জোড়া মাথার দুই শিশুর মস্তিষ্কের বিকল্প রক্তনালী সক্রিয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জোড়া মাথা নিয়ে জন্ম নেয়া যমজ দুই শিশু রাবেয়া-রোকাইয়ার অস্ত্রোপচারের দ্বিতীয় ধাপও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এ অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাঙ্গেরি থেকে আসা দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচারের দ্বিতীয় ধাপ সফল হয়েছে। জোড়া মাথায় সাধারণ যে রক্তনালী ছিল সেটা বন্ধ করে দেয়ায় বিকল্প রক্তনালী সক্রিয় হয়েছে। এটিই ছিল প্রধান চ্যালেঞ্জ। শিশু দুটির জ্ঞানও ফিরেছে। এর আগে মঙ্গলবার দুই শিশুর মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনের বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, শিশুদের মাথার নিউরন আলাদা আলাদা হলেও মস্তিষ্কের রক্তনালী ছিল মাত্র একটি। এ রক্তনালী আলাদা করতে বুধবার পুনরায় অস্ত্রোপচার করা হয়। এতে রক্তনালী আলাদা করতে সক্ষম হয়েছেন ১৫ সদস্যের মেডিক্যাল টিমের চিকিৎসকরা। হাঙ্গেরির চিকিৎসক স্টিফেন হিউডেক এবং এ্যান্ডোস সুকে গণমাধ্যমকে বলেন, অস্ত্রোপচারের দ্বিতীয় ধাপ সফলভাবে আমরা সম্পন্ন করতে পেরেছি। শিশু দুটির ব্রেইন আলাদা থাকলে তাদের উভয়ের একই রক্তনালী ছিল। মাথা আলাদা করতে এ রক্তনালী আলাদা করাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। তাই প্রাথমিক অস্ত্রোপচারে আমরা বেলুন ফুলিয়ে সাধারণ রক্তনালী বন্ধ করে দেখতে চেয়েছি যে উভয়ের নিজস্ব রক্তনালী সক্রিয় হয় কি-না। আশার কথা হচ্ছে উভয়ের রক্তনালীই সক্রিয় হয়েছে। তাই অস্ত্রোপচারের দ্বিতীয় ধাপ সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। ঢামেকের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক এবং ১৫ সদস্যের মেডিক্যাল টিমের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ডাঃ সামন্ত লাল সেন জনকণ্ঠকে বলেন, দ্বিতীয় ধাপে যে অস্ত্রোপচার হয়েছে তাতে অনেকটাই আশাবাদী আমরা। কারণ আমাদের প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল রক্তনালী আলাদা করা। সেটি করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। তবে এখানেই শেষ নয়, এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ আমাদের। দ্বিতীয় ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারায় হাঙ্গেরির দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে প্রধানমন্ত্রী ও দেশবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের অভিজ্ঞতায় আশা করছি আমরা সফল হব।