ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমাজন ক্লাউডে বাংলাদেশের শামীম আশরাফী

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

আমাজন ক্লাউডে বাংলাদেশের শামীম আশরাফী

শামীম আশরাফী ২০০৮ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি দিয়েছিলেন আইটি খাতে চাকরি নিয়ে। তখন তিনি কাজ করতেন ওরাকল ডেটাবেজ টেকনোলজিতে। বাংলালিংকের ডেটাবেজ এ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে কাজ করার সময় তিনি এইচ১বি ভিসায় সরাসরি চাকরি নিয়ে আমেরিকা চলে যান। সেখানেই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় একটি কোম্পানিতে চাকরি করে বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন। একজন দক্ষ আইটি প্রফেশনাল হিসেবে বাংলাদেশের পরিচয় উঠে আসছে তার মাধ্যমে। বিশ্বে আইটি খাতে বর্তমানে ক্লাউড কম্পিউটিং জগতে এক নীরব বিপ্লব চলছে। বলা হচ্ছে, এন্টারপ্রাইজ আইটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন চলছে যা হলো ক্লাউড মাস মাইগ্রেশন বা ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে গণস্থানান্তর। আর সেই ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে যেসব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে আমাজন ওয়েব সার্ভিসেস। আমাজন হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। আর আইটি এবং ক্লাউড কম্পিউটিং ডিভিশন, আমাজন ওয়েব সার্ভিসেস বা এডব্লিউএস এখন তাদের সবচেয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠান। আমাজন বা এডব্লিউএসে কাজ করেন পৃথিবীর বিখ্যাত সব কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়াররা। আজ আমরা এমনই একজনের গল্প বলব যিনি এই বাংলাদেশেরই ছেলে। তিনি আমাজনে ক্লাউড কম্পিউটিং, বিগডেটা, মেশিনলার্নিংসহ আধুনিক সব প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেয়ার আগে তিনি কাজ করতেন ওরাকল ডেটাবেজ টেকনোলজিতে। বাংলালিংকের ডেটাবেজ এ্যাডমিনিস্ট্রেটর ছিলেন। পরে আমেরিকা গিয়ে বিখ্যাত টেলিকম কোম্পানি ভেরাইজনসহ বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করেছেন ডেটাবেজ আর বিগডেটা নিয়ে। তারপর যোগ দেন আমাজনের ক্লাউড কম্পিউটিং ডিভিশন এডবিব্লউএসের একজন বিগডেটা কন্সালট্যান্ট হিসেবে। তার কাজ ছিল আমেরিকার বিভিন্ন কোম্পানির আইটিকে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে স্থানান্তর এবং বিগডেটা এনালাইসিসে সাহায্য করা। আজকের গ্লোবাল প্লাটফর্মে সফল আইটি প্রফেশনাল শামীম আশরাফীর শুরুটা ছিল একেবারেই অন্যরকম। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থকে নৃবিজ্ঞানে গ্রাজুয়েশন করে চাকরি করেছিলেন আইসিডিডিআরবিতে। স্বপ্ন যেহেতু ছিল আইটি সেক্টর, তাই কম্পিউটার নিয়ে পড়াশোনা আর বিভিন্ন কোর্স করেন। পাশাপাশি সদ্য শুরু হওয়া আইডিবির স্কলারশিপও পেয়ে যান এবং সুযোগ হয় ওরাকল ডেটাবেজ টেকনোলজি শেখার। তারপর কাজ করেন ওরাকলের বাংলাদেশি সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেজ লিমিটেডে প্রতিষ্ঠানে। সেখান থেকে যোগ দেন তখনকার উদীয়মান টেলিকম বাংলালিংকে। আইটি প্রফেশনাল হিসেবে চাকরির পাশাপাশি শামীম একজন আইটি উদ্যোক্তা হিসেবেও ভূমিকা রেখেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন অদ্বিতীয় টেকনোলজিস নামের এক আইটি কোম্পানি। আমেরিকার বিভিন্ন সদ্য শুরু হওয়া প্রতিষ্ঠানের টেকনোলজি মেন্টর হিসেবে সাহায্য করেন তিনি। কি-নোট স্পিকার, ট্রেইনার বা জাজ হিসেবেও কাজ করেন। এ ছাড়াও বিদেশে বসে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ক্লাউড কম্পিউটিং, বিগডেটা, আইওটি, মেশিন লার্নিং, ব্লকচেন ইত্যাদি আধুনিক প্রযুক্তির ওপর মেন্টরিং এবং প্রশিক্ষণ দেন। এক সন্তানের পিতা শামীম এখন থাকেন আমেরিকার টেক্সাস রাজ্যের ডালাস শহরে। তার সহধর্মিণী ফাতিমা সাইয়েদা নিজেও একজন আইটি প্রফেশনাল এবং কাজ করেন ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ডালাসে। কাজের পাশাপাশি তারা ডালাসের বাংলাদেশী কমিউনিটির বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আর দাতব্য কাজেও জড়িত। ইচ্ছা আছে বাংলাদেশের আইটিতে ক্লাউড কম্পিউটিং, বিগডেটা নিয়ে আরও কাজ করার এবং নলেজ রেমিটেন্সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার।
×