ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ত্রাণ নিতে আসা সিরীয় নারীরা ধর্ষণের শিকার

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ত্রাণ নিতে আসা সিরীয় নারীরা ধর্ষণের শিকার

জাতিসংঘ ও অন্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার পক্ষ হয়ে ত্রাণ বিতরণের কাজে নিয়োজিত পুরুষরা সিরিয়ার নারীদের ‘যৌন নিপীড়ন’ করছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে বিবিসি। তিন বছর আগেও এ ধরনের নিপীড়নের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। নতুন এক প্রতিবেদনে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে বিষয়টি এখনও অব্যাহত আছে বলেও জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের সংস্থা ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা জানিয়েছে, এ ধরনের নিপীড়নের বিষয়ে তারা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে চলছে এবং সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে অংশীদার সংগঠনগুলোর এ ধরনের কোন অপব্যবহারের ঘটনা তাদের জানা নেই। অপরদিকে ত্রাণ কর্মীরা জানিয়েছে এমন নিপীড়নের মাত্রা এত বিস্তৃত যে কিছু সিরীয় নারী ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতেও যেতে চাইছে না, কারণ তারা বাড়িতে ত্রাণ নিয়ে আসলে লোকজন ভাববে ‘শরীরের বিনিময়ে’ ত্রাণ নিয়ে এসেছে তারা। এক ত্রাণ কর্মীর অভিযোগ, এ ধরনের নির্যাতনের বিষয়ে চোখ বন্ধ করে আছে মানবিক ত্রাণ সংস্থাগুলো, কারণ সিরিয়ার বিপজ্জনক অংশগুলোতে যেখানে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার কর্মীরা যেতে পারেন না, সেখানে ত্রাণ পাঠানোর জন্য তৃতীয় পক্ষ ও স্থানীয় কর্মকর্তারাই একমাত্র ভরসা। গতবছর সিরিয়ায় লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ওপর জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) করা ধারণাপত্রে দেশটির বিভিন্ন অংশে যৌনতার বিনিময়ে মানবিক সাহায্য দেয়ার কথা জানানো হয়েছে। ‘ভয়েসেস ফ্রম সিরিয়া ২০১৮’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার অনেক নারী ও কন্যাশিশুর কথা বলা হয়েছে, খাবার পাওয়ার শর্তে যারা কর্মকর্তাদের ‘যৌন সেবা’ বা স্বল্প সময়ের জন্য বিয়ে করতে বাধ্য হচ্ছেন। ‘কিছু পাওয়ার বিনিময়ে দেয়ার’ শর্তে সরবরাহকারীরা তরুণী ও নারীদের ফোন নম্বর চান, গাড়িতে করে বাড়িও পৌঁছে দেন। ত্রাণের বিনিময়ে কর্মকর্তারা ‘বাড়িতে আমন্ত্রণ’ বা ‘রাত কাটানোর’ সুযোগ নেন বলেও অভিযোগ। ‘বিধবা এবং তালাকপ্রাপ্তদের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তু নারীরাও বিশেষভাবে এ যৌন নিপীড়নের চরম ঝুঁকিতে আছেন,’ প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। তিন বছর আগে প্রথম এ ধরনের অভিযোগের কথা জানা যায়। জর্দানের শরণার্থী শিবিরের সিরিয়ান নারীদের কাছ থেকে ২০১৫ সালের মার্চে একটি দাতব্য সংস্থার মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা ডেনিয়েল স্পেন্সার অভিযোগটি শোনেন। সিরিয়ার দারা ও কুনেইত্রার স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা কীভাবে ত্রাণের বিনিময়ে যৌন সম্পর্ক চেয়েছিল শরণার্থী শিবিরের বেশ কয়েকজন নারী স্পেনসারেকে সে বিষয়ে অবহিতও করেন। স্পেনসার বলেন, তারা (স্থানীয় কর্মকর্তা) সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ত্রাণ তুলত এবং পরে যৌনতার বিনিময়ে তা নারীদের দিত। কয়েকজনেরই এ ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে, কেউ কেউ খুবই ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছিল। আমি একজনের কথা স্মরণ করতে পারি, যিনি কক্ষের মধ্যে কাঁদছিলেন, তার যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা নিয়ে তিনি খুবই বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন।
×