ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গোলরক্ষক ডি গিয়ার হাতে ইজ্জত রক্ষা ম্যানইউর

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গোলরক্ষক ডি গিয়ার হাতে ইজ্জত রক্ষা ম্যানইউর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্প্যানিশ গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়ার দুর্দান্ত নৈপুণ্যে ইজ্জত রক্ষা হয়েছে ইংলিশ পরাশক্তি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচে তিনি স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়ার বিরুদ্ধে বীরোচিত পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেন। আর তাতেই সেভিয়ার মাঠে গোলশূন্য ড্র করে আসতে পেরেছে অতিথি ম্যানইউ। বুধবার রাতে মুখোমুখি হয় দল দু’টি। প্রিকোয়ার্টার ফাইনালের আরেক ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের নৈপুণ্যে ইতালিয়ান ক্লাব এএস রোমাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইউক্রেনের শাখতার ডোনেস্ক। সেভিয়ার মাঠে স্বাগতিক দলের মিডফিল্ডার স্টেভেন এনজনজি ও স্ট্রাইকার লুইস মুরিয়েলের প্রথমার্ধের দুটি নিশ্চিত গোল রুখে দেন ম্যানইউ গোলরক্ষক ডি গিয়া। শুধু তাই নয়, পুরো ম্যাচে তিনি প্রতিপক্ষের আটটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ রুখে দিয়েছেন। তাতেই ইজ্জত রক্ষা হয়েছে কোচ জোশে মরিনহোর দলের। এ্যালেক্সিস সানচেজ, রোমেলু লুকাকু ও জুয়ান মাতাকে নিয়ে গঠিত ইউনাইটেডের শক্তিশালী আক্রমণভাগকে অকেজো করে রাখে সেভিয়া। অবশ্য লুকাকু একটি গোল করেছিলেন। কিন্তু সেটি হ্যান্ডবলের কারণে বাতিল করা হয়। এস্টাডিও রামোন সানচেজ পিজজুয়ানে সেভিয়ার রেকর্ড যে কোন প্রতিপক্ষের জন্যই ভয় জাগানোর মতো। ২০১৬ সালের নবেম্বরের পর এই মাঠে মাত্র একবারই হেরেছে কোচ ভিনসেজ্জে মনটেলার দল। এই মাঠে স্বাগতিকদের জন্য দর্শকদের সমর্থনটাই আলাদা। ম্যাচের আগে ফ্লাডলাইটের ফ্ল্যাশ অন অফের মধ্যে তারা ক্লাবের সঙ্গীত গেয়ে দলকে উদ্বুদ্ধ করার কাজটি করে থাকেন। এই সমর্থনের মধ্যে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো সেভিয়া। লুইস মুরেলের দূর থেকে নেয়া শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক ডি গিয়া। এর ১১ মিনিট পর ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক উইঙ্গার জেসাস নাভাসের একই দূরত্ব থেকে নেয়া আরেকটি শট একটুর জন্য জাল পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধেও বল দখলে অনেকটা এগিয়ে ছিল সেভিয়া। কয়েকটি লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিয়েছে, কয়েকটি আবার ঠেকিয়েছেন ডি গিয়া। এর মধ্যে একবার বল জালে জড়ায় ম্যানইউ। তবে হ্যান্ডবল হওয়ার পর গোল করায় বলে তা বাতিল হয়ে যায়। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে গত চার বছরের মধ্যে এটি ছিল ইউনাইটেডের প্রথম নকআউট পর্বের ম্যাচ। হয়তো এ কারণে নড়বড়ে ছিলেন মরিনহোর ছাত্ররা। ডি গিয়ার আটটি ‘সেভ’-এর কল্যাণেই ইউনাইটেডের রক্ষণভাগে ২৫ বার আক্রমণ করেও গোল পায়নি সেভিয়া। এর জবাবে মরিনহোর আক্রমণভাগ নিয়ে কথা না বলাই ভাল। স্প্যানিশ ক্লাবটির গোলপোস্টে লুকাকু-সানচেজরা মিলে রাখতে পেরেছেন মাত্র একটি শট। আক্রমণ, গোলপোস্টে, শট এমনকি বল দখলে রাখার হারেও ইউনাইটেডের চেয়ে এগিয়ে ছিল সেভিয়া। স্বাগতিকদের দখলে ছিল ৫৭ শতাংশ বলের দখল। এরপরও ভিনসেজ্জে মনটেলার দল শুধু জয় পায়নি ডি গিয়ার কারণে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ডি গিয়ার আগে সর্বশেষ ইউনাইটেডের গোলরক্ষক হিসেবে কোন ম্যাচে আটটি ‘সেভ’ করেছিলেন ভ্যান ডার সার। সেটা ২০১১ সালে বার্সিলোনার বিপক্ষে। সাত বছর পর ডি গিয়া তার পূর্বসূরিকে মনে করিয়ে দিয়েছেন। দারুণ পারফর্মেন্সের কারণে শুধু কোচ মরিনহো নন, সবাই প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন ডি গিয়াকে। এদিকে আরেক ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও জয় পেয়েছে শাখতার ডোনেস্ক। অথচ ম্যাচের ৪১ মিনিটে তুরস্কের উইঙ্গার চেনজিগ আন্ডারের গোলে রোমা এগিয়ে যায়। এ্যান্টোনিও কাসানোর পর ক্লাবটির ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ (২০ বছর ২২২ দিন) খেলোয়াড় হিসেবে গোল করলেন চেনজিগ। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে তার প্রথম এ গোলটি আবার তুরস্কের হয়ে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ডও। বিরতির পর ৫২ মিনিটে ফেরেইরার গোলে সমতায় ফেরে শাখতার। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স লীগের নকআউট পর্বে রোমার শাখতার ‘প্রেম’ ধরে রাখেন ফ্রেড। গোল করেন ৭১ মিনিটে। আসরটির নকআউট পর্বে শাখতার এ পর্যন্ত যে তিন ম্যাচ জিতেছে তার সবগুলোই রোমার বিপক্ষে। শাখতারের ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড় সংগ্রহের ঐতিহ্য বেশ পুরনো। বর্তমান দলটিতে আছেন অধিনায়ক টাইসন, বার্নার্ড, ফ্রেড ও ইসমাইলী। ক্লাবটির ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যে ১৪তম আলাদা খেলোয়াড় হিসেবে গোল করেছেন ফ্রেড। আসরটির ইতিহাসে ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড় দিয়ে গোল করানোর ক্ষেত্রে তাদের টেক্কা দিতে পেরেছে শুধু পোর্তো। তাদের গোলদাতাদের মধ্যে ২১ জনই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার।
×