ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে শঙ্কা

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে সদ্য প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ২৬ জন খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞের অভিমত প্রকাশিত হয়েছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আগামী ১০ বছরে এর অপব্যবহার বহু বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। মানুষকে নিরাপদ রাখতে এখন থেকেই পরিকল্পনা নিয়ে ভাবতে হবে বলে তারা মনে করেন। এএফপি ও ইন্ডেপেন্ডেন্ট। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাস্তব জগতের মতো ডিজিটাল জগতে এআই যে কি ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে সে সম্পর্কে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যথেষ্ট সচেতন নন। কৃত্রিম বুদ্ধি সব শ্রেণীর মানুষের আরও ক্ষমতায়ন করবে। এর মধ্যে রয়েছে বৈরী দেশগুলো, সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা। নীতি নির্ধারণ ও গবেষণা পর্যায়ে যারা কাজ করছেন তারা যদি এখনই সচেতন না হন তবে এআইর অপব্যবহার সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে যেতে পারে। সেজন্য তাদের এ বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করে যাওয়া উচিত। যেসব ক্ষেত্রে হুমকি আসতে পারে তার মধ্যে রয়েছে ড্রোন থেকে শুরু করে গণমাধ্যম, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং এমনকি পোকামাকড়ের ডিএনএ পরিবর্তন ঘটানোর ফলে বিপজ্জনক পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। তারা কিছু কিছু হুমকি এমন যেগুলো সম্পর্কে আগে থেকে অনুমান করা যায়। যেমন স্পিচ সিনথিসি সফটওয়্যার ব্যবহার করে ফেক ভিডিও তৈরি করা। দেখলে মনে হবে বাস্তব কিন্তু আসলে ভুয়া। এছাড়া কম্পিউটার প্রযুক্তির অপব্যবহার করেও অনেক অঘটন সম্ভব। এগুলো প্রতিরোধ করতে হলে এআই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে এখন থেকেই কাজ শুরু করা উচিত। তারা পরামর্শ দেবেন কিভাবে এআই থেকে এসব হুমকি দূরে রাখা যায়। শীর্ষ স্থানীয় এআই গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞদের করা ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার : ভবিষ্যত পূর্বাভাষ, প্রতিরোধ ও প্রশমন শীর্ষক ১শ’ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো এর অপব্যবহারের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। প্রতিবেদন প্রণয়নে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছে এলন মাস্কের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওপেন এআই, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফিউচার এ্যান্ড হিউম্যানিটি ইনস্টিটিউট ও কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব এক্সিস্টেনশনার রিস্ক। প্রতিবেদনের এককজন লেখক মন্তব্য করেছেন, ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম। আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে কি ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে এই প্রতিবেদনে সেগুলোর কিছু পূর্বাভাষ করা হয়েছে। প্রতিদিনই সংঘাত ও সংঘর্ষে জর্জরিত হচ্ছে পৃথিবী। এর মধ্যে এআইর ব্যবহার ভবিষ্যত আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। প্রতিবেদনে এখনই পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। আমাদের আহ্বানের লক্ষ্য বিভিন্ন দেশের সরকার থেকে শুরু করে সরকারী ও বেসরকারী গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে এআইকে শুধু যন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত করে দেখা হয়েছে। বিষয়টি এখন আর কেবল যন্ত্রেই সীমাবদ্ধ থাকছে না।’ তিনি বলছেন, এআইর অপব্যবহার রোধ করতে হলে সফটওয়্যার ও অন্যান্য প্রোগ্রাম এমনভাবে তৈরি করা দরকার যা সহজে হ্যাক করা যাবে না। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফিউচার ও হিউম্যানিটি ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ফেলো মাইলস ব্রুনডেজ বলছেন, ‘বর্তমানে নিরাপত্তা হুমকির যে ধরনটি বিদ্যমান রয়েছে তা সম্পূর্ণ বদলে দিতে পারে এআই।’ নির্বাচনের ফল প্রভাবিত করতে একনায়ক, সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা এটি ব্যবহার করতে পারে। বাড়তে পারে সাইবার অপরাধের সংখ্যাও। কারও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি থেকে ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাট করা সবই সম্ভব হতে পারে এআইর মাধ্যমে।
×