ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জনযোদ্ধাদের সম্মান দিতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পূর্ণতা পাবে না ॥ মেনন

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

জনযোদ্ধাদের সম্মান দিতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পূর্ণতা পাবে না ॥ মেনন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল সমগ্র জনগণের একথা উল্লেখ করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, গণযুদ্ধের সেই জনযোদ্ধাদের সম্মান দিতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পূর্ণতা পাবে না। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলা কর্মসূচী থেকে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ সমন্বয় কমিটি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় রাশেদ খান মেনন একথা বলেন। সমাজকল্যাণমন্ত্রী মেনন বলেন, ’৭০ এর ফেব্রুয়ারিতে ওই কর্মসূচী ঘোষণা করায় আমাকে ও কাজী জাফরকে সামরিক আদালতে সাত বছর সশ্রম কারাদ- দেয়। আত্মগোপন থেকেই আমরা মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করতে কাজ শুরু করি। আর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গঠন করা হয় জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ সমন্বয় কমিটি। অঞ্চল জুড়ে ওই সমন্বয় কমিটির নেতৃত্বে এই মুক্তিযোদ্ধারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল নয়মাস ধরেই মুক্ত রেখেছিল। কিন্তু তাদের স্বীকৃতি নেই। মুক্তিযোদ্ধা তালিকাতেও তাদের নাম ওঠে না। ১৪ দলের অন্যতম এই শরিক নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান এবং জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির দ্বারা সংগঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভূক্তিকরণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের পূর্ণতা আনা প্রয়োজন। রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনোর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আলী আহমেদ এনামুল হক। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, সমাজকর্মী ও গবেষক শামসুল হুদা, সাংবাদিক আবেদ খান। সঞ্চালনা করেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক। আলোচনা সভায় মেনন বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীরা কেবল অংশগ্রহণই করেনি সকল প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে তখন দেশের অভ্যন্তরে বিস্তীর্ণ অঞ্চল হানাদারবাহিনী মুক্ত রেখেছিল। তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত হওয়া কিংবা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাওয়ার জন্য নয়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বামপন্থ’ী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান চাই। ইতিহাস তুলে ধরে মেনন আরও বলেন ফ্রিডম ফাইটারস্, জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সম্বয় কমিটি, মুজিববাহিনী, ছাত্র ইউনিয়ন, ন্যাপ এবং সিরাজ সিকদারের শ্রমিক আন্দোলন এই চারটি ধারার মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। তাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এসব ধারায় কোন একটিকে বাদ দিয়ে ইতিহাস লিখলে তার পূর্ণতা পাবে না। আগামী দিনে মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের ভূমিকা নিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা এবং নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্য সকলকে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
×