ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের উন্নয়ন ভাবনায় এনজিওর অবদান

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশের উন্নয়ন ভাবনায় এনজিওর অবদান

(গতকালের পর) আবার মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তীকালে শরণার্থীরা যখন ভারত থেকে ফিরে আসে, তখন জরুরী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকা-ে অংশ নেন। যুদ্ধে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় ‘বার্স’ নামক সংস্থার মাধ্যমে পঁয়ত্রিশ হাজার ঘর তৈরি করেছিলেন। জার্মানি থেকে নিজেদের উদ্যোগে ১২টি জাহাজ আনা হয়েছিল- এগুলোর মাধ্যমে কোস্টাল এরিয়া থেকে খাদ্যশস্য দেশের অভ্যন্তরে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। তিনি তার ‘উন্নয়ন’ ভাবনায় যথার্থই চিন্তা করেছিলেন যে, রিলিফের ওপর নির্ভর করলে দেশের উন্নতি সম্ভব নয়। কেননা এতে করে মানুষ কর্মবিমুখ হয়ে পড়ে। আর তাই মানুষের ওপর কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রয়াস পরিলক্ষিত হয়। উন্নয়ন ভাবনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুশান্ত অধিকারী মন্তব্য করেছিলেন যে, ‘উন্নয়ন’ একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর কর্ম-কৌশল নির্ধারণ করা হয় সময় এবং প্রয়োজনের নিরিখে। বস্তুত মানুষের চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে সামষ্টিক অর্থনীতিতে জাতীয় আয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ভোগ ও সঞ্চয়-বিনিয়োগের মধ্যে ভারসাম্য বিধান করা জরুরী। এই ভারসাম্য থেকেই বাজার ব্যবস্থায় অদক্ষতা ও দুর্নীতি দূর করে অবশ্যই বণ্টন ব্যবস্থায় সাম্য আনয়নের জন্য কর্মসংস্থান-সৃষ্টি, মানুষের ক্রয়-ক্ষমতা বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি স্বল্প মাত্রায় রেখে অধিকসংখ্যক লোকের অংশীদারিত্বমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করা বাঞ্ছনীয় হয়ে পড়েছে। নানামুখী উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে পাবনা ও বৃহত্তর রাজশাহী জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সমিতি গঠনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের মধ্যে ৫-৬ হাজার বিভিন্ন ধরনের ইরিগেশন পাম্প সরবরাহ করেন তিনি। এমনকি আশির দশকের গোড়ার দিকে রাজশাহীতে সোলার পাম্পও ব্যবহারের উদ্যোগ নেন। আবার কক্সবাজারে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে আধুনিক ফিশিং গিয়ার সজ্জিত ১০০টিরও বেশি ইঞ্জিন বোট দিয়েছিলেন, যার মাধ্যমে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা যায়। তার এ ধরনের প্রয়াস মৎস্যখাতে জাতীয় আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রভাব রেখেছিল বলে বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁতিদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য নরসিংদী, পাবনা ও যশোর এলাকায় বিভিন্ন ধরনের সুতা, রং এবং সেমি-অটোমেটিক তাঁতযন্ত্র সরবরাহ করেন। এজন্য তাঁতিদের প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয়েছিল। আবার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বয়স্ক পুরুষ ও নারীদের জন্য শিক্ষা কর্মসূচী গ্রহণ করেন তিনি। এই শিক্ষা কর্মসূচীর আওতায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড গ্রহণ করেছিলেন। নোয়াখাখালীতে স্বাস্থ্যখাতের সেবার মান উন্নয়নে ইন্টিগ্রেটেড হেলথ প্রোগ্রাম গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর প্রকল্পসমূহ সত্তর আর আশির দশকের মাঝামাঝি গৃহীত পদক্ষেপসমূহ ছিল মনোসেক্টরাল এবং ক্যাপিটাল ইনটেনসিভ। তবে এদেশে লেবার ইনটেনসিভ উন্নয়নে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া বাঞ্ছনীয়। তিনি সমবায় সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছিলেন, সমবায় পদ্ধতি সঠিকভাবে কাজ করেনি। পাশাপাশি হতদরিদ্রদের জন্য বিভিন্ন বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতা-সৃষ্টির প্রয়াস গ্রহণ করেন। একজন কর্ম-উদ্যোমী পুরুষ, যিনি নিজের কর্মস্পৃহায় সমাজের অনগ্রসর মানুষকে সামনের দিকে এগিয়ে-নেয়ার প্রয়াসে আলোকবর্তিকা দেখাতে সচেষ্ট ছিলেন। তাঁর এই কর্মকান্ড প্রভাব রাখে মানুষকে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করার ক্ষেত্রে। দেখা যায় যে, সুশান্ত অধিকারী তার কর্মকান্ড নির্ধারিত গন্ডিতে সীমাবদ্ধ রাখেননি। সময়ের বিবর্তনে সামাজিক উন্নয়ন আর অর্থনৈতিক ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যুগোপযোগী কর্মসূচী গ্রহণ করেছিলেনও। এখানেই সুশান্ত অধিকারীর ভিন্নতার ছাপ রেখেছে। তিনি তাঁর বিস্তারিত সাক্ষাতকারে সে সময় প্রচলিত মাইক্রো ক্রেডিটের মাধ্যমে কীভাবে জনগণকে শোষিত করা হচ্ছিল, তার বিস্তৃত বিবরণ তুলে ধরেছিলেন। তিনি যথার্থই মন্তব্য করেছিলেন যে, এমন ক্রেডিট পদ্ধতির ব্যবস্থা করা দরকার, যার ভিত্তি হবে ন্যায্যতা আর সেটি জনগণ যাতে সহজে বহন করতে পারে। এ জন্যই জনকল্যাণকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন। এক শ্রেণীর তথাকথিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, যারা আসলে কুশীলব হিসেবে কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন- সকল নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বরং ড. ইউনূসের অন্যায়কে ন্যায় বলে অভিহিত করে জনগণকে ধোঁকা দিয়েছিলেন। সুশান্ত অধিকারীর প্রচন্ড বিশ্বাস ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের ওপর। আর তাই তো দুর্যোগে এদেশের মানুষ যেভাবে কষ্ট সহ্য করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা করে থাকে, সে-ব্যাপারে আলোকপাত করেছিলেন। এ ব্যাপারে নাগরিক সমাজের আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করা দরকার। অসাম্প্রদায়িকতার কারণসমূহ যথার্থই তিনি চিহ্নিত করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক দরিদ্র (অবশ্য বর্তমানে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে), অশিক্ষিত এবং ভাগ্যবাদী। তিনি যথার্থই অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন, মৌলবাদীরা দারিদ্র্য, অশিক্ষা ও নিয়তির ওপর নির্ভর করার কারণেই ধর্মব্যবসায়ীরা নানামুখী ষড়যন্ত্রে অংশ নিচ্ছে। তিনি অবশ্য মৌলবাদ উৎপাটনের জন্য ধর্মীয় নেতাসহ সকল ওপিনিয়ন লিডারদের কাছে এনজিও কার্যক্রম ভালভাবে ব্যাখ্যা করার বিষয়ে প্রস্তাব রেখেছিলেন। তার এই প্রস্তাবনায় অবশ্য সময়ের বিবর্তনে কিছুটা পরিবর্তন ঘটেছে। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, এখন ধনিক শ্রেণী ও শিক্ষিত পরিবারের ছেলে-মেয়েরা জঙ্গীবাদে জড়াচ্ছেÑ এটি এ্যাডভেঞ্চার, গোয়েবলসীয় কায়দায় মিথ্যে তথ্য উপাত্ত দিয়ে হোমগ্রেইন নিউ জেএমবি তৈরি হয় বলে বলা হচ্ছে। এজন্যই শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, যারা জঙ্গীবাদে জড়িত করছে নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদের, প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। নচেৎ সরকারের শত প্রচেষ্টা ও জিরো টলারেন্স পদ্ধতি সত্ত্বেও সর্ষের মধ্যে যে ভূত রয়েছে, তা কীভাবে নিরাময় হবে, তা শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই বলতে পারবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ধরনের কর্মকা- পরিচালনার