ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১৭ কি. মি বিস্তৃত ॥ ৫ তারকা হোটেল ও ব্যবসার অপার সম্ভাবনা গড়ে তুলছে চউক

চট্টগ্রামে বিশ্বমানের পর্যটন স্পট

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

চট্টগ্রামে বিশ্বমানের পর্যটন স্পট

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোডের ফৌজদারহাট উপকূলবর্তী বিশালতায় গড়ে উঠবে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন স্পট, যা পতেঙ্গা থেকে প্রায় ১৭ কি.মি. বিস্তৃত হবে। তবে এরমধ্যে ৫ কি.মি. এলাকায় পাঁচ তারকা হোটেলসহ ব্যবসার অপার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। পাঁচ কিলোমিটার ব্যাপী বিশ্বমানের এই পর্যটন কেন্দ্র চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) পরিচালনায় থাকবে। তৈরি হতে যাচ্ছে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র। নগরীর সমূদ্র উপকূলীয় এলাকা রক্ষায় প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন এই সড়ক একদিকে যেমন বেড়িবাঁধ হিসেবে কাজ করবে অন্যদিকে প্রায় ৮৪ ফুট প্রশস্থ এই সড়কের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠার সুযোগ থাকছে। ২০১৯ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হওয়ার কথা জানালেন চউক চেয়ারম্যান আবদুচ সালাম। উল্লেখ্য, পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলিামিটার চিটাগাং আউটার রিং রোড প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে ২০১১ সালে। জানা গেছে, ২০০৬ সালে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) চট্টগ্রাম শহরের অপ্রতুল অবকাঠামোগত অসুবিধা চিহ্নিতকরণে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে। ওই সমীক্ষায় ট্রাংক রোড নেটওয়ার্কের আওতায় দুটি রিং রোড ও ৬টি রেডিয়াল রোড নির্মাণের প্রস্তাব করে জেবিআইসি। এ প্রস্তাব অনুযায়ী, চট্টগ্রাম সিটি রিং রোডটি নির্মাণের গুরুত্ব দেয়া হয়। চউকের মাস্টারপ্ল্যানে এ রিং রোড প্রকল্পটি থাকলেও তা নির্মাণে স্থানীয়রা নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তবে ২০১১ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে ২০১৭ সালে শেষ করার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২০১৯ সালে শেষ হবার কথা রয়েছে। এ ব্যাপারে চউক চেয়ারম্যান আবদুচ সালাম জানান, আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে আগামী ২০১৯ সালে। পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার এই সড়কের পাশে ৫ কিলোমিটার জায়গায় বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র তৈরি করা হবে। যেহেতু এ সড়ক চট্টগ্রাম নগরবাসীর জন্য খুবই প্রয়োজনীয় সেক্ষেত্রে চউক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ও বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র পরিচালনায় দ্রুততার সঙ্গে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। বর্তমানে এই সড়কটিকে ৩০ ফুট উঁচু করতে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। মাটি ভরাটের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে কালভার্ট ও ব্রিজ নির্মাণের পাশাপাশি একটি রেলপথের উপর দিয়ে একটি বড় ব্রিজ নির্মাণ ও বেড়িবাঁধ রক্ষায় ব্লক নির্মাণ ও স্থাপনের কাজ চলছে। এছাড়াও নির্মাণ করা হচ্ছে সøুইস গেট। এই প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি প্রায় ৭০ ভাগ। কর্ণফুলীর মোহনায় প্রস্তাবিত টানেলের সঙ্গে এই রাস্তার সংযোগে বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। এই সড়কটি ১৭ কিলোমিটার হলেও এর মধ্যে ১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার কোস্টাল রোড এবং ২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার ফিডার রোড রয়েছে। ১নং ফিডার রোড পতেঙ্গা থেকে কাঠগড় পর্যন্ত, ২নং ফিডার রোড বড়পুল থেকে পোর্ট কানেটিং রোডের সঙ্গে যুক্ত হবে এবং ৩ নং ফিডার রোডটি সাগরিকা বিভাগীয় স্টেডিয়ামের পাশে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে সাগরিকা জহুর আহমদ স্টেডিয়াম সংলগ্ন ফিডার রোড-৩ এর আওতায় সড়কের দৈর্ঘ্য হচ্ছে শূন্য দশমিক ৯৫ কিলোমিটার। যার প্রস্থ ১৫ দশমিক ৬০ মিটার। ওই এলাকা ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ৭ দশমিক ৬ একর। এই ফিডারের আওতায় শূন্য দশমিক ৪৯৫ পয়েন্টে একটি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। উল্লেখ্য, ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এ রিং রোডের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এরমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ১ হাজার ৭২০ কোটি টাকা ও জাইকার অর্থায়নে ৭০৬ কোটি ৩ লাখ টাকা।
×