ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বসুন্ধরায় ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ ৫ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বসুন্ধরায় ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ ৫ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বসুন্ধরার একটি বাসা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবাসহ পাঁচ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রবিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করে র‌্যাব-১ ব্যাটালিয়ন। গ্রেফতারকৃতরা হলো- সিরাজুল ইসলাম রুবেল (৩২), সুমাইয়া সুলতানা রিয়া (২৪), মফিজুল ইসলাম (২৮), মোঃ শাকের (২৪) ও জসিম উদ্দিন (২২)। র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। সোমবার ভোরে র‌্যাব-১এর একটি আভিযানিক দল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ব্লক-জি ব্লকের ১০নং রোডের ১৫০নং বাড়ির ৫ম তলার ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়। এখানেই তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়। এগুলোর মধ্যে ২০ হাজার একটি ব্যাগে এবং ১ লাখ মাইক্রোবাসের সিটের নিচে গোপন প্রকোষ্ঠে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত ছিল। এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি রেজিস্ট্রেশন বিহীন মাইক্রোবাস, বিভিন্ন ব্রান্ডের ৮টি মোবাইল সেট ও ইয়াবা বিক্রির নগদ ছয় হাজার দুই শ’ টাকা জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক বাজারমূল্য ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। র‌্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত সিরাজুল ইসলাম রুবেল ও সোমাইয়া সুলতানা রিয়া স্বামী-স্ত্রী। তারা বসুন্ধরার ওই ফ্ল্যাটে ভাড়াটিয়া। সিরাজুল ইসলাম এসএসসি ও তার স্ত্রী এইচএসসি পাস। বছর দুই আগে তাদের বিয়ে হয়। সিরাজুল ইসলাম গার্মেন্টসের লট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। সে এ ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। স্ত্রী তাকে সহযোগিতা করত। এ বাসাটি মূলত মাদক ট্রানজিট ও বিতরণের জন্য ব্যবহার করা হয়। আসামি মফিজুল ইসলাম একজন মাইক্রোবাস চালক। ওই মাইক্রোবাসটি মাদক পরিবহনে ব্যবহার করা হয়। এতে যাত্রী পরিবহনের আড়ালে মাদক বহনের জন্য একটি গোপন প্রকোষ্ঠ তৈরি করা হয়। গ্রেফতারকৃত শাকের ও জসিম মূলত যাত্রীবেশে মাদক বহনকারী হিসেবে কাজ করে থাকে। তারা টেকনাফ হতে বাস বা ট্রেনে করে ঢাকায় যাতায়াত করত। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে কক্সবাজার জেলার টেকনাফের দুই মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সিরাজুল ইসলাম রুলের রাজধানীর গোলাপ শাহ্ মাজার এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে ঘটনাচক্রে পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে তদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। টেকনাফের ওই দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতারকৃত সিরাজুল ইসলামকে ইয়াবা ব্যবসার প্রস্তাব দেয়। এভাবেই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে সিরাজুল। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সিরাজুল ইসলাম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি এড়ানোর লক্ষ্যে বসুন্ধরার মতো অভিজাত এলাকায় বাসা ভাড়া নেয় এবং মাদকের ট্রানজিট এবং ডিস্ট্রিবিউশন পয়েন্ট তৈরি করে। এরই ধারাবাহিকায় গত ডিসেম্বরে ৪০ হাজার টাকা ভাড়ায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জি ব্লকের ১০ নম্বর রোডের ১৫০ নম্বর বাড়র একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে বসবাস করতে থাকে। ফ্ল্যাটটির ভাড়া টেকনাফের দুই মাদক ব্যবসায়ী পরিশোধ করত। এছাড়া মাদক বহনের জন্য ব্যবহৃত রেজিস্ট্রেশনবিহীন মাইক্রোবাসটির মালিক টেকনাফের দুই মাদক ব্যবসায়ীর একজন। টেকনাফ হতে ইয়াবার চালান ঢাকায় পৌঁছানোর পর একটি অংশ ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী নরসিংদী, দোহার এলাকায় বিতরণের জন্য ওই ফ্ল্যাটে রেখে দেয়া হতো। এখান থেকে তারা সাধারণত ঢাকার গুলশান, ধানম-ি ও উত্তরা এলাকায় ইয়াবা সরবরাহ করত। ওই এলাকার ইয়াবা ব্যবসায়ীরা ওই ফ্ল্যাট থেকে মাদক সংগ্রহ করত। চালানের একটি অংশ জব্দকৃত একই মাইক্রোবাসে খুলনা, যশোর ও বেনাপোল এলাকায় নিয়ে যাওয়া হতো। এর আগেও এই চালান ছাড়াও আরও কয়েকটি চালান ঢাকার অভ্যন্তরে নিয়ে আসা হয়।
×