স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বেশিরভাগ বাড়ির মালিকই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নক্সা মেনে স্থাপনা নির্মাণ করেন না বলে অভিযোগ করেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এ থেকে উত্তরণের জন্য রাজউককে ইমারত নির্মাণবিধি মেনে বিল্ডিং বানাচ্ছেন কিনা তা দেখতে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। একইসঙ্গে ভূমিকম্পের ক্ষতি মোকাবিলায় সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। রবিবার রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে রাজউকের আরবান রিসিলেন্ড প্রজেক্ট আয়োজিত ‘রিসেন্ট আর্থকুয়েক রিলেটেড রিসার্জ এ্যান্ড একটিভিটিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে কি-নোট উপস্থাপন করেন ইউআরপি প্রোজেক্টের (রাজউক অংশ) পরিচালক আব্দুল লতিফ হেলালি, বুয়েটের অধ্যাপক রাকিবুল হাসান, অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারি। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি জামিলুর রেজা চৌধুরী, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রতিনিধি স্বর্ণা কাজী, ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট রাজউক সদস্য শামসুদ্দীন আহমেদ প্রমুখ। মন্ত্রী বলেন, কোন পূর্বাভাস না পাওয়ায় ভূমিকম্প বিষয়ে সচেতন না হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। মন্ত্রী আরও বলেন, বেশিরভাগ ভবণ নির্মাণে রাজউকের অনুমোদিত নক্সা মানছেন না নির্মাণকারীরা। যে কারণে রাজধানীতে ভূমিকম্প হলে ঝুঁকি ও ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এজন্য রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, ভূমিকম্পে ক্ষতি মোকাবিলায় যারা বিল্ডিং বানাচ্ছেন, তাদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরী। পাশাপাশি তারা ইমারত নির্মাণবিধি মেনে বিল্ডিং বানাচ্ছেন কিনা, তা তদারকি করা দরকার। ভূমিকম্পের দিক থেকে আমাদের দেশ অনেক ঝুঁকিতে আছে বলে বিশেষজ্ঞরা পূর্বাভাস দিয়েছেন। ইমারত নির্মাণ আইন মেনে না চলায় ভূমিকম্প হলে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাবে। তাই সবার জানমালের কথা চিন্তা করে সঠিকভাবে নিয়ম মেনে বিল্ডিং তৈরি করা উচিত। এসব দুর্যোগ মোকাবিলা বা দুর্যোগে ক্ষতি এড়াতে শুধু সরকার বা আইন করেই সবকিছু ঠিক করা সম্ভব না। এজন্য সবাইকেই সচেতন হতে হবে। সেমিনারে রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুর রহমান বলেন, রাজউক পরিকল্পিত নগরী গড়ে তুলতে চেষ্টা করছে। অন্যদিকে ভূমিকম্পের ঝুঁকি-ক্ষতির পরিমাণ কমাতে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। একইসঙ্গে ডিজিটাল বিল্ডিং প্ল্যান পাস করান ও রিচার্জ- ট্রেনিং বিল্ডিং গড়ে তোলা হবে। অনুষ্ঠানে স্থপতি মোবাশ্বর হোসেন বলেন, ভূমিকম্প হলে আমাদের করণীয় কী হবে, এ বিষয়ে ভীত আমি। কারণ ঢাকা শহরে যেভাবে গ্যাস লাইন আছে, বিদ্যুতের লাইন আছে, তাতে একবার ভূমিকম্প হলে এগুলোর কী অবস্থা দাঁড়াবে, তা নিয়ে ভয়ে থাকি সবসময়। প্রতিটি বাসায় বিদ্যুতের তারে একটা মেন সুইচ আছে। তার মাধ্যমে বিদ্যুত বন্ধ করা যেতে পারে কিন্তু গ্যাসের লাইন বন্ধ করার কোন সুইচ নেই। একবার সিদ্ধান্ত হয়েছিল গ্যাসের লাইনে সেন্সর লাগানো হবে। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এগুলোর বিষয়ে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।