ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নির্ধারিত সময়ে ছাত্রলীগের সম্মেলন হবে কিনা সন্দেহ

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নির্ধারিত সময়ে ছাত্রলীগের সম্মেলন হবে কিনা সন্দেহ

সোহেল তানভীর ॥ ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে প্রস্তুতি থাকলেও নির্ধারিত সময়ে তা অনুষ্ঠিত হবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছা চলতি বছরের স্বাধীনতার মাসে ছাত্রলীগ তাদের সম্মেলন করুক। ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এমন তথ্য জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের। তিনি বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনার ইচ্ছা চলতি বছরের মার্চ মাসে (স্বাধীনতার মাস) ছাত্রলীগ সম্মেলন করুক। তিনি ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃত্বকে জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন। পরে গত ৮ জানুয়ারি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতারা সাক্ষাত করেন। সাক্ষাতকালে চলতি বছরের ৩১ মার্চ সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। তার পরও নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন হবে কিনা এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে সংগঠনের একাধিক সূত্র। সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণের পরপরই উজ্জীবিত হয়ে উঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। নিষ্কিয় থাকা অনেকেই সক্রিয় হয়ে উঠে। ছাত্র রাজনীতির আতুড়ঘর খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন হয়ে উঠে সরগরম। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায় নেতা-কর্মীদের মাঝে। ৩১ মার্চ সম্মেলন হচ্ছে না বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এমন আওয়াজ তুলেছেন ছাত্রলীগের একটি অংশ। সূত্র জানায়, ২৯তম সম্মেলন ঠেকাতে একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমান নেতৃত্ব তাদের নিজস্ব কিছু প্রার্থী তৈরি করেছেন এবং তাদের সিভি জমা দেয়ার জন্য নিষেধ করেছেন এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। পদ প্রত্যাশী অন্যদের প্রার্থী হতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে বলে দাবি করছে একটি সূত্রটি। সম্মেলনের আর মাত্র এক মাসের মতো সময় আছে। সম্মেলন সফল করার জন্য এখনও কোন উদ্যেগ নেয়া হচ্ছে না। করা হচ্ছে না সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি। তাছাড়া সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হচ্ছে না। তবে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের সম্মেলন যথা সময়ে হবে। সম্মেলন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি থেমে নেই। এখন আমরা বিভিন্ন জেলা কমিটিগুলো দিচ্ছি।’ ছাত্রলীগের আগের কমিটির সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম ২৮তম সম্মেলনের আড়াই মাস আগে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছিলেন। ২৯তম সম্মেলনের আর মাত্র এক মাস সাত দিন বাকি। এখনও সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি। সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘আমরা কবে সংবাদ সম্মেলন করব সেটা আমাদের নিজস্ব ব্যাপার।’ ১৯৯০ সাল-পরবর্তী ছাত্রলীগের কোন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকই চার বছরের আগে ক্ষমতা ছাড়েননি। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ১১(খ) ও (গ) ধারায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কার্যকাল দুই বছর। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠার পর বিগত ৭০ বছরে সম্মেলন হয়েছে ২৮ বার। এর মধ্যে গত ৩০ বছরে মাত্র ৭টি নতুন কমিটি পেয়েছে ছাত্রলীগ। কিন্তু গঠনতন্ত্র মানলে অন্তত ১৫টি কমিটি হতো। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে শেখ হাসিনার ইচ্ছা অনুযায়ী কি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে না।
×