা ও সমাধানকল্পে কোন ব্যবস্থা নেয়া যেত। এ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তানভীর রহমান জানান, শীঘ্রই সভা আহ্বান করার জন্য বনবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলা হবে। তখন এ সংক্রান্ত সকল অনিয়ম রোধে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। প্রয়োজনবোধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হবে।
×