ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আনসারুল্লাহ বাংলা টিম চলে পাকিস্তানের আল কায়েদার নির্দেশে

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

 আনসারুল্লাহ বাংলা টিম চলে পাকিস্তানের আল কায়েদার নির্দেশে

শংকর কুমার দে ॥ পাকিস্তানের আল-কায়েদার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদার অনুসারী বাংলাদেশের জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি)। পাকিস্তানের জঙ্গী সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে বর্তমানে এবিটির প্রধান দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরেই পলাতক সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া। তার নেতৃত্বে অন্তত ১২ দুর্ধর্ষ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য আত্মগোপনে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। তাদের বার বার অবস্থান পরিবর্তনের কৌশলের কাছে মার খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চৌকস কর্মকর্তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করার পরও আনসারুল্লাহ বাংলা টিম জঙ্গী সংগঠনের মাথা পরিচিত এই জঙ্গী নেতাকে ধরতে অসংখ্যবার অভিযান চালানো হয়েছে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায়। কিন্তু তার টিকেটিও ছোঁয়া যায়নি। ধূর্ত প্রকৃতির জঙ্গী নেতা গ্রেফতার এড়িয়ে চলতে সব সময় নিত্য-নতুন কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। মেজর জিয়া কারাগারের বাইরে আত্মগোপনে থাকা মানে যে কোন সময় সে এই জঙ্গী সংগঠনটিকে সংগঠিত করে অঘটন ঘটাতে পারে। রবিবার রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে র‌্যাবের হাতে আটক হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা আনসার আল ইসলামের সক্রিয় দুই সক্রিয় সদস্য শাহাদাত হোসেন সজীব ওরফে নাঈম ও ইসতিয়াক আহমেদ ওরফে রবিন। দুই জঙ্গীকে আটক করে পলাতক মেজর জিয়ার সন্ধানের বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত বছর একাধিকবার গণমাধ্যমে বলেন, মেজর জিয়া নজরদারিতে রয়েছে। তখন তার এ বক্তব্য নিয়ে অনেকটাই আগ্রহ তৈরি হয় গণমাধ্যম কর্মীদের। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থা কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন সংস্থাই চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াকে আটক কিংবা গ্রেফতারের কথা স্বীকার করেনি। পরে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায় মেজর জিয়া অধরা। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, মেজর জিয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে হালনাগাদ কোন তথ্য নেই। সে হয়ত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ থেকে বিরত অথবা দেশত্যাগ করেছে। গত বছরের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান এবং এর কদিন পর কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় নব্য জেএমবির সদস্যরা পৃথক ২টি জঙ্গী হামলা চালায়। এতে তামিম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন নব্য ধারার জেএমবি সদস্যরা দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনায় চলে আসে। তখন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ঘোষণা দিয়েছিল তারাও বড় ধরনের জঙ্গী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু ঘোষণা দিয়েও এবিটি সদস্যরা আর হামলা করতে পারেনি। তার আগেই তাদের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। এতে এবিটির সাংগঠনিক কাঠামো অনেকটাই ভেঙ্গে পড়ে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, গত রবিবারও র‌্যাব-১১ এর হাতে আটক দুই জঙ্গীর মধ্যে সজীব আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের মিডিয়া শাখায় কর্মরত থাকা রবিন সামরিক শাখার সক্রিয় কর্মী বলে স্বীকার করেছে।
×