অভিজ্ঞতায় তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে, সেখানে ১৩টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী আছে। তাদের ভাষা, সংস্কৃতিও ভিন্ন। তিনি বিভিন্ন ট্রাইবের নেতাদের নিয়ে এ্যাডভাইজরি কাউন্সিল তৈরি করার কথা বলেছিলেন। আসলে দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে এসেছেন। তার বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি একটি মডেল তৈরি করেছি, যাতে দেখা যায়, কমিউনিটি ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কে ক্ষুদ্র বিনিয়োগে রূপান্তর করতে হবে। এজন্য স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিট ব্যাংক হিসেবে কমিউনিটি ব্যাংকিং কর্মসংস্থান ব্যাংক, বিএনএফ, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের আওতায় চালুর পদক্ষেপ গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। এর জন্য পৃথক রেগুলেটর স্থাপন করা দরকার। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কমিউনিটি ব্যাংকিং পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে সমতল ভূমি, হাওড় এলাকা, উপকূলীয় এলাকা পর্যন্ত স্থাপনের জন্য সরকার প্রধানের সুদৃষ্টি প্রত্যাশা করছি। কেননা কমিউনিটি ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ক্ষমতায়ন তৈরি করা সম্ভব। ১৯৭৩ সালে ইঊজজঝ রূপান্তরিত হয় সিসিডিবিতে। শুরুর প্রথম থেকেই প্রতিষ্ঠানটিতে মানবকল্যাণ, সামাজিক উন্নয়ন ও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ সুশান্ত অধিকারীর নেতৃত্বে গ্রহণ করা হয়েছিল। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের আত্ম উন্নয়ন এবং মানব মর্যাদার ক্ষেত্রে কোন ধরনের ঘাটতি ছিল না। যে সমস্ত ক্ষেত্রে সিসিডিবি বর্তমানে কর্মসূচী গ্রহণ করেছে সেগুলো হচ্ছেÑ ক্ষুদ্র ব্যবসা, কৃষি, পোল্ট্রি ও লাইভস্টক, মৎস্য চাষ, জমি ক্রয় ও মর্টগেজ, যোগাযোগ, চাকরি, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, বাড়ি ও অন্যান্য। এক্ষেত্রে মোট ঋণ-সংখ্যা হচ্ছে ১১২৫৪টি। আর বিতরণকৃত ঋণ হচ্ছে ৫৪৭২,৯৬,০০০ টাকা এবং গড় ঋণের হার হচ্ছে ৪১,৫৭১ (উৎস: সিসিডিবি, বার্ষিক কর্মসূচী ২০১৬-১৭)। সিসিডিবি ক্লাইমেট টেকনোলোজি পার্ক অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনার আওতায় ৫ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। কার্বন হ্রাস করার জন্য জ্ঞাত হওয়ার স্বার্থে ১৮ থেকে ২৩ মার্চ, ২০১৭ পর্যন্ত ভারতে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। ‘কম্পোজিট হেরিটেজ’-এর ওপর প্রশিক্ষণের জন্য ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সিসিডিবি-হোপ ফাউন্ডেশন ১০ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি, সাভারে রাউন্ড টেবিল মিটিং-এর আয়োজন করে। ২৫ থেকে ২৭ মে পর্যন্ত মানিকগঞ্জে সিসিডিবির কর্মকর্তাদের মধ্যে মানবিক গুণাবলীর বিকাশের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। কৃষিখাতে বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খাপ খাওয়ানোর জন্য ২২ জুন একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এছাড়া ভিডিও প্রেজেন্টেশনের ব্যবস্থা করা হয়। দেশের হতদরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অধিকাংশ এনজিও কাজ করে চলেছে। এ লক্ষ্যে পিকেএসএফ দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে দরিদ্র পরিবারসমূহের সম্পদ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি (সমৃদ্ধি)- একটি মানবকেন্দ্রিক কর্মসূচি, যার ভাবনা, পরিকল্পনা এবং উপদেশনায় রয়েছেন দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। এই সমৃদ্ধি কর্মসূচি সম্পর্কে ড. আহমদ মন্তব্য করেছেন যে, যাতে দরিদ্র মানুষ ক্ষুদ্রের বেড়াজালে আটকে না থেকে এগিয়ে যেতে পারেন, সে-রকম সুযোগ সৃষ্টি করাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। অবশ্য একই সঙ্গে সামাজিক, অর্থনৈতিক, ভৌত, পরিবেশগত বিষয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গের সঙ্গে অর্থায়নের যথাযথ সমন্বয় থাকতে হবে এবং সমৃদ্ধি কর্মসূচী এই আঙ্গিকে পরিকল্পিত এবং বিন্যস্ত একটি গতিশীল কর্মসূচী বলে ড. আহমদ মন্তব্য করেন। আগস্ট, ২০১৭ তারিখে প্রণীত পুস্তিকা অনুযায়ী ১১৪টি সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে ১৯০টি নির্ধারিত ইউনিয়নে ১৫৬টি উপজেলা তথা ৬৪টি জেলায় কর্মসূচী প্রতিপালিত হচ্ছে। সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় চলমান কার্যক্রমসমূহ হচ্ছে- স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি বিষয়ক কার্যক্রম, শিক্ষা কার্যক্রম, পরিবার উন্নয়ন পরিকল্পনা, আর্থিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, বিশেষ সঞ্চয় কার্যক্রম, আয় বর্ধনমূলক কার্যক্রম বিষয়ক প্রশিক্ষণ, যুব উন্নয়ন কার্যক্রম (যুব প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান), সৌরবিদ্যুত কার্যক্রম, বন্ধু চুলা কার্যক্রম, শত ভাগ স্যানিটেশন ও হাত ধোয়া কার্যক্রম, ঔষধি গাছ ‘বাসক’ চাষাবাদ কার্যক্রম, বসতবাড়িতে সবজি চাষ কার্যক্রম, কেঁচো সার উৎপাদন ও ব্যবহার কার্যক্রম, কৃমিনাশক ট্যাবলেট বিতরণ, ভিক্ষুক পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় জনগোষ্ঠী-পর্যায়ে উন্নয়ন কার্যক্রম, বসতবাড়ির জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে সমৃদ্ধ বাড়ি গড়া, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা কার্যক্রম, সমৃদ্ধি ওয়ার্ড সমন্বয় কমিটি গঠন ও সমৃদ্ধি কেন্দ্র স্থাপন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, বয়স্কদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচী এবং সামাজিক উন্নয়ন ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ। আসলে ‘সমৃদ্ধি’ কর্মসূচীটি দেশের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও তৃণমূল-পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে আর্থিক খাতের সংশ্লিষ্টতা বাঞ্ছনীয়। এজন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় এবং ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন। সুশান্ত অধিকারী বলেছিলেন যে, ‘শান্তির সন্ধানের পরিধি, আধ্যাত্মিক পরিতৃপ্তির গন্ডি যখন সংকীর্ণ হয়ে যায়, তখন মানুষের জীবনী শক্তি লোপ পায়। আর তাতেই শুধু একটি সমাজেরই নয়, সম্ভবত মানবসভ্যতারই সমাপ্তি ঘটে।’ আজ সুশান্ত অধিকারী আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তাঁর উপরোক্ত বক্তব্যটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, ক্লেদযুক্ত সমাজ ব্যবস্থায় মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক শ্রেণীর অতি লোভীর সৃষ্টি হয়েছে। এনজিওদের অধিকাংশই রাষ্ট্রের উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নিলেও গুটিকয়েক এনজিও সম্পর্কে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নানাবিধ জঙ্গীবাদে মদদ দেয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়ে থাকে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকও বেশকিছু এনজিওকে ব্ল্যাক লিস্টেড করেছে। কিন্তু এদের সংখ্যা হাতেগোনা। মানব উন্নয়ন সূচকের উন্নয়নে অধিকাংশ এনজিওর ভূমিকা প্রশংসনীয়। দেশের যে অগ্রযাত্রা, তা ব্যাষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছে। আর এক্ষেত্রে সামষ্টিক অর্থনীতিকে তার সুফল