ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আগামী নির্বাচনে ফেসবুক টুইটারে প্রচার বন্ধের চিন্তা ইসির

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১ মার্চ ২০১৮

আগামী নির্বাচনে ফেসবুক টুইটারে প্রচার বন্ধের চিন্তা ইসির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী নির্বাচনে ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার বন্ধের চিন্তাভাবনা করছে ইসি। তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। জানা গেছে, আইন বিধি সংস্কার কমিটির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিধান যুক্ত করার সুপারিশ করেছে। সুপারিশ কমিশনের আলোচনার জন্য তোলা হবে। তবে কমিশন সভায় অনুমোদন পেলে তা আইন মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। ইসি কর্মকর্তারা মনে করছেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোই এখন একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগের বড় মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। আগামী নির্বাচনের সময় এটির প্রচার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হবে। নির্বাচনী প্রচারের জন্য এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে। ফলে এটির ব্যাপক অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এটি যাতে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা না হয় সেজন্য এর মাধ্যমে প্রচার বন্ধের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে গত বছর জুলাই মাসেই নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করে ইসি। রোডম্যাপে নির্বাচনের আগে কয়েকটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে ইসি। ইতোমধ্যে রোডম্যাপ অনুুযায়ী সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপ শেষ করেছে ইসি। এছাড়া নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, আইনবিধি সংস্কারের কাজ চলছে। আগামী মাসেই নতুন দলের নিবন্ধন দেয়া হতে পারে। ইতোমধ্যে ৭৬ রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেতে আবেদন জানিয়েছে ইসির কাছে। এসব রাজনৈতিক দলগুলোর আবেদন নিবেদন পর্যালোচনা চলছে ইসিতে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে নিষিদ্ধ ঘেষিত রাজনৈতিক দলের তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর আবেদন নিবেদন যাচাইয়ের জন্য। জানা গেছে, যাচাই বাছাই শেষে আগামী মার্চে নতুন দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করতে চায়। এছাড়া ইসি ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী আইনবিধি সংস্কারের খসড়াও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখনও তা অনুমোদনের জন্য কমিশন সভায় তোলা হবে। এরই অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পূর্ব সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার বন্ধ করতে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে আইনবিধি সংস্কার কমিটি। এতে উল্লেখ করা হয়েছে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচনের ফলাফল সরকারী গেজেটে প্রকাশ পর্যন্ত প্রচারে ইলেকট্রনিক মাধ্যম, ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ভাইবারসহ অন্যান্য মাধ্যমে প্রচার চালানো যাবে না। কোন রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী এ ধরনের প্রচার চালালে কারাদ- ও অর্থদ-ের বিধান রাখারও সুপারিশ করা হয়েছে। আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটির এক সভায় এসব বিধান যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়। ওই সভায় চারটি আইন ও বিধিমালা সংস্কারের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২, জাতীয় সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী (প্রার্থিতার পক্ষে সমর্থন যাচাই) বিধিমালা। কমিটির প্রধান ও নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সুপারিশ করা চারটি আইন ও বিধিমালার সংশোধনের খসড়া কমিশন সভায় তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কমিশনের অনুমোদন পেলে তা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। আইন মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার পর তা আইনে পরিণত হবে। জানা গেছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচারমূলক সভার অনুমতি নেয়ার ক্ষেত্রেও নতুন বিধান যুক্ত হচ্ছে। আচরণ বিধিমালার এ নতুন বিধানে বলা হয়েছে কোন প্রার্থী বা দল সভা করার অনুমতি চেয়ে লিখিত আবেদন করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। উক্ত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত না দিলে সভার অনুমতি দেয়া হয়েছে মর্মে গণ্য করা হবে।
×