ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ ॥ মাশরাফির অলরাউন্ড নৈপূণ্যে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের বিপক্ষে আবাহনীর জয় ১১২ রানে

মোহামেডানকে উড়িয়ে দিল আবাহনী

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মোহামেডানকে উড়িয়ে দিল আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগের সেই উত্তাপ নেই। দু’দলের ময়দানী লড়াইকে ঘিরে যে উত্তেজনার রেশ ছড়িয়ে পড়ত তার কোন ছিটেফোঁটা দেখা গেল না সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। দু’দলের কিছু সমর্থক আর হাতে গোনা ১৫/২০ জন দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন দুই ঐতিহ্যবাহী দল আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের লড়াই দেখতে। কিন্তু বিনা যুদ্ধে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর কাছে আত্মসমর্পণ করল মোহামেডান। ১১২ রানের বিশাল ব্যবধানে মোহামেডানকে বিধ্বস্ত করে টানা ৬ জয় তুলে নিল আবাহনী। ১২ পয়েন্ট নিয়ে তারা এখনও লীগ টেবিলের শীর্ষে। ৬ ম্যাচে ৩ জয়, ৩ পরাজয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে মোহামেডান আছে পাঁচ নম্বরে। টস জিতে আগে বোলিং নিয়ে শুরুতেই সাফল্য পেয়েছিল মোহামেডান। তুলে নিয়েছিল ওপেনার সাইফ হাসানের (২) উইকেট। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে এনামুল হক বিজয় ও নাজমুল হোসেন শান্তর ৭০ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠে আবাহনী। শান্ত ২৬ রানে সাজঘরে ফিরলেও বিজয় অর্ধশতক হাঁকান। তিনি ৮১ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৬৩ রানে আউট হন। টানা দুটি উইকেট তুলে নিয়ে মোহামেডান ঘুরে দাঁড়ালেও চতুর্থ উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুন ও অধিনায়ক নাসির হোসেন আবাহনীকে ৬৪ রান এনে দেন। মিঠুন ৪৫ বলে ২ চার, ৩ ছক্কায় ৪৭ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দিয়ে রানের চাকা দ্রুততররেখেছিলেন। নাসিরও ৭৩ বলে ৭ চারে ৬৭ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলে আবাহনীকে বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে মিঠুন রান আউট এবং নাসিরকে পেসার মোহাম্মদ আজিম ফিরিয়ে দেয়ার পর আর সেটা হয়নি। পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হয়েছেন। শেষ দিকে মাশরাফি বিন মর্তুজার ১৭ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় করা ২৬ রানের একটি ইনিংসে আড়াই শ’ পেরিয়ে যায় আবাহনীর ইনিংস। এরপরও ২ বল বাকি থাকতেই (৪৯.৪ ওভার) ২৫৯ রানে গুটিয়ে যায় তারা। আজিম ৬.৪ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। জবাব দিতে নেমে মোহামেডানের টপঅর্ডার মাশরাফির গতির কাছে দিশেহারা হয়ে যায়। প্রথম ওভারেই তিনি ওপেনার জনি তালুকদারকে (১) এবং পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে শামসুর রহমানকে (৩) সাজঘরে ফিরিয়ে দেন। জনির সহোদর রনি দারুণ খেলছিলেন। ৩৮ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় ৩৫ রান করার পর তাকে সরাসরি বোল্ড করে নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন মাশরাফি। আবাহনীর জন্যও এটি ছিল তৃতীয় সাফল্য। মাশরাফির শুরুর সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন ইরফান শুক্কুর ও রকিবুল হাসান। ইরফান ৩৫ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে সানজামুল ইসলামের ঘূর্ণিতে আউট হওয়ার পরই মোহামেডানের সব লড়াই শেষ হয়ে যায়। রকিবুলও ২৮ রানে সাজঘরে ফেরেন। ভারতীয় জাতীয় দলের হয়ে ২ ওয়ানডে খেলা পেসার মানপ্রিত গনি প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ২ উইকেট এবং মেহেদি হাসান মিরাজ ৩ উইকেট তুলে নিলে মোহামেডান শেষ ৬ উইকেট হারায় মাত্র ২৬ রানে। শেষ পর্যন্ত ৩০.৪ ওভারে মাত্র ১৪৭ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। স্কোর ॥ আবাহনী ইনিংস- ২৫৯/১০; ৪৯.৪ ওভার (নাসির ৬৭, বিজয় ৬৩, মিঠুন ৪৭, মাশরাফি ২৬, শান্ত ২৬; আজিম ৩/২৬)। মোহামেডান ইনিংস- ১৪৭/১০; ৩০.৪ ওভার (শুক্কুর ৪০, রনি ৩৫, রকিবুল ২৮; মিরাজ ৩/২৮, মাশরাফি ৩/৩৭, গনি ২/২৫)। ফল ॥ আবাহনী ১১২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ এনামুল হক বিজয় (আবাহনী)।
×