ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তালিকা যাচাই বাছাইয়ের পর প্রত্যাবাসন শুরু করতে দু’মাস লাগবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

তালিকা যাচাই বাছাইয়ের পর প্রত্যাবাসন শুরু করতে দু’মাস লাগবে

তৌহিদুর রহমান ॥ মিয়ানমারের নিকট ৮ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিকের তালিকা হস্তান্তর করা হলেও খুব দ্রুত তাদের ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না। তালিকা যাচাই বাছাই শেষে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে আরও প্রায় দুই মাস সময় লাগতে পারে। এদিকে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা ঢলের আজ রবিবার ছয় মাস পূর্তি হচ্ছে। সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে ৮ হাজার ৩২ জনের একটি তালিকা ইতোমধ্যেই মিয়ানমারকে দেয়া হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে এক হাজার ৬৭৩টি পরিবার। তালিকাটি যাচাই বাছাইয়ের পর রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার কথা রয়েছে। ধীরে ধীরে সব রোহিঙ্গাদেরও ফিরিয়ে নিয়ে যাবে মিয়ানমার। তবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের তালিকা যাচাই বাছাই শেষে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে আরও প্রায় দুই মাস সময় লাগতে পারে। বাংলাদেশে এখন ১১ লাখেরও বেশি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক অবস্থান করছে। এখনও প্রতিদিনই কিছু না কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। আবার দুই দেশের সীমান্তের শূন্যরেখায় আটকে পড়েছে প্রায় ছয় হাজার রোহিঙ্গা। গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল শূন্যরেখা পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের সেদেশে ফিরে যেতে বলেছে। তবে পরিদর্শনের পরে এখনও সেসব রোহিঙ্গারা ফিরে যায়নি। রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সর্বশেষ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়। এক সপ্তাহ আগে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের একটি তালিকা হস্তান্তর করা হয়। মিয়ানমার ওই তালিকা যাচাই বাছাই করবে। তবে কবে নাগাদ মিয়ানমার ওই যাছাই বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করবে, সেটা এখনই কেউ বলতে পারছে না। তাদের যাচাই বাছাই শেষে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে এখনও প্রায় দুই মাস সময় লাগতে পারে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এমনই আভাস দিয়েছেন। গত বছর ২৫ আগস্ট থেকে নতুন করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল নামে। আজ রবিবার রোহিঙ্গা ঢলের ছয় মাস পূর্তি হচ্ছে। রোহিঙ্গা ঢলের পর থেকেই তাদের ফেরাতে উদ্যোগ নেয় সরকার। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও বিষয়টি তুলে ধরে সরকার। মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক চাপে ফেলতেও সক্ষম হয় বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে গত বছর ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ দুই দেশের প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে সব ধরনের উদ্যোগ নেবে বলেও জানানো হয়। এরপর গত বছর ২৩ নবেম্বর নেপিডোয় উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আলোকে এই ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়। সে অনুযায়ী উভয় দেশ একটি ফিজিক্যাল এ্যারেঞ্জমেন্টও সই করে। রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কার্যক্রম গত ২৩ জানুয়ারির মধ্যে হওয়ার কথা ছিল, তবে সেটি আর সম্ভব হয়নি। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে রোহিঙ্গা ফেরত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে পরিবারভিত্তিক তালিকা তৈরির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্ব হয়। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করেছে, তার জন্য পৃথকভাবে একটি দলিলে সই করে উভয় পক্ষ। আর মাঠ পর্যায়ে যাবতীয় বিষয়াদি তদারকি ও ব্যবস্থা নেয়ার লক্ষ্যে উভয় পক্ষ একটি ফিজিক্যাল এ্যারেঞ্জমেন্ট সই করে।
×