ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সবাইকে নিয়েই নির্বাচন করতে চায় সরকার

প্রকাশিত: ০৭:৪৬, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সবাইকে নিয়েই নির্বাচন করতে চায় সরকার

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী-এমপিরা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার এককভাবে নয়, সবাইকে নিয়েই নির্বাচন করতে চায়। তবে সেই নির্বাচন খালেদা জিয়ার ইচ্ছানুযায়ী নয়, সংবিধান অনুসারেই হবে। আমরাও চাই না খালেদা জিয়া জেলে থাকুক। আমরা তার সঙ্গে নির্বাচনী মাঠেই ফাইনাল খেলা খেলতে চাই। আর দেশবাসীকেই আগামী নির্বাচনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা আলোকিত উন্নয়নসমৃদ্ধ বিনির্মাণের বর্তমান পথেই থাকতে চান, নাকি আবারও জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস-নাশকতা-হাওয়া ভবনের অন্ধকারের যুগে ফিরে যেতে চান। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, সচেতন দেশের জনগণ আর সেই ভুল করবে না। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সরকারী দলের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন, সামছুল হক দুদু, গোলাম দস্তগীর গাজী, অনুপম শাহজাহান জয়, জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল ও জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান। আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আগামী নির্বাচন জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা আলোকিত বাংলাদেশ চান নাকি আবারও অন্ধকারের যুগে ফিরে যেতে চান। আবারও জঙ্গীবাদ-হত্যা-সন্ত্রাস ও হাওয়া ভবনের শাসন দেখতে চান কি না তাও জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আগামী নির্বাচনে জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে স্থিতিশীল অগ্রগতির বাংলাদেশ চান, নাকি আবাও জ্বালাও-পোড়াও নাশকতার যুগে ফিরে যেতে চান। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, দেশের জনগণ আর সেই ভুল করবে না। তিনি বলেন, আমরা এককভাবে নির্বাচন করতে চাই না। তবে খালেদা জিয়ার ইচ্ছামতো কোন নির্বাচন হবে না। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যেতেই নির্বাচন নিয়ে ধূ¤্রজাল সৃষ্টির চেষ্টা করছে বিএনপি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সমালোচনা করে বলেন, প্রতিদিন ১০ লাখ ভোট বাড়লে খালেদা জিয়ার মুক্তির কী দরকার? জামিনের জন্য তার এত আকুলতা কেন? আমরা চাই না বিএনপি নেত্রী জেলে থাকুক। আমরা নির্বাচনের মাঠে তাদের সঙ্গে খেলতে চাই। মাঠে এসে ফাইনাল খেলুন, কিন্তু ফাউল করবেন না। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদের বিচার না করে উল্টো পুরস্কৃত, আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারী খালেদা জিয়া যখন ন্যায়বিচারের কথা বলেন, তা জাতির জন্য তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর পর সরকারের আসা জেনারেল জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সরকারের উন্নয়নের সঙ্গে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ঠা-ামাথায় তুলনামূলক বিচার করলে দেশবাসী আরও ১০ বার শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতায় রাখবে। তিনি বলেন, দেশের কোন জেলা আর রেল যোগাযোগের নেটওয়ার্কের বাইরে থাকবে না। শারীরিকভাবে অসুস্থ জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল নিজ আসনে বসে বলেন, ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে আমার পুনর্জন্ম হয়েছে। বাঙালীর এখন উল্লম্ফনের সময়। সমগ্র জাতিকে একজন মানবী (শেখ হাসিনা) পুরো জাতিকে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে দেশবাসীর উচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনার জন্য আরও সুযোগ দেয়া। আগামী নির্বাচনেও জনগণ বর্তমান সরকারকেই আবার সুযোগ দেবে। জাতীয় পার্টির পীর ফজলুল রহমান বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেলেও শিক্ষামন্ত্রী নির্লিপ্ত। প্রশ্নপত্রে দাগ দেয়ার অপরাধে চট্টগ্রামে তিন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হলেও শিক্ষামন্ত্রীকে বহিষ্কার করা হয় না। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে একটার পর এক কেলেঙ্কারি ঘটলেও অর্থমন্ত্রী তা স্বীকার করছেন না। হুইপ আতিউর রহমান আতিক বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাসহ পুরো আওয়ামী লীগকে নিঃশেষ করে দিতে চেয়েছিল। এদের কোনদিনই ক্ষমা হতে পারে না, জনগণ ক্ষমা করবে না।
×