ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে আলোচনা

বিএনপি রাজনীতির বিষবৃক্ষ ॥ ইনু

প্রকাশিত: ০৫:১২, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বিএনপি রাজনীতির বিষবৃক্ষ ॥ ইনু

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিএনপিকে রাজনীতির বিষবৃক্ষ আখ্যায়িত করে বলেছেন, রাজনীতির বিষবৃক্ষ নিয়ে গণতন্ত্রের বাগান সাজানো যায় না। নির্বাচন নয়, বিএনপির এজেন্ডাই হচ্ছে মা-ছেলের বিচার ঠেকানো, সহায়ক সরকারের নামে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র। তাই আগামী নির্বাচনে দেশবাসীকে ব্যালটের মাধ্যমে বিএনপি নামক বিষবৃক্ষকে ছুঁড়ে ফেলতে হবে, দলটিকে রাজনৈতিকভাবে বর্জন ও বিদায় জানাতে হবে। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে রবিবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনায় অংশ নেন জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সাইমুন সারওয়ার কমল, এম এ মালেক, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল মতিন, মকবুল হোসেন, জাতীয় পার্টির জিয়াউল হক মৃধা প্রমুখ। আলোচনায় অংশ নিয়ে জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, বিস্ময়কর গতিতে বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই পথ মসৃণ নয়, বরং কণ্টকাকীর্ণ ছিল। স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াত উন্নয়নের পথে বাধা দিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের শঙ্কা, দেশে উন্নয়ন ও শাস্তির ধারা অব্যাহত থাকবে, নাকি বাংলাদেশে আবারও অগ্নিসন্ত্রাস, জঙ্গী-সন্ত্রাস, বাংলা ভাইয়ের যুগ ফিরে আসবে কি না। আবার শহীদ মিনার ভাঙ্গা হবে কি না, আদালতে বোমা মেরে বিচারক মেরে ফেলা হবে কিনা। আবারও কী ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, হাওয়া ভবনের যুগ ফিরে আসবে কি না। এ নিয়ে জনগণে শঙ্কা রয়েই গেছে। খালেদা জিয়া যতই ভোল পাল্টাক, নির্বাচন ও গণতন্ত্রের মুখোশ পরুক, তিনি বদলাননি। নির্বাচন বর্জন করলে জঙ্গী তা-ব করে, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে। তিনি বলেন, বিএনপি হচ্ছে রাজনীতির বিষবৃক্ষ। সামরিক তন্ত্র, হত্যা-খুন-ষড়যন্ত্রের সংমিশ্রনে জিয়াউর রহমান বিষবৃক্ষটি রোপণ করেছেন। আর খালেদা জিয়া তাতে পানি দিয়ে বড় করেছেন। তাই বিষবৃক্ষ নিয়ে গণতন্ত্রের বাগান সাজানো যায় না। কাউকে জোর করে নির্বাচনে আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে না, আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হচ্ছে। এই পাঁচটি বছর ধরেই বিএনপি সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আর নির্বাচন দর কাষাকষির বিষয় নয়। অন্তর্ভূক্তির নির্বাচনের নামে রাজনীতির বিষবৃক্ষকে সুযোগ দেয়া হতে পারে না। নির্বাচন বিএনপির নির্বাচনী এজেন্ডা না। বিএনপির এজেন্ডা মা-ছেলের বিচার বন্ধ করা, পুড়িয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যার বিচার বন্ধ করা। এজন্যই তারা অসাংবিধানিক সহায়ক সরকারের কথা বলছে। নির্বাচন বানচালের উছিলাই হচ্ছে সহায়ক সরকার। আর খালেদা জিয়ার সাজাকে কেন্দ্র করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির আজ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। দেশবাসীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যদি গণতন্ত্র চান তবে রাজনীতির বিষবৃক্ষ ছুঁড়ে ফেলতে হবে। একাত্তর থেকে আজ পর্যন্ত যত খুন হয়েছে, তার সঙ্গে জড়িতদের আস্তানা হচ্ছে বিএনপি। সাম্প্রদায়িক জঙ্গী গোষ্ঠীর আশ্রয়স্থল। তাই বিএনপি যতদিন থাকবে ততদিন সাম্প্রদায়িকতার জন্ম দিয়েই যাবে। বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে রাখতে হবে এবং গণতন্ত্রকে সংবিধানের পথে রাখতে হলে কোন দর কষাকষির পথে না গিয়ে দুর্নীতিবাজ, খুনীদের বিচার করতে হবে, বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে বিদায় ও বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সঠিক সময়ে নির্বাচন করতে হবে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক বলেন, নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশে অগ্নিসন্ত্রাস চালায়, গণতন্ত্রকে হুমকির দিকে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শক্তহাতে প্রধানমন্ত্রী অগ্নিসন্ত্রাস ও জঙ্গী হামলার সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশকে দুর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় পার্টির জিয়াউল হক মৃধা বলেন, বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৫ বছরের সাজার রায় ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। ক্ষমতায় থাকতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর জেল খাটিয়েছেন। এখন এতিমের টাকা মেরে খাওয়ায় তাঁর সাজা হয়েছে। এই সাজার রায় নিয়ে বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাসের পথে না গিয়ে হোমিওপ্যাথিক কর্মসূচী দেয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানাই।
×