ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চিকিৎসা নয়, মৃত্যুর অনুমতি চাই একটি পরিবার

প্রকাশিত: ০১:০২, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

চিকিৎসা নয়, মৃত্যুর অনুমতি চাই একটি পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট ॥ মানুষের কষ্টে সীমা-পরিসীমা থাকে। লালমনিরহাটের এক অসহায় পরিবারের কষ্টে কোন শেষ নেই। তাদের কষ্ট দেখে আশপাশের মানুষও কাঁদে। একই পরিবারের উপার্জনক্ষম ৩ জন সদস্য নানা জটিল-কঠিন রোগে আক্রান্ত। তাদের খোঁজ খবর কেউ রাখেন না। অর্থাভাবে তাদের সঠিক চিকিৎসা করতে পারি না। তাই এবার মৃত্যুর অনুমতি চাই বলে দাবি করেছে ওই পরিবারটি। জানা যায়, জেলা হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়ন (মিলন বাজারের পাশে) পুর্ব সাড়ডুবি এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডে মৃত আমানতুল্লাহর ছেলে আজিমউদ্দিন (৭৫)। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আগে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে কোন রকম সংসার চালিয়েছেন। কিন্তু বয়স বেশী হওয়ায় এখন আর কেউ তাকে কাজে নেন না। এখন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বড় ছেলে আবদুর রাজ্জাক মিন্টু (৪০)। সে ঢাকায় ভাড়ায় রিক্সা চালিয়ে সংসার চালায়। ছোট ছেলে আশরাফুল আলম (৩৩) দীর্ঘদিন যাবত মাথার সমস্যায় ভুগছে। বড় ছেলে রিক্সাচালক আবদুর রাজ্জাক মিন্টুর ২ টি ছেলে সাইফুর রহমান (১৩) জন্ম থেকে সব সময় চিৎকার করে, ঘাড় নারে, মাটিতে গড়াগড়ি করে, কিছুই খেতে চায়না। আর এক ছেলে রহমত (৫) চোখের সমস্যায় এক দিকে তাকিয়ে থাকে। ৩ শতক জমির উপর জীর্ণশীর্ণ ভাঙ্গা চালায় পরিবারের ৮ সদস্য নিয়ে তাদের বসবাস। স্থানীয় চেয়ারম্যান/ইউপি সদস্য রাখেনা তাদের কোন খোঁজ খবর। পায়নি সরকারি ভাবে সাহায্য সহযোগিতা। আজিমউদ্দিন অশ্র“সিক্ত নয়নে বলেন, বাবারে আমাদের বেঁচে থেকে কোন লাভ নেই। এতো কষ্টের চাইতে মরে যাওয়াই অনেক ভালো। অসুস্থ ৩ জনের চিকিৎসা করা তো দুরের কথা, ডাক্তারকে ভিজিট দিব সে টাকাই তো আমার নেই। বড় ছেলে মিন্টু অন্যের রিক্সা ভাড়ায় চালিয়ে সামান্য যে টাকা আয় করে তা দিয়ে সংসারই চলেনা। পড়নের কাপড় নেই। এরপরেও আমি তাদের চিকিৎসা করব কিভাবে? তিনি আরও বলেন, আল্লাহ্ আমাদের একমাত্র ভরসা, চিকিৎসা তো করতে পারি না, তাই এবার মৃত্যুর অনুমতি চাই। এ ব্যাপারে বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মাসুম আলী জানান, ওই পরিবারটিকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। কিন্তু পারিবারের ৩ জন সদস্য অসুস্থ ফলে তাদের চিকৎসার জন্য সরকার বা বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
×