ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শনাক্ত হলে দ্রুত চিকিৎসায় সেরে যায়

সব সরকারী হাসপাতালে জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার লক্ষণের পরীক্ষা

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সব সরকারী হাসপাতালে  জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার  লক্ষণের পরীক্ষা

সমুদ্র হক ॥ নারীর জরায়ু ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে দেশের সব জেনারেল ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণের পরীক্ষা হচ্ছে। এই পরীক্ষায় দেশে শ্রেষ্ঠ হয়েছে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল। গত বছর ও চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত জেলার এই জেনারেল হাসপাতালে (মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল) ৫ হাজার ৬শ’ ৯১ নারীর জরায়ু ও স্তন পরীক্ষা করে ১শ’ ৭ নারীর, জরায়ুর প্যাসেজে ১২ নারীর স্তনে ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ ধরা পরে। ‘তাদের ভয়ের কিছু নেই’ এমন কাউন্সিলিং করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পরবর্তী কলপসকপি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ক্যান্সার ডিটেকশন হলে পরবর্তী চিকিৎসা দেয়া হয়। দেশে ক্যান্সার রোগ নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পরীক্ষা বিএসএমএমইউয়ের একটি প্রকল্প। এই বিষয়ে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের গাইনী বিভাগের কনসালটেন্ট ডাঃ আফরোজা সরকার জলি বলেন, জরায়ু ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণের এই পরীক্ষা ম্যানুয়ালি হয়। জরায়ুর মুখের ক্যান্সারের পরীক্ষার নাম ভিজুয়াল ইন্সপেকশন সার্ভিক্সিয়থ এ্যাসিটিক এ্যাসিড (ভায়া)। এক ধরনের ওষুধ জরায়ুতে প্রবেশের পর বিশেষ রঙে পাল্টে গেলে ধরা হয় ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ। এ থেকে ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে। ভেতরের এই ঘা ক্যান্সার নাও হতে পারে। ভায়া পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ হলেই কেবল ঢাকায় কলপসকপি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ক্যান্সার প্রাথমিক শনাক্ত হলে দ্রুত চিকিৎসায় সেরে যায়। ডাঃ জলি বলেন, নারীর ব্রেস্ট ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্তের পরীক্ষার নাম ক্লিনিক্যাল ব্রেস্ট এক্সামিনেশন (সিবিই)। এই পরীক্ষাও ম্যানুয়ালি করা হয়। নারীর ব্রেস্টে অস্বাভাবিক কিছু দেখা দিলে তা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভি হলে গাইনি বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়। আরও পরীক্ষার পর ব্রেস্ট অপারশন করে টিউমার বা অন্যকিছু বের করা হয়। ওগুলোর বায়োপসি পরীক্ষার পর শনাক্ত হয় ক্যান্সার কি না। প্রাথমিক লক্ষণে ক্যান্সার শনাক্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা দিয়ে রোগ প্রতিরোধ করা হয়। দেশে এ ধরনের পরীক্ষা বেশি হয়েছে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে। এই হাসপাতালের দুই সিনিয়র নার্স সাহানা বেগম ও অনিকা বানু। নিষ্ঠা ও কর্মদক্ষতায় তাদের পুরস্কৃত করা হয়। বললেন, হাসপাতালের বহির্বিভাগে এ ধরনের পরীক্ষার টিকেট কেটে গাইনি বিভাগে গেলে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার পজিটিভ না নেগেটিভ তা নির্ণয় করতে বেশি সময় লাগে না। চিকিৎসকের রেফারেন্স ছাড়াও অনেক নারী স্বেচ্ছায় এই দুই পরীক্ষা করিয়ে আগে থেকেই সাবধান হন। এই বিষয়ে গাইনি কনসালটেন্ট আফরোজা সরকার জলি বলেন, ত্রিশোর্ধ প্রত্যেক বিবাহিত নারীর প্রতি তিন বছর অন্তর জরায়ুর প্যাসেজ ও ব্রেস্টের পরীক্ষা করা দরকার। কিশোরী বেলার মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হওয়ার পর হরমোনের কারণে ব্রেস্ট দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। যৌবনে প্রতিমাসে স্বাভাবিক পিরিয়ড হয়। নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই মেয়েদের সিবিই পরীক্ষা করে নেয়া ভাল।
×