ভোগ করতে হচ্ছে। জলবায়ুর অভিঘাত এবং পরিবর্তনশীলতার গ্রহণযোগ্যতা, মানব পাচার রোধ, দেশীয় সংস্কৃতি কৃষ্টির বিকাশ, মুক্তিযুদ্ধ চেতনাকে ছড়িয়ে-দেয়া, অসাম্প্রদায়িক কর্মকান্ডে উদ্ভূতকরণ, হস্তশিল্প থেকে শুরু করে নানাবিধ কর্মকান্ডের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায় থেকে নগরায়ণের ক্ষেত্রে এনজিওসমূহ সব সময় দেশের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে নিরন্তর সহায়তা প্রদান করে চলেছে। তাদের এই নিরলস প্রয়াস আমাদের জন্মভূমিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে এনজিওসমূহের গুরুত্ব অপরিসীম। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সাল নাগাদ অর্জন করতে হলে সরকারী সংস্থা, এনজিও এবং বিদেশী অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা একযোগে পালন করতে হবে। এজন্য চাই সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও বাস্তবায়ন। একটি কথা না বললেই নয়, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন যদিও অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান, তবে এর কোন ভিশন, মিশন এমনকি কোন স্ট্রাটেজিক প্ল্যান নেই। দীর্ঘ মেয়াদে ভাল কাজ করতে হলে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন যাতে ভিশন, মিশন এবং স্ট্রাটেজিক প্ল্যান তৈরি করে দেশের অগ্রযাত্রায় ভূমিকা পার্টনার অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে করতে পারে, সেজন্য অর্থ-মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। বিএনএফ বর্তমানে যেভাবে কর্মকা- পরিচালনা করছে, সেক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদ সঠিকভাবে কাজ করছে না। বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি এনজিওসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাদের কর্মকা-ের জন্য দেশের অগ্রযাত্রা আজ সুন্দর ও বেগবানভাবে এগিয়ে চলেছে। মানব কল্যাণের পথে যে সমস্ত এনজিও কাজ করে চলেছে, তারা নানা কণ্টকিত পথ অতিক্রম করে ভৌত অবকাঠামো থেকে শুরু করে মানুষকে সচেতন করা, দেশ ও দশের উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। মানুষের সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে চিরন্তন মহাজনী ব্যবসার পরিবর্তন ঘটিয়ে যে সমস্ত এনজিও কল্যাণের অভিযাত্রায় শরিক হয়েছে, তাতে উপকারভোগীদের মধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠী, হরিজন সম্প্রদায়, নারী-পুরুষ সমতা অর্জন এবং দেশকে এগিয়ে-নেয়ার পেছনে যে বলদীপ্ত ভূমিকা ব্যক্তি থেকে পরিবার, পরিবার থেকে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-বন্ধু তথা সমাজ; সেখান থেকে রাষ্ট্রব্যবস্থায় গুটিকয়েক এনজিও বাদে অধিকাংশ এনজিও রাষ্ট্রীয় উন্নয়নে সম্পৃক্ত হচ্ছে। এই সম্পৃক্ত হওয়াটা যদি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে ঘটত, তবে তা দেশের জন্য অধিকতর ফলপ্রসূ হতো, কেননা এর মাধ্যমে দেশের ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি পেত। দুর্নীতি আর জঙ্গীবাদে যাতে কোন এনজিও লিপ্ত না হয়, সেজন্য সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়। আসলে দাতব্য দিয়ে কখনও কোন উন্নয়ন সম্ভব নয়, বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা গেলে তা রাষ্ট্রব্যবস্থায় মানুষকে স্বাবলম্বী করে, আয়প্রবাহ ছড়িয়ে দেয় জীবনমানের উন্নয়নের জন্য। এনজিওদের যদিও লাভ নেয়ার কথা নয়, তবে পত্রিকান্তরে কিছু-কিছু এনজিওর অতিরিক্ত মুনাফার বিষয়টি এসে যায়। এমনকি পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, ১৮০০ টাকার জন্য বেশ কয়েক বছর আগে দুজন মহিলাকে জেলে