ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিডিয়া সংলাপে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা

বাংলাদেশ-ভারত সোনালি সময় অতিক্রম করছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশ-ভারত সোনালি সময় অতিক্রম করছে

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ও ভারত সোনালি সময় অতিক্রম করছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তিনি আরও বলেছেন, বিগত সময়ের তুলনায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে এখন যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে, আগামী দিনগুলোতেও তা থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ-ভারত মিডিয়া সংলাপের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট ল এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এই মিডিয়া সংলাপের দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতীয় হাইকমিশনার। এ সময় শ্রিংলা বলেন, বিগত ৯ বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বেড়েছে। বিশেষ করে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা বেড়েছে। তিস্তা চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ও দুই প্রতিবেশীর স্বার্থরক্ষা করেই তিস্তা চুক্তি সই হবে। শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় সহায়তা করে আসছে ভারত। সে কারণে প্রতি বছর ভারত প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপ প্রদান করছে। এছাড়া সম্প্রতি সময়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের দ্বিগুণ হারে ভিসা দিচ্ছে ভারত। বিগত ৯ বছরে বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্কে কি কি উন্নতি হয়েছে সে বিষয়ে সংলাপে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনার বিভিন্ন পর্বে অংশ নেন উভয় দেশের সাংবাদিকরা। দ্বিতীয় দিনের আলোচনার মূল বিষয় ছিল অতীতের সম্পর্ক ও আগামীদিনের সম্ভাবনা নিয়ে। মঙ্গলবার মূল পর্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির। আলোচনায় আরও অংশ নেন এশিয়ান এজ পত্রিকার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বদরুল আহসান, ভারতের টেলিগ্রাফ পত্রিকার রাজনীতি ও নীতি বিভাগের ব্যুরো চীফ দেবোদিপ পুরোহিত। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। সংলাপের বিভিন্ন পর্বে ভারতের সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দিল্লী প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট গৌতম লাহিড়ী, টেলিগ্রাফ পত্রিকার সম্পাদক জয়ন্ত রায় চৌধুরী, ক্যাচ নিউজ পত্রিকার সাবেক সম্পাদক ভারত ভূষণ, টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকার সহকারী সম্পাদক মহুয়া চট্টোপাধ্যয়, আনন্দবাজার পত্রিকার সহকারী সম্পাদক অনামিত্র চ্যাটার্জি প্রমুখ। বাংলাদেশের সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস এ্যাসোসিয়েশনস, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) প্রেসিডেন্ট রেজাউল করিম লোটাস, ডিক্যাবের সাবেক সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টি, চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের কারেন্ট এ্যাফেয়ার্স বিভাগের সম্পাদক রাহুল রাহা। এশিয়ান এজ পত্রিকার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বদরুল আহসান বলেন, বাংলাদেশ এখন রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলা করছে। তবে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় ভারত ও চীনের সমর্থন জোরালোভাবে পায়নি। বিশেষ করে জাতিসংঘে এই দুই দেশের সমর্থন জোরালোভাবে পায়নি বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে ভারত। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফেরাতে ভারত ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়া তিস্তার পানি সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য আহ্বান জানান বদরুল আহসান। ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট ল এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ তিন দিনব্যাপী এই মিডিয়া সংলাপের আয়োজন করছে। তিন দিনের এই সংলাপে ভারতের নয়াদিল্লী ও কলকাতা থেকে ২৩ জন সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট যোগ দিয়েছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের গবেষক, কূটনীতিক সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্টরা অংশ নিয়েছেন। ভারতীয় সাংবাদিকরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এছাড়া একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান। আজ বুধবার তিন দিনব্যাপী এই সংলাপ শেষ হবে।
×