ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হাঙ্গামা, হাতাহাতি ককটেল বিস্ফোরণ

ধাওয়া পাল্টাধাওয়ায় চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ সম্মেলন পণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ধাওয়া পাল্টাধাওয়ায় চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ সম্মেলন পণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ককটেল বিস্ফোরণ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং হাতাহাতিতে প- হয়েছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন। মঙ্গলবার নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। তবে সম্মেলন পণ্ড হয়ে যাওয়ায় তাদের বক্তৃতা দেয়ার সুযোগ হয়নি। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এর জন্য অনুষ্ঠানস্থলে অনুপ্রবেশকারী স্বাধীনতা বিরোধীদের দায়ী করা হয়েছে। উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিরাট প্রস্তুতি ছিল নেতাকর্মীদের। প্রায় একমাস আগে থেকেই জনমত গঠনের চেষ্টা করে আসছিলেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশীরা। ভোটাভুটির মাধ্যমে দলের নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার কথা ছিল। সকাল থেকেই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন। নেতার সমর্থনে কর্মীদের মিছিলও চলতে থাকে। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাকিব হোসেন সুইমের বক্তৃতাকালে অনুষ্ঠানস্থলের বামপাশে একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। বিকট শব্দে হলরুম প্রকম্পিত হলে উপস্থিত কর্মী সমর্থকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। একপর্যায়ে কয়েকটি কক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এতে বেশ ক’জন আহত হন। মঞ্চে তখন উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, রাউজান থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ এমপি, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনসহ নেতৃবৃন্দ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফসহ কেন্দ্রীয় নেতারা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করলেও সফল হননি। শেষ পর্যন্ত সম্মেলন প- হয়ে যায়। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এই ঘটনার জন্য অনুপ্রবেশকারীদের দায়ী করে বলেন, যারা হামলা চালিয়েছে তারা বহিরাগত। তিনি সম্মেলনে বোমা বিস্ফোরণ এবং গোলমালকারীদের গ্রেফতার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেন। উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফসহ কেন্দ্রীয় অনেক নেতা উপস্থিত থাকলেও শেষ পর্যন্ত কারোরই বক্তৃতা দেয়ার সুযোগ হয়নি। অনেক চেষ্টার পরও শৃঙ্খলা না আসায় বেলা ১টার দিকে তারা অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। তবে ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সম্মেলনস্থলের আশপাশের সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করলে যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে ভোগান্তির মুখে পড়েন যাত্রী সাধারণ। বিশৃঙ্খলার মুখে প্রথম অধিবেশন মুলতবি করা হলেও বিকেলে নেতৃত্ব নির্বাচনের লক্ষ্যে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। ছাত্রলীগ সূত্রে জানানো হয়, এবার সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এ দুটি পদের জন্য আগ্রহী প্রার্থী ৬০ জন। উত্তর জেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন ৯ ইউনিট থেকে ২২৫ জন এবং জেলা কার্যনির্বাহী কমিটির ২৪১জনসহ মোট ৩৬৬ জন কাউন্সিলর নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট প্রদান করবেন। উল্লেখ্য, আগের দিন সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি মাঠে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর শোকসভাও প- হয়েছিল ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপের পাল্টাপাল্টি স্লোগান, চেয়ার ছোড়াছুড়ি, হাতাহাতি এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায়। এই শোক সভার আয়োজনে ছিল চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ।
×