ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা আগে ছিলেন দেশনেত্রী এখন মানুষের মা ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

খালেদা আগে ছিলেন দেশনেত্রী এখন মানুষের  মা ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বিএনপি এখন শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনাতনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের নির্দেশে আমরা ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে যাচ্ছি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্যদিয়ে নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। কোন ধরনের উস্কানির ফাঁদে পা দেয়া যাবে না। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আগামী দিনে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে নেত্রীকে মুক্ত করে আনতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কোন ক্ষতি করতে পারেননি। খালেদা জিয়া আগে ছিলেন দেশনেত্রী আর কারাগারে নেয়ার কারণে এখন তিনি সারাদেশের মানুষের মা হয়ে গেছেন। আজ সারাবিশ্ব বলছে, প্রধানমন্ত্রী এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছেন। ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার পেছনে সরকারের একমাত্র কারণ, শেখ হাসিনা এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চান। কিন্তু তার সেই ইচ্ছে পূরণ হবে না। বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে আর কোনও নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে বিএনপি দুর্বার আন্দোলন করবে। ফখরুল বলেন, বিএনপির যেসব নেতা কারাগারের বাইরে আছে, তাদের একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করে, সমস্ত শক্তিকে সংগঠিত করে একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। সেই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের মানুষের ভোটের, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার, সুষ্ঠু সুন্দর জীবনযাপন করার অধিকার হরণ করেছে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, যে খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছেন, আজকে তাকে অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। দলের নেতাকর্মীদেরও উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আজ পরীক্ষার সময়। এ রকম পরীক্ষা বোধ হয় এর আগে জাতিকে দিতে হয়নি। আজকে আমরা যে সংগ্রাম করছি, তা বিএনপি বা খালেদা জিয়ার জন্য নয়। এই সংগ্রাম দেশকে রক্ষা করার জন্য এবং দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য। তিনি বলেন, এই সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপার্সন থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মী সবাইকে কারাগারে যেতে হয়েছে। এমন কোনও নেতা নেই যার নামে মামলা নেই। এ অবস্থায় একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চলতে পারে না। আলোচনা সভার এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাদের নাম মাইকে ঘোষণা না করায় হৈচৈ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সবাইকে শান্ত হয়ে বসার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, নেতাদের বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে সবার নাম ঘোষণা করা হবে। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, এনাম আহমেদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা জয়নুল আবদীন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, হাবীবুর রহমান হাবীব, শহীদ দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতা বজলুল বাসিত আনজু প্রমুখ।
×