ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

-কাজী শুভ

অডিও মুখ্য ভিডিও গৌণ হওয়া উচিত

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

অডিও মুখ্য ভিডিও গৌণ হওয়া উচিত

আনন্দকণ্ঠ : স্টেজের মৌসুম এখন। ব্যস্ততা কেমন? কাজী শুভ : এইতো স্টেজের কাজ নিয়েই ব্যস্ততা যাচ্ছে। বেশ কায়েকদিন যাবত স্টেজ প্রোগ্রামই করছি। আনন্দকণ্ঠ : স্টেজে অনেক সময় বিচিত্র অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। সে ধরনের কোন অভিজ্ঞতা আছে? কাজী শুভ : অনেক ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখিই হতে হয়। একেক জায়গায় একেক ধরনের অভিজ্ঞতা। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় স্টেজ পারফর্ম ভাল লাগে। বিভিন্ন জায়গায় শো করা হয় সেখানে অনেক ভক্তরা থাকে এবং সেই দৃশ্যগুলো অনেক অনেক ভাল লাগে। আনন্দকণ্ঠ : সম্প্রতি সঙ্গীতার ব্যানারে প্রকাশ হয়েছে ‘চকোলেটি প্রিয়া’ গান। কেমন সাড়া পাচ্ছেন? কাজী শুভ : ভালো সাড়াই পাচ্ছি। সবাই বলতেছে ভাল হয়েছে। স্টেজ শো করতে গেলেও সবার মুখে গানটির প্রশংসা পাচ্ছি। আনন্দকণ্ঠ : শ্রোতারা শিগগির কি গান পেতে যাচ্ছে? কাজী শুভ : মাত্র তো ভালবাসা দিবসের কাজ শেষ করলাম। পহেলা বৈশাখের জন্য বেশ কিছু গানের পরিকল্পনা চলছে। আনন্দকণ্ঠ : আমাদের দেশের বেশকিছু গানই কোটির ঘর পার করেছে। এটাকে আপনি কীভাবে দেখেন? কাজী শুভ : ভাল। কোটির ঘরে যাচ্ছে এটা ভাল। সবার আগে দেখতে হবে অডিওটা কতটুকু গেল। সেটা আমাদের যাচাই করা উচিত। সবার আগে প্রধান অডিও গান। অবশ্য এখন ইউটিউবের সময়, মিউজিক ভিডিও এর সময়। ইউটিউব সহায়ক একটি ভূমিকা পালন করছে। এখন সবাই ইউটিউব ছাড়া কেউ গান দেখছে না। অবশ্যই তার জন্য একটা ভাল ভিডিও দরকার। এবং সেই ক্ষেত্রে ভাল একটি অডিও দরকার। শ্রোতাদের কাছে গানটা পৌঁছানো সেটার দিকে বেশি নজর দেওয়া উচিত গানের ক্ষেত্রে। আনন্দকণ্ঠ : কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি সুরকার হিসেবেও কাজ করছেন। নিজেকে সুরকার হিসেবে কতটা সফল মনে করেন? কাজী শুভ : সফলতা বিচার করবে শ্রোতারা। অনেক গানের সুর করেছি। আমার সুর করা গান অন্যরা গায় সেটা খুব ভাল লাগে। আমার কাছে মনে হচ্ছে সুরকার হিসেবে এখনও সফল হতে পারিনি। ভাল কাজ করার চেষ্টা করছি। এটার মূল্যায়ন আমি করতে পারব না। মূল্যায়ন শ্রোতারা করতে পারবে কতটুকু পেরেছি। তবে ভাল ভাল কাজ করে যেতে হবে। আনন্দকণ্ঠ : এখন অডিও ইন্ডাস্ট্রি কেমন মনে হয় আপনার কাছে? কাজী শুভ : অডিও ইন্ডাস্ট্রি ২০১৮ শুরু দিকে যে গতি ছিল তা একটু কমে গেছে। হয়তো বা সেটা কাটিয়ে উঠবেন। ইন্ডাস্ট্রি এখন ভিডিও কেন্দ্রিক। বেশ কিছু কোম্পানি অতিরিক্ত বিনিয়োগ করে ফেলেছিল মিউজিক ভিডিওতে। কিন্তু সেই বিনিয়োগটা উঠাতে তারা পারেনি এখনও। আর এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সে কারণেই এখন তারা কম গান প্রকাশ করছে। হয়তো ধীরে ধীরে ঠিক হবে বিষয়টি। আনন্দকণ্ঠ : কিন্তু এখনও তো ব্যয়বহুল মিউজিক ভিডিওর প্রতিযোগিতা চলছে। তাই নয় কি? কাজী শুভ : তা চলছে। তবে এটা কমে আসছে। আর ব্যয়বহুল মিউজিক ভিডিওর প্রতি আমার আপত্তি আছে। পরিষ্কার করে বলতে চাই আমি অবশ্যই মিউজিক ভিডিওর পক্ষে। গানের প্রচারণার জন্য মিউজিক ভিডিও লাগবে। কিন্তু ব্যয়বহুল মিউজিক ভিডিওর পক্ষে আমি নই। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অডিওর চাইতে এখন ভিডিওর দিকে বেশি জোর দিচ্ছে কোম্পানিগুলো। আসলে অডিওটা যদি শক্তিশালী হয় তাহলে মোটামুটি মানের ভিডিও হলেই সেটা শ্রোতারা গ্রহণ করবে। অডিও ভাল না হলে যত দামের ভিডিওই করা হোক না কেন সেটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। কিন্তু এখন হচ্ছে উল্টো। ১০ ভাগ খরচ করা হচ্ছে অডিওতে। আর ভিডিওতে খরচ হচ্ছে ৯০ ভাগ। এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। এ কারণে ভাল মানের গান এখন কম পাচ্ছি আমরা। অডিওটা মুখ্য আর ভিডিওটা গৌণ হওয়া উচিত। কিন্তু তা নয়। এখন গানে ভিডিওটা মুখ্য হয়ে গেছে আর অডিওটা গৌণ। আর একটি বিষয় হলো ইউটিউব ভিউয়ের প্রতিযোগিতা চলছে। কারও গান যদি কোটি ভিউ হয় তাহলে আমি একজন শিল্পী হিসেবে খুশি। কিন্তু ইউটিউব ভিউ দিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই হয় না। কারণ ইউটিউবে অনেক এমন গান রয়েছে যার ভিউ কোটি, কিন্তু শ্রোতাপ্রিয় না। আবার এমন গানও রয়েছে যেটি শ্রোতাপ্রিয় কিন্তু ভিউ বেশি না। ভিউ সময়ের চাহিদা হতে পারে। কিন্তু তা কখনও জনপ্রিয়তার মূল মাপকাঠি না।
×