যেতে হয়েছিল। সেখানে কয়েক হাজার ব্যক্তি ঋণখেলাপী হয়েও নির্বিঘেœ ঘুরে বেড়াচ্ছে। এজন্য সমাজের অসঙ্গতি ও বৈপরীত্য শুধু আমাদের দেশে নয়, সমগ্র বিশ^ব্যাপী ভূমিকা রেখে চলেছে। তারপরও এনজিওরা সমগ্র দেশব্যাপী নানাপথ পরিক্রমায় উপযুক্ত ঋণ প্রদান, মানুষের ভেতরের অন্তর্নিহিত শক্তিকে বিকশিত করা, জীবনমানের উন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক পরিম-লেও সমতাভিত্তিক উন্নয়নে সক্ষমতা অর্জন করা একটি কঠিন ও বন্ধুর পথ। যে সমস্ত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড নিয়ে এনজিওরা কাজ করে চলেছে, তার মধ্যে রয়েছে সক্ষমতা সৃষ্টিকরণ, বিভিন্ন ধরনের আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ডে অর্থায়ন, মানুষের কর্মক্ষমতা ও কার্যকারিতা উদ্ভাবন ও বিকশিত করার লাগসই প্রযুক্তির হস্তান্তরকরণ, উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণ ইত্যাদি। মাইক্রো এন্ট্রিপ্রিনিউর তৈরি করার ক্ষেত্রে এনজিওরা ভূমিকা রাখছে। দেশে আজ সত্যিকার অর্থে ‘উদ্যোক্তা অর্থনীতি’ পঠনের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত প্রতিষ্ঠান ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স। সারা এশিয়ার মধ্যে মাস্টার্স পর্যায়ে প্রথমবারের মতো ‘উদ্যোক্তা অর্থনীতি’-তে পঠনে পাঠ্যক্রম ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স চালু করেছে, যা উন্নয়নকর্মীদের আরো সুসংহতভাবে মানবসেবায় ব্রতী করবে। আসলে উন্নয়ন করতে হলে উন্নয়নকর্মীদের অবশ্যই নিজেদের Capacity build up করতে হবে। দেশের পিছিয়ে-পড়া অনগ্রসর মানুষদের তৈরি করতে হলে যারা সেবা প্রদান করবেন, তাদের নিজেদের প্রস্তুত করার বিষয়টি এসে যায়। আর তাই একটি সময় উপযোগী মাস্টার্স প্রোগ্রাম হচ্ছে ‘উদ্যোক্তা অর্থনীতি।’ এতে উন্নয়ন তত্ত্বের প্রায়োগিক ও বাস্তবায়নযোগ্য কলাকৌশলের পাশাপাশি অর্থনীতির চারিত্রিক বিশ্লেষণ, সরবরাহ জনিত পদ্ধতি, বিপণন ও বাজারজাতকরণ, এ্যাকাউন্টিং, ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, বাস্তবসম্মত শিক্ষা পদ্ধতি, যা কিনা মানুষের ভেতরের অনুঘটকগুলোকে তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ করতে সহায়তা করে থাকবে। উপযুক্ত ঋণ গ্রহণ করলেই চলবে না বরং তা বাস্তবের আলোকে কাজে লাগাতে হবে। কেননা সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে যারা এ চলার পথে সব সময় কাজ করে চলেছে, তাদের অবশ্যই কার্যক্ষম করে তুলতে হবে, যা উন্নয়নকে গতিময়তা দেবে। সুশান্ত অধিকারী যে স্বপ্ন দেখাতেন, সময়ের বিবর্তনে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী কর্মকান্ড বাস্তবায়নের স্বপ্ন পথের দিশারী হবেÑ আজকে এনজিওরা নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তা তাদের কর্মকান্ডের দ্বারা পরিচালনা করে যাচ্ছেন। সুশান্ত অধিকারী বিশ্বাস করতেন, প্রকৃতির সৌন্দর্যই মানুষের মনকে উদার করে, প্রসারিত করে। তাঁর এই বক্তব্য যথাযথ। কেননা তিনি তাঁর সমগ্র জীবনে মানবহিতৈষী হিসেবে কাজ করেছেন। এ ধরনের মহৎ ব্যক্তি কিন্তু একুশে পদক পাননি। আশা করব, তাঁর কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একুশে পদকের জন্য বিবেচিত হবেন। তাঁর যে সুদীর্ঘ জীবন, তাতে তিনি সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ ও সংরক্ষণের আধুনিকায়নের পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন; থানাভিত্তিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ধারণার প্রবর্তক, জনগণের প্রতিষ্ঠান, তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সঞ্চয় ও ঋণ কার্যক্রমের প্রবর্তক, এডাবের অন্যতম সংগঠক, শহরভিত্তিক স্বল্প ও