ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে লেখা এক খোলা চিঠিতে পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট পদে অবাধ নির্বাচন চেয়েছেন মাহমুদ আহমেদিনেজাদ। তিনি দুই মেয়াদে দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
বুধবার নিজের ওয়েবসাইটে আহমেদিনেজাদ চিঠিটি প্রকাশ করেন। তিনি ২০০৯ সালে দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তার বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে বিরোধীরা তুমুল বিক্ষোভ করেছিল। ওই সময় সহিংসতায় বহু লোক নিহত ও শতাধিক আটক হয়েছিল। পরে নিরাপত্তা বাহিনী প্রভাবশালী বিপ্লবী রক্ষীদলের নেতৃত্ব ক্ষমতা কাঠামোর ভিত কাঁপিয়ে দেয়া বিক্ষোভ-সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনে। নয় বছর আগের ওই সঙ্কটকালে সর্বোচ্চ নেতা খামেনির সমর্থন পেয়েছিলেন আহমেদিনেজাদ। কিন্তু ২০১১ সালে গোয়েন্দা মন্ত্রীকে বরখাস্তের ঘটনায় দুজনের সম্পর্কে চিড় ধরে। আহমেদিনেজাদ মন্ত্রীকে বরখাস্তু করলেও ইরানের সকল নীতির ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাধারী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনি প্রেসিডেন্টের আদেশ বাতিল করেন। আহমেদিনেজাদ কর্তৃত্বের সীমা অতিক্রমের চেষ্টা করছে বলেও তিনি ওই সময় ইঙ্গিত করেছিলেন। ক্ষমতায় থাকার সময় বেপরোয়া ও কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত আহমেদিনেজাদ ২০১৩ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। দেশটির আইন অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট হতে পারে না। সেবারের নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসা হাসান রুহানি গত বছরের নির্বাচনেও বিজয়ী হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি সমাজ ও অর্থনীতিতে উদারনৈতিক সংস্কার এবং নির্বাচনে বিপ্লবী রক্ষীদলকে হস্তক্ষেপ না করতে আহ্বান জানালেও সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার ক্ষমতা হ্রাসের ব্যাপারে কিছু বলেননি। আহমেদিনেজাদ চিঠিতে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পদে ও পার্লামেন্টে দ্রুত ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন জরুরীভিত্তিতে প্রয়োজন, অবশ্যই সেটি হতে হবে গার্ডিয়ান কাউন্সিলের তৎপরতা এবং সামরিক বাহিনী ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলোর হস্তক্ষেপমুক্ত। পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনের অধিকার আছে জনগণের। গার্ডিয়ান কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টে মনোনয়ন চাওয়া প্রার্থীদের বাছাই করে, যেখানে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার ইচ্ছার প্রতিফলনও থাকে। আহমেদিনেজাদের সমালোচকরাও ২০০৫ ও ২০০৯ এর নির্বাচনে গার্ডিয়ান কাউন্সিলের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছিল। আহমেদিনেজাদকে জেতাতে কাউন্সিল নানা ধরনের তৎপরতা চালিয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তারা।