ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডিএনসিসির মেয়র পদে উপনির্বাচন- হাইকোর্টের রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ডিএনসিসির মেয়র পদে উপনির্বাচন- হাইকোর্টের রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচন ও ১৮টি নতুন ওয়ার্ড এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৮টি নতুন ওয়ার্ডের নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছে আপীল বিভাগ। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপীল বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেয়। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এ কে এম সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চকে এ রুল নিষ্পত্তি করতে হবে। ফলে রুল নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন স্থগিতই থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আদালতে ইসির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ফিদা এম কামাল। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। নির্বাচন চেয়ে পক্ষভুক্ত হওয়া বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩৬টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীলের শুনানিতে পক্ষভুক্ত হন বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। গত ১ ফেব্রুয়ারি আপীল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করে ইসি। গত ১৭ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন ও সম্প্রসারিত অংশের কাউন্সিলর নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্ট এবং একই সঙ্গে ওই নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল কেন ‘আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে। বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। ডিএনসিসি মেয়রের শূন্য পদে উপনির্বাচনের ঘোষিত তফসিলের স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে পৃথক দুটি রিট দায়ের করেন রাজধানী উত্তরের বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও ভাটারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান। আইনজীবীরা বলেন, ৯ জানুয়ারির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। যিনি প্রার্থী হবেন তিনিও জানেন না তিনি ভোটার কিনা। তা ছাড়া মনোনয়নপত্রে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর থাকতে হবে। ভোটার তালিকা প্রকাশ না হলে এটা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ৫ (৩) উপধারায় বলা হয়েছে, ‘মেয়রের পদসহ কর্পোরেশনের শতকরা ৭৫ ভাগ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইলে এবং নির্বাচিত কাউন্সিলরগণের নাম সরকারী গেজেটে প্রকাশিত হইলে, কর্পোরেশন, এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।’ আইন অনুযায়ী, উত্তর সিটি কর্পোরেশনে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি মিলে কাউন্সিলর শতকরা ৭৫ ভাগ হয় না। কারণ নতুন ১৮টিতে তো নির্বাচনই হয়নি। সে হিসেবে মেয়র পদই তো গঠিত হচ্ছে না। তা ছাড়া সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে যারা কাউন্সিলর হবেন তারা কতদিনের জন্য নির্বাচিত হবেন। তারা কী পাঁচ বছরের জন্য হবেন, না আড়াই বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন-সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলা হয় রিট আবেদনে। প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩০ নবেম্বর মেয়র আনিসুল হকের আকস্মিক মৃত্যুর পর ডিএনসিসির মেয়র পদে উপনির্বাচনের জন্য গত ৯ জানুয়ারি তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে ওই দিন ডিএসসিসির নতুন সংযোজিত ১৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনেরও তফসিল ঘোষণা করা হয়। একই সময়ে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ৬টি করে ১২টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচন করার কথা বলা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা ছিল।
×