মাঝারি আয়ের পরিবারের জন্য আবাসন ব্যবস্থার উদ্যোক্তা, বিজ্ঞান সাপ্তাহিক ‘অহরহ’ প্রকাশ করেছেন; খ্রীস্টান সমাজের পাক্ষিক ‘স্বর্গমর্ত’র রূপকার; বিবিসিএসের আধুনিকায়নের সূচনা করেছেন। বাংলাদেশের উন্নয়নে বর্তমান প্রেক্ষাপটে এনজিওদের কর্মকান্ড আরও কার্যকর করতে নিম্নোক্ত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করতে হবে: ১. এনজিওদের সঙ্গে সরকারী সংস্থা এবং বিদেশী সংস্থাকে একসঙ্গে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। ২. মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কমিউনিটি ক্লিনিক পদ্ধতি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে এক উন্নয়ন কর্মসূচী- এটি বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি Public-Private Partnership-এর আওতায় বেগবান করতে হবে। ৩. সমৃদ্ধি কর্মসূচীটি ব্যাপকভাবে অর্থায়নে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা পিকেএসএফের সদস্য নন, তারাও যেন এই কর্মসূচীটি বাস্তবায়নে সংযুক্ত হন, সেজন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। ৪. দেশে অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কে ক্ষুদ্র বিনিয়োগে নিয়ে আসতে হবে। এজন্য অবশ্যই দক্ষতার সঙ্গে ভিন্ন রেগুলেটরের আওতায় অনতিবিলম্বে কমিউনিটি ব্যাংকিং চালুর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মুহম্মদ মাহবুব আলীর উদ্ভাবিত এই উন্নয়ন মডেলের বাস্তবায়নে সরকারের সহায়তা দরকার। ৫. যে সমস্ত এনজিও মানবকল্যাণ, যুগোপযোগী উন্নয়ন কার্যক্রমে জড়িত, তাদের অন্তত স্বীকৃতি দিতে হবে। ৬. ক্ষুদ্র বীমা কর্মসূচীর ফলপ্রসূ প্রায়োগিক কৌশল অনগ্রসর মানুষদের ক্ষেত্রে গ্রহণ করতে হবে। ৭. ইনফর্মাল সেক্টরে আজ দেশের যে উন্নয়ন ঘটছে, তাতে সরকারের নির্দেশিত ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশান পদ্ধতিকে কার্যকর করতে হবে। ৮. জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত সমস্যা যেহেতু পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে, সেজন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে মানুষকে সচেতন করা যায় এবং পরিবেশ দূষণ ও দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়তা করা যায়। ৯. এনজিওরা তাদের উপযুক্ত কর্মী তৈরি করার জন্য Capacity build-up করতে পারে, সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সে মাস্টার্স ইন এন্ট্রারপ্রিনিউরশিপ ইকোনমিক্স এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্টে শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে সক্ষম করতে পারে। ১০. মানুষের অগ্রযাত্রায়, জীবনমান উন্নয়ন, ব্যাষ্টিক অর্থনীতির বিকাশ, সামষ্টিক অর্থনীতির বিকাশ আর সামষ্টিক অর্থনীতির Micro Foundation তৈরি ক্ষেত্রে সময়ের বিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। ১১. সুপেয় পানির ব্যবস্থাকরণ, পয়ঃনিষ্কাশন পদ্ধতির উন্নয়ন থেকে শুরু করে মানব পাচার রোধে এনজিওদের কর্মসূচী আরও কার্যকর হোক। তবে পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে-সঙ্গে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে, শিক্ষার বিকাশে তাদের ভূমিকা জোরালো হোক। স্বর্গীয় সুশান্ত অধিকারীর আত্মার মঙ্গল হোক। মানুষের মঙ্গলের জন্য তিনি ব্যাপকভিত্তিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন। এই কর্মসূচী মানুষের নিজের অধিকার বুঝে-পাওয়ার ক্ষেত্রে পথ দেখায়। নানাবিধ কষ্টার্জিত পথের মধ্যেও তিনি মানুষের মঙ্গল কামনা করেছেন; এবং দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। (সমাপ্ত) লেখক : অর্থনীতিবিদ [email protected]
×