ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুর আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

শিশুর আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা

পরিবারে বাবা-মা যখন তাদের নিজস্ব আবেগ, অনুভূতিগুলো স্বাভাবিকভাবে সামলে নিতে পারেন না, তখন তাদের শিশুদেরও সেটা শেখাতে ব্যর্থ হন। প্রতিদিনই একটু সচেতন হলে আমরা আমাদের শিশুকে আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা পরিচর্চায় সাহায্য করতে পারি। প্রতিদিনের ছোটখাটো ঘটনায় যখনই শিশু আবেগীয় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে, তখন সে প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব দেয়া, তার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করা, তার প্রয়োজনকে স্বীকৃতি দেয়া এবং তার প্রতি মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন বেশিরভাগ সময় বাবা-মায়েরা ভবিষ্যত সাফল্যের জন্য শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক বুদ্ধিমত্তাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে। খুব কম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা শিক্ষা বা পরিচর্যার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। শিশুর জন্য এটি খুবই জরুরী। বিশ্বের সকল উন্নত দেশেই শিশুর আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা পরিচর্যার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। পিতা-মাতা থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা এ ব্যপারে শিশুদের প্রতি খুবই মনোযোগী থাকেন। আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা কী? নিজস্ব আবেগ, অনুভূতিগুলো বোঝার সঙ্গে সঙ্গে অন্যের আবেগগুলো বোঝা, প্রকাশ করা, পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজের আবেগ অনুভূতির প্রতি প্রতিক্রিয়া জানানো এবং অন্যের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের দক্ষতাগুলোই হলো আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা। অনেক সময় দেখা যায়, অনেক বেশি বুদ্ধিমান মানুষেরও আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা থাকে না। আর সেজন্যই সামাজিক সম্পর্কগুলো ঠিকমতো লালন করা হয় না। অভিভাবক হিসেবে আমরা চাই, আমাদের সন্তান নিজেদের ব্যাপারে চিন্তা করতে শিখুক, আবার অন্যদের বুঝতে শিখুক। তাদের বিবেচনাবোধ, সৌজন্যবোধ ও মূল্যবোধ তৈরি হোক। ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য করতে শিখুক। মূল্যবোধ আর সুস্থ-স্বাভাবিক সম্পর্কে বাঁচুক। পৃথিবীতে যেন তারা মেধা আর মননের সর্বোচ্চ স্বাক্ষর রাখতে পারে। আর এসব অর্জনের জন্য নিয়মানুবর্তিতার সঙ্গে সঙ্গে আবেগীয় বুদ্ধিমত্তার পরিচর্যা প্রয়োজন। অভিভাবক হিসেবে সন্তানদের সঠিক দিক-নির্দেশনার মাধ্যমে তাদের আবেগের সুস্থ স্বাভাবিক বহির্প্রকাশ ও নিয়ন্ত্রণের চর্চাকে প্রাধান্য দেয়া প্রয়োজন। আর এজন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত মানসিক যতœ, যা তাদের নিজেদের বুঝতে ও অন্যদের বুঝতে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী অন্যদের প্রতি আচরণ করতে সাহায্য করবে। পরিবারে বাবা-মা যখন তাদের নিজস্ব আবেগ, অনুভূতিগুলো স্বাভাবিকভাবে সামলে নিতে পারেন না, তখন তাদের শিশুদেরকেও সেটা শেখাতে ব্যর্থ হন। প্রতিদিনই একটু সচেতন হলে আমরা আমাদের শিশুকে আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা পরিচর্চায় সাহায্য করতে পারি। প্রতিদিনের ছোটখাটো ঘটনায় যখনই শিশু আবেগীয় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে, তখন সে প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব দেয়া, তার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করা, তার প্রয়োজনকে স্বীকৃতি দেয়া এবং তার প্রতি মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ শিশুর অনুভূতির প্রতি সহানুভূতি (ঝুসঢ়ধঃযু) দেখানো দরকার। শিশুর আবেগীয় প্রতিক্রিয়া স্বীকৃতি দেয়ার পর বাস্তবে তা প্রয়োগ করে সমস্যা সমাধানের দিকে পরিচালিত করায় তাকে সহায়তা দেয়া এবং আবেগীয়ভাবে তার সঙ্গে থাকা একান্ত প্রয়োজন। যখন একটি শিশু তার আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা পরিচর্চা করতে সক্ষম হবে তখনই সে সুস্থ-স্বাভাবিক মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী হবে। তারানা আনিস চাইল্ড ফিজিওলজিস্ট এ্যাপোলো হাসপাতাল, ঢাকা
×