ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রেনেড হামলা মামলার পরবর্তী যুক্তিতর্ক ৫ মার্চ

প্রকাশিত: ০০:৫৭, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গ্রেনেড হামলা মামলার পরবর্তী যুক্তিতর্ক ৫ মার্চ

স্টাফ রিপোর্টার॥ স্পর্শকাতর ও বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় আসামীপক্ষে পরবর্তী যুক্তিতর্কের জন্য আগামী ৫, ৬ ও ৭ মার্চ দিন নির্ধারন করা হয়েছে। এ মামলায় এ পর্যন্ত ২২ আসামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থান শেষ হয়েছে। মামলার আসামী আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুলের পক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক পেশ করেন তার আইজীবী মাঈনুদ্দিন মিয়া। যুক্তিতর্ক শেষে উপরোক্ত দিন নির্ধারন করা হয়েছে। আইনজীবী যুক্তিতর্কে বলেন , আসামি আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল কোন ভাবেই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তিনি সম্পুর্ন নির্দোষ। রাষ্ট্রপক্ষ তার মক্কেলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। পরবর্তীতে অসমাপ্ত যুক্তিতর্কের জন্য ঐ দিন নির্ধারন করা হয়েছে। মঙ্গলবার ছিল এ মামলার যুক্তিতর্কের ৪৯ তম দিন। রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ আদেশ প্রদান করেছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চীফ প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান, এ্যাডভোকেট আকরাম উদ্দিন শ্যামল, এ্যাডভোকেট মো: আমিনুর রহমান,এ্যাডভোকেট আবুল হাসান জিহাদ। গত ১ জানুয়ারি মামলার সব আসামীদের আইন অনুযায়ি সর্বোচ্চ সাজা দাবি করে রাষ্ট্রপক্ষ আইনগত যুক্তিতর্ক পেশ শেষ করেন। ঐ দিন চীফ প্রসি্িকউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান আইনী পয়েন্টে যুক্তিতর্ক পেশকালে আসামীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ ও দৃষ্টান্তমূলক দন্ডের স্বপক্ষে বিভিন্ন মামলায় দেয়া উচ্চতর আদালতের বেশকিছু সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন। মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী মার্ডার কেস, জঙ্গী হামলায় নিহত ঝালকাঠি আদালতের বিচারক জগন্নাথ পাড়ে হত্যা মামলা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হত্যা চেষ্টা মামলা। মামলায় সাক্ষিদের দেয়া জবানবন্দির আলোকে ২৭ ডিসেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গত ২৩ অক্টোবর থেকে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু হয়। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ২২৫ জন সাক্ষি (পিডব্লিউ) ও আসামীপক্ষে ২০ জনের সাফাই সাক্ষ্য (ডিডব্লিউ) পর্যালোচনা করে আদালতে যুক্তিতর্কে পেশ শেষ করা হয়। আলোচিত এ মামলায় ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আর এ মামলায় ২০ জনের সাফাই সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল¬ুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে থানা পুলিশ। পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরবর্তীতে মামলাটি যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)। ২০০৮ সালের ১১ জুন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির মুফতি হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। মামলা তদন্তের ভার পান সিআইডির পুলিশ সুপার আব্দুল কাহ্হার আখন্দ। তিনি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম যুক্ত করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র দেন।মামলায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও জেএমবি সদস্য শহিদুল আলম বিপুলের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ায় তাদের নাম বাদ দেয়ায় এখন আসামির সংখ্যা ৪৯। এর মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পালাতক রয়েছেন। এ ছাড়া জামিনে আট এবং কারাগারে রয়েছেন ২৩ জন।
×