ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া প্রথম টেস্ট শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৭:১৮, ১ মার্চ ২০১৮

দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া প্রথম টেস্ট শুরু আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ডারবানে আজ থেকে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার চার ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। ঘরের মাটিতে এমনিতে ভয়ঙ্কর প্রোটিয়ারা। ক’দিন আগেও এক নম্বরে থাকা ভারতকে তিন টেস্টের সিরিজে ২-১এ হারিয়েছে তারা। নিজেদের মাঠে বিশ্বের যে কোন দলের বিপক্ষেই দক্ষিণ আফ্রিকার সাফল্য ঈর্ষণীয়, কেবল অস্ট্রেলিয়া বাদে! নব্বইয়ের দশকে বর্ণবাদের কলঙ্ক ছাপিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর সেই ১৯৯৪ সালে সিরিজ ড্র করে প্রোটিয়ারা, এরপর অসিদের কাছে কেবলই হারের লজ্জায় ডুবতে হয়েছে। ফ্যাফ ডুপ্লেসিসের দল কি এবার কী পারবে বন্ধ্যত্ব ঘোচাতে? প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া ক’দিন আগেই ঐতিহ্যের এ্যাশেজে ইংল্যান্ডকে (৪-০) নাস্তানাবুদ করে টগবগ করে ফুটছে। সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে তার দল, তিনে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯০২ সাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম সফর থেকে টানা পাঁচটি টেস্ট সিরিজই জিতে নেয় অসিরা। ১৯৬৬ ও ১৯৭০ সালে দু’বার সিরিজ জয় করে প্রোটিয়ারা। এরপর বর্ণবৈষম্যের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর ১৯৯৪ সালের সিরিজটি ১-১ সমতায় শেষ হয়। তবে পরবর্তীতে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আর কোন সিরিজ জিততে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯৪ সালের পর ছয়টি সিরিজে মুখোমুখি হয়ে পাঁচটিই হারে প্রোটিয়ারা। একটি হয় ড্র। অতীতের পরিসংখ্যান উদ্বিগ্ন করার মতো হলেও তাতে চিন্তিত নন দক্ষিণ আফ্রিকার ডুপ্লেসিস। সাম্প্রতিক পারফর্মেন্সকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর বাংলাদেশ, জিম্বাবুইয়ে ও বিশ্বসেরা ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জয় করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ক’দিন আগেই স্বাগতিক হিসেবে ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় তারা। তাই ভারত সিরিজ থেকেই আত্মবিশ্বাসী হয়ে দল খেলতে নামবে বলে জানিয়েছেন ডুপ্লেসিস, ‘দীর্ঘদিন হয়ে গেল, দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আমরা সিরিজ জিততে পারছি না। তবে এবার অতীত পরিসংখ্যানে পরিবর্তন আসবে বলে আমরা আশাবাদী। কারণ সম্প্রতি আমরা বিশ্বসেরা ভারতকে হারিয়েছি। ভারতের বিপক্ষে প্রথম দু’ম্যাচেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছি আমরা। তাই ঐ সিরিজটি আমাদের প্রেরণা দিচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের জন্য দলও বেশ উদগ্রীব হয়ে আছে।’ ২০১৬ সালের নবেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ঐ স্মৃতি এখনও মনে রেখে ডুপ্লেসিস আরও যোগ করেন, ‘আমরা অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে তাদের হারিয়েছি। আমরা জানি অসিদের কিভাবে হারাতে হয়। এবারের সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার দুর্বল দিকগুলোতেই আমাদের প্রথম টার্গেট। সেখানে আমরা সফল হতে পারলে সাফল্য আমাদের সামনেই ধরা দিবে।’ পরিসংখ্যান নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা চিন্তিত না হলেও, পুরনো সফর থেকে প্রেরণা খুঁজছে অস্ট্রেলিয়া। অতীতে যেভাবে দক্ষিণ আফ্রিকায় সাফল্য পেয়েছিল অসিরা, এবারও সেভাবেই সিরিজ জিততে চায় তারা। এমনটাই জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ, ‘২০১৪ সালে সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে অস্ট্রেলিয়া দলে আমি ছিলাম। ঐ সিরিজ থেকে অনেক কিছুই শিখেছি। ঐ সিরিজটি আমরা ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলাম। এবার ঐ অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে আমাদের সাফল্য বেশ ভাল। শুধু গেল ২১ বছরই নয়, প্রথম থেকে আজ অবধি ১০টি সিরিজ আমরা জিতেছি। এখানে আমাদের ভাগ্য বেশ ভাল। পাশাপাশি খেলোয়াড়রাও সবসময় ভাল পারফর্মেন্স করে আসছে। এবারও ব্যতিক্রম হবে না। এখানে ভাল ফল ধরে রাখার দায়িত্ব বর্তমান দলের খেলোয়াড়দের। আমার বিশ্বাস আমরা তা করতে পারব।’ দেশের মাটিতে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ হারের প্রতিশোধ নেয়ার ইঙ্গিতও দিয়ে রাখেন স্মিথ। তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালের সিরিজে আমাদের হারের স্বাদ নিতে হয়েছিল। ঐ সিরিজটির কথা আমরা ভুলিনি। আমরা এবার তাদের সেই হারের স্বাদ ফিরিয়ে দিতে চাই।’
×