ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গলাচিপায় স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি ॥ আটক দুজনের পরিচয় মিলেছে

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গলাচিপায় স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি ॥ আটক দুজনের পরিচয় মিলেছে

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা শহরের সাহসী জনতা রূখে দাঁড়ালো ডাকাতদের বিরুদ্ধে। একের পর এক বোমার বিস্ফোরণ আর গুলি উপেক্ষা করে পাকড়াও করল দুই ডাকাতকে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে দুই ডাকাতের পরিচয়ও মিলেছে। ডাকাতদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে অন্তত ১৫-১৬ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সাত জনকে গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গণপিটুনিতে আহত ডাকাতদ্বয়কেও চিকিৎসার জন্য পুলিশ প্রহরায় বরিশাল পাঠানো হয়েছে। পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন ওই দুই ডাকাত হচ্ছে, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের চান মিয়ার ছেলে কিবরিয়া (৩৮) ও পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার মোবারক আলীর ছেলে কামরুল ইসলাম কামাল (৪৫)। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুই ডাকাতের বিরুদ্ধে বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন থানায় এক ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে। তারা কুখ্যাত এবং পেশাদার ডাকাত। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা দলের কয়েকজন সঙ্গীর নাম-ঠিকানা জানিয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ এখনই সে তথ্য প্রকাশ করতে চাইছে না। চাঞ্চল্যকর এ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে শনিবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে গলাচিপা উপজেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র স্বর্ণকার পট্টির ‘মা স্বর্ণ শিল্পালয়’ নামের স্বর্ণের দোকানে। দোকানটির অবস্থান থানা থেকে মাত্র তিন শ’ গজ দূরত্বে। ঘটনার সময়ে দোকানটি থেকে মাত্র দু’ শ’ গজ পূর্বে পৌরমঞ্চ চত্বরে পুলিশের একটি টহল টিমও ছিল। কিন্তু পুলিশ আসার আগেই স্থানীয় জনতা ডাকাতদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসে। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, অন্তত ৫ জন সশস্ত্র ডাকাত মা স্বর্ণ শিল্পালয়ে ঢুকে প্রথমেই অস্ত্রের মুখে দোকানের মালিক নির্মল কর্মকারকে জিম্মি করে এবং বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে দেয়। এ সময় আরও কয়েকজন ডাকাত সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। অস্ত্রের ভয় উপেক্ষা করে নির্মল কর্মকার ডাকচিৎকার দিলে ডাকাতরা তাকে রামদা দিয়ে কোপ দেয়। এরপর ডাকাতরা সিন্দুক ও শোকেস ভেঙ্গে স্বর্ণালঙ্কার লুট করে। এরইমধ্যে আশেপাশের শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ডাকচিৎকার দিয়ে এগিয়ে আসে। ডাকাতরা একের পর এক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। ততক্ষণে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু তার আগেই সাহসী জনতা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুই ডাকাতকে ধরে ফেলে। পুলিশ ঘটনাস্থলসহ আশেপাশের এলাকা থেকে ডাকাতদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল, একটি মোবাইল ফোন, ছয় রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল ও ১৪ টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করেছে। গলাচিপা শহর থেকে বাইরে বের হওয়ার পথগুলোতে রাতভর চেষ্টা করেও পুলিশ আর কোন ডাকাতকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
×