ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এ বছরই আরেকটি মামলার রায় হবে ॥ ডিজি

বিডিআর বিদ্রোহে নিহত সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

 বিডিআর বিদ্রোহে নিহত সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেছেন, মামলার বিষয়ে আমরা খোঁজখবর রাখছি। এরই মধ্যে একটি মামলার রায় হয়েছে। বাকি মামলার রায় এ বছরই হবে বলে আমরা আশা করছি। আমাদের আইনজীবীরাও বলছেন এবারই কার্যক্রম শেষ হবে। তবে এজন্য সবার সহযোগিতা করতে হবে। রবিবার সকালে বনানী সামরিক কবরস্থানে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ডিজি জানান, আমরা টাইম টু টাইম খোঁজ নিচ্ছি। বিচারক, আইনজীবী সবাই চেষ্টা করছেন। এ বছরই আরেকটি মামলার রায় হবে বলে আমরা আশা করছি। ৯ বছর আগে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনায় নিহত সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে রবিবার সকাল থেকে। আজ সোমবারও তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবি। রবিবার সকালে বনানী কবরস্থানে নিহতদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় এক মিনিট নীরবতা পালন করে তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এ সময় বনানীর সামরিক কবরস্থানে নিহতদের কবরে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের পক্ষে তার সহকারী সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী ইফতেখারুল আলম এবং পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এর পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেনাবাহিনীর প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল আবু এসরার এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া আজ সোমবার বিকেলে পিলখানার বীরউত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে শহীদের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, শহীদের স্বজন, পিলখানায় কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পদবির সৈনিক উপস্থিত থাকবেন। পিলখানা হত্যাযজ্ঞের পর বাহিনীর নিজস্ব আইনে বিচার করে অনেককেই বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতে ২০১৩ সালের ৫ নবেম্বর ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া ছাড়াও ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। পরে গত বছরের (২০১৭) ২৭ নবেম্বর হাইকোর্টে আপীলের রায়ে ১৫২ জনের মধ্যে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখা হয়। ৮ জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও চারজনকে খালাস দেয়া হয়। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ পাওয়া ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টে আপীল চলার সময়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়। খালাস পান ১২ আসামি। নিম্ন আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ যে আপীল করেছিল, তাদের মধ্যে ৩১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়া সাত বছর করে চারজনকে কারাদণ্ড এবং ৩৪ জনের খালাসের রায় বহাল রাখা হয়। এ মামলার সাড়ে ৮০০ আসামির মধ্যে ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিল জজ আদালত। তাদের মধ্যে ১৮২ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, আটজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড, চারজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ২৯ জনকে খালাস দেয় হাইকোর্ট। বিভাগীয় মামলায় চাকরিচ্যুতসহ সাজা দেয়া হয় অনেককে। ২০০৯ সালের নির্মম এ হত্যাযজ্ঞের পর পুরো বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। তবে বাহিনীর পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কলঙ্কিত সেই ইতিহাস ও ক্ষত ভুলে ঘুরে দাঁড়ানোর নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে এখনও। বিদ্রোহীদের হাতে নিহতদের স্মরণে প্রতিবছর ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিজিবি ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচী পালন করা হয়।
×