ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে তোফায়েল

আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে ভূমিকা রাখুন

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২ মার্চ ২০১৮

আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে ভূমিকা রাখুন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে যাতে সব দল অংশগ্রহণ করে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা প্রয়োজন। আশা করছি, এ বিষয়ে দেশ দুটি সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের ২৫তম ইউএস ট্রেড শোর উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ইউএস ট্রেড শোর আয়োজন করা হয়েছে। ওই সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ্যাডভোকেসি সেন্টারের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ম্যালকম ব্রুক উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়-মার্শা বার্নিকাটের সাম্প্রতিক এই বক্তব্যেও প্রতিক্রিয়ায় তোফায়েল আহমেদের এই বক্তব্য আসে। বাণিজ্যমন্ত্রী বার্নিকাটকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মতো গণতান্ত্রিক দেশে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন করা হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি আমরাও সংবিধান অনুযায়ী দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই, যেখানে সব রাজনৈতিক দল থাকবে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমি জানি না, মন্তব্য করা আমার ঠিক হবে কি না। ‘আমি আশা করব, আপনি (বার্নিকাট) এমন একটি ভূমিকা নেবেন, যাতে সব দল সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে অনুষ্ঠেয় আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতায় রেখেই যে নির্বাচন হয়, সে কথাও তিনি মনে করিয়ে দেন বার্নিকাটকে। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশেও আগামী নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকবে এবং কেবল দৈনন্দিন রুটিন কাজগুলো করবে। নির্বাচনের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করা ব্রিটিশ হাইকমিশনারকেও একই আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি তাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য) অনুরোধ করব, তারা যেন সব দলকে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে বলেন। এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে। যুক্তরাষ্ট্রের গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তোফায়েল আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সেখানেও গত নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এসেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর তোফায়েলে আহমেদের বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সরাসরি কোন উত্তর দেননি। তবে তিনি বলেন, মন্ত্রী যা বলেছেন, তারপর আমি শুধু যোগ করতে চাই যে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যে শর্তগুলো রয়েছে, সেগুলো আসলে সব সময় কার্যকর থাকতে হয়। কেবল ভোটের দিন নয়। তিনি বলেন, সবাই যাতে অংশ নিতে পারে, সবাই যাতে সভা, সমাবেশ, বৈঠক করতে পারে, সবাই যেন নির্বিঘেœ তাদের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকা- চালিয়ে যেতে পারে-সেটাও নিশ্চিত করতে হয়। এদিকে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সহযোগিতায় আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ-এ্যামচেম ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশে ইউএস ট্রেড শোর আয়োজন করে আসছে। সে সময় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মাত্র এক বিলিয়ন ডলার যা গত আড়াই দশকে বেড়ে হয়েছে সাত বিলিয়ন ডলার।
×