ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এসডিজি অর্জনে বৈষম্য দূর করতে হবে

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ১ মার্চ ২০১৮

এসডিজি অর্জনে বৈষম্য দূর করতে হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নই কেবল সামাজিক ও নৈতিকতা উন্নয়ন নয়, টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও পিকেএসএফ’র চেয়ারম্যান ড. কাজী খুলীকুজ্জমান আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় বলি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে। কিন্তু সেটা কীভাবে বাড়াব তা ঠিক করতে হবে। মানুষকে কেন্দ্র করেই প্রবৃদ্ধির প্রক্রিয়া সাজাতে হবে। ধনীদের নিয়ে ভাবনার দরকার নেই। ভাবতে হবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের নিয়ে। বাস্তবভিত্তিক কর্মসূচী নিতে হবে এবং একই সঙ্গে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার মনোবল নিয়ে উন্নয়নের ধারাকে টেকসই করতে হবে।’ বুধবার সকালে পিকেএসএফ আয়োজিত ‘গণমানুষের কণ্ঠস্বর বাংলাদেশে ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচীর সফল বাস্তবায়ন’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খুলীকুজ্জমান আহমদ এর সভাপতিত্বে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় । এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ সেমিনার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পিকেএসএফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। দেশে অসমতা ক্রমেই বাড়ছে। সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) অর্জনে যে বৈষম্য রয়েছে তা দূর করতে হবে। ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষকে কেন্দ্র করেই প্রবৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা। সেমিনারে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট-৮ সকলের জন্য পূর্ণাঙ্গ ও উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান এবং শোভন কর্মসুযোগ সৃষ্টি এবং স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও অসমতা কমিয়ে আনা এর ওপর দুইটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তফা কে মুজেরি এবং ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স’র শিক্ষক ড. তৌহীদ রেজা নুর। আরও বক্তব্য রাখেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কেএম আবদুস সালাম। স্বাগত বক্তব্যে পিকেএসএফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম ‘পিপলস ভয়েস এসজিডি ইমপ্লিমেন্টেশন ইন বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্ম’ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘পিকেএসএফ’র উদ্যোগে গঠিত এই প্ল্যাটফর্ম এসডিজি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘পিকেএসএফ’র সকল কর্মসূচী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিন্যাস করেছে।’ এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এসডিজির লক্ষ্য হলো ১৬৯টি। সরকার সবগুলো একইসঙ্গে বাস্তবায়ন করতে পারবে না সম্পদের কারণে। তাই সরকার প্রাথমিকভাবে ৩৯টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাস্তবায়নের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাও এসডিজির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই করা হয়েছে। এসডিজি শুধু কেন্দ্রীয়ভাবে বাস্তবায়নের বিষয় নয়, দেশের সকল অঞ্চলে বাস্তবায়নের ওপর সরকার জোর দিচ্ছে। এটি আগামী মাসে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’ ড. মোস্তফাকে মুজেরি বলেন, ‘এসডিজির ১০ নম্বর অভিষ্ট সর্বক্ষেত্রে বৈষম্যতা ও অসমতা দূর করা। আমাদেরকে সুযোগের অসমতা দূর করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন,দেশে বৈষম্য বাড়ছে। আর এই বৈষম্যটা বহুমাত্রিক। তবে শহরের চেয়ে গ্রামে এটি বেশি।’ ড. তৌহীদ রেজা নূর টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট-৮ এর ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন টেকসই উন্নয়নের একটি অন্যতম চাবিকাঠি হচ্ছে স্থিতিশীল কর্মসংস্থান ও পরিপূর্ণ কর্মপরিবেশ। তিনি বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্যের নানা দিক তুলে ধরেন। পাশাপাশি বৈষম্যহীন কর্মসংস্থান, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনের জন্য প্রয়োজন বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এ দুইটি প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন এনজিও এ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আবদুস সালাম। অসমতা দূর করার জন্য সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এসডিজির লক্ষ্যসমূহের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এনজিও সমূহ তাদের কাজের বিন্যাস ঘটাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন এবং এনজিও এ্যাফেয়ার্স ব্যুরো এই বিষয়ে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
×