ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টার্কি মুরগির কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন শেকৃবি শিক্ষার্থীর

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

টার্কি মুরগির কৃত্রিম  প্রজনন কৌশল  উদ্ভাবন শেকৃবি শিক্ষার্থীর

বশিরুল ইসলাম ॥ টার্কি মুরগির কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি শিক্ষার্থী শেখ মোহাম্মদ শাহীন। যা দেশে প্রথম। এ ব্যাপারে শাহীন জানান, কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে একটা পুরুষ টার্কির সিমেন দিয়ে ৮ থেকে ১০টি স্ত্রী টার্কিকে দেয়া যায়। ফলে অল্প সময়ে দ্রুত টার্কির বৃদ্ধি বাড়াবে, কমাবে উৎপাদন খরচ। তাছাড়া প্রোটিনের নতুন আরেকটি উৎস হিসেবে টার্কি মুরগির হতে পারে বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত। তার এই সাফল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ অভিনন্দন জানিয়েছেন। শেরেবাংলা কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের মেডিসিন এ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কে বি এম সাইফুল ইসলাম বলেন, শাহীনের এ আবিষ্কার টার্কি উদ্যোক্তাদের জন্য এক মাইলফলক। যা দেশে অথর্নীতিতে ব্যাপক অবদান রাখবে। তাছাড়া প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণে এ আবিষ্কার আগামী দিনের টার্কি উৎপাদন ব্যবস্থায় সাফল্য বয়ে নিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। শেখ মোহাম্মদ শাহীন জানান, টার্কি মুরগির উৎপাদনের জন্য বাজার থেকে তিনি ৮টি ডিম ২ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেন। এ ৮টি ডিম থেকে ৫টি বাচ্চা দিয়েছে। আর তিনটি ডিম নষ্ট হয়। কেন এ ডিম নষ্ট হলো এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন খামারির সঙ্গে কথা বলেন। তিনি নিজেই যখন একজন ভেটেরিনারিয়ান তাই তিনি তার শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় কয়েক মাস ধরে সমস্যা সমাধানে নিরলস গবেষণা করে এ শীত মৌসুমে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে টার্কি মুরগির উৎপাদন কৌশল উদ্ভাবন করেন। টার্কির কৃত্রিম প্রজনন কেন দরকার এ ব্যাপারে শাহীন বলেন, পুরুষ টার্কি স্ত্রী টার্কির দ্বিগুণের বেশি ওজন হয়ে থাকে, সেজন্য এরা ভাল করে মেটিং করতে পারে না। ফলে স্ত্রী টার্কি থেকে পাওয়া ডিম থেকে বাচ্চা পাওয়া যায় না। এছাড়া স্ত্রী টার্কি ছোট হওয়ার কারণে মেটিং এর সময় এরা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ফলে খামারিরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। টার্কির কৃত্রিম প্রজনন করা হলে সহজে এসব থেকে রক্ষা পাবে স্ত্রী টার্কি। ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং খরচও কম লাগবে। ড. কে বি এম সাইফুল ইসলাম আরও জানান, টার্কি মেলিয়াগ্রিডিডিই পরিবারের এক ধরনের বড় আকৃতির পাখি বিশেষ। এগুলো দেখতে মুরগির বাচ্চার মতো হলেও তুলনামূলকভাবে অনেক বড়। বিশ্বের সর্বত্র টার্কি গৃহপালিত পাখিরূপে লালন-পালন করা হয়। এরা পরিবেশের সঙ্গে দ্রুত নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। পালনের জন্য উন্নত অবকাঠামো দরকার হয় না। এরা প্রতিদিন মোট খাদ্যের ৫০-৬০ ভাগ নরম ঘাস খায়। তাই খাবার খরচ কম। রোগবালাই কম বলে চিকিৎসা খরচ কম। মাংস উৎপাদনের দিক থেকে খুবই ভাল। ৬ মাস বয়সে ৫ থেকে ৬ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। পাখির মাংস হিসেবে এটা মজাদার এবং কম চর্বিযুক্ত। তাই গরু বা খাসির মাংসের বিকল্প হতে পারে। আমাদের দেশে অনেকের ব্রয়লার মুরগির মাংসের ওপর অনীহা আছে। তাদের জন্য এটা হতে পারে প্রিয় খাবার।
×