ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন শেষে ফিরেছে ‘আলী হায়দার’ ও ‘নির্মূল’

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

 জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন শেষে ফিরেছে ‘আলী হায়দার’ ও ‘নির্মূল’

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম ॥ দীর্ঘ চার বছর ভূ-মধ্যসাগরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘আলী হায়দার’ ও ‘নির্মূল’ লেবাননে সফলভাবে দায়িত্ব পালন শেষে দেশে ফিরেছে। রবিবার সকালে জাহাজ দুইটি চট্টগ্রাম নেভাল জেটিতে আগমন করলে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয়। কমান্ডার (চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল) রিয়ার এডমিরাল এম আবু আশরাফসহ চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডারগণসহ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও জাহাজে আগত কর্মকর্তা ও নাবিকদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। নৌবাহিনী জানিয়েছে, ভূ-মধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্ক ফোর্সের আওতায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে ২০১৪ সালের মে মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আলী হায়দার ও নির্মূল লেবানন যায়। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যোগদানের পর থেকে জাহাজ দুটি লেবানিজ জলসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের ওপর নজরদারি, দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবানিজ নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়। লেবাননে অবস্থানকালে গত চার বছরে জাহাজ দুটিতে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১১৪০ জন সদস্য অত্যন্ত দক্ষতা, পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। লেবাননের স্থিতিশীলতা ও জলসীমার নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ব্যানকন-৮ এর মেডেল প্যারেডে উক্ত জাহাজ দুটির ২৭০ জন নৌ সদস্যকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক দেয়া হয়। জাহাজ দুটি আন্তর্জাতিক মেরিটাইম টাস্কফোর্সের অধীনে উন্নত বিশ্বের অন্যান্য ৫টি দেশের জাহাজসমূহের সঙ্গে নিয়মিত শান্তিরক্ষা টহল ও বিভিন্ন আভিযানিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। এ সব অভিযান থেকে অন্যান্য দেশের নৌবাহিনী স¤পর্কে ধারণা লাভ করে। সমুদ্র মহড়ায় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া গত চার বছর জাহাজ দুইটি ভূ-মধ্যসাগরে সাফল্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করেছে। মিশন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানও রেখেছে। উপমহাদেশের মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীই প্রথম এ ধরনের দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হলো। অন্য চারটি দেশের নৌবাহিনী সদস্যরা দেশটিতে কাজ করলেও তাদের কোন যুদ্ধ জাহাজ ছিল না। এক মাত্র বাংলাদেশেরই দু’টি যুদ্ধ জাহাজ এই মিশনে কাজ করেছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সফলভাবে দায়িত্ব পালন শেষে বানৌজা আলী হায়দার ও নির্মূল গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা করে। প্রায় ৭ হাজার ন্যটিক্যাল মাইল (প্রায় ১৪ হাজার কি.মি.) সমুদ্রপথ অতিক্রম করে দেশে ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম এসে পৌঁছায়। এর আগে গত ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর আলী হায়দার ও নির্মূলের প্রতিস্থাপক হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিজয়কে লেবাননে নিয়োজিত করা হয়েছে।
×