ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফল ৩ মার্চ

ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ

টানা ২৫ বছর ধরে রাজ্যে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত বামফ্রন্টের সঙ্গে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে ভারতের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে উত্তরপূর্ব এ রাজ্যটির মোট ৩১৭৪ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। ফল জানা যাবে ৩ মার্চ। এনডিটিভি। ত্রিপুরায় টানা চার মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকা মানিক সরকারের জন্য এবারের নির্বাচনকে পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। লড়াইয়ে উৎরে গেলে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মানিক রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো রাজ্যের শীর্ষপদে আসীন হবেন বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বিস্তারে মরিয়া বিজেপির জন্যও এ নির্বাচন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মোট ভোটারের ৩২ শতাংশ আদিবাসী হওয়ায় তাদের ভোট টানতে বিজেপি আদিবাসীদের দল ইন্ডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অব ত্রিপুরার (আইপিএফটি) সঙ্গে জোটও বেঁধেছে। আদিবাসীদের এ দলটি দীর্ঘদিন ধরেই ত্রিপুরা ভেঙে আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। ভোটের শুরুতেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ত্রিপুরার তরুণ জনগোষ্ঠীকে ভোটকেন্দ্রে এসে পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভার ৫৯টির ভাগ্য নির্ধারিত হওয়ার কথা রয়েছে রবিবার। সিপিএম প্রার্থী রমেন্দ্র নারায়ণ দেববর্মার মৃত্যুতে চারিলাম এলাকার ভোট স্থগিত হয়ে গেছে। আগামী ১২ মার্চ এই আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নয় ঘণ্টা ধরে মোট ৩১৭৪ কেন্দ্রে ভোট দেয় ত্রিপুরাবাসী, যার মধ্যে ৪৭টি কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা ছিল নারীদের হাতে। এই ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৯২ প্রার্থী। ক্ষমতাসীন বামফ্রন্ট ও বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। ভোটের মাঠে আলাদা করে আছে কংগ্রেস। ৫৮ আসনে প্রার্থী দিয়েছে তারা। ভারতের উত্তর-পূর্ব এ রাজ্যটির মোট ভোটার প্রায় ২৬ লাখ, যার অর্ধেকই নারী। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ১১ জন। নতুন ভোটার ৪৭ হাজার ৮০৩। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৩০০ কোম্পানি সেনা মোতায়েন করা হয়। ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের মহাপরিচালক আর কে পাচনন্দকে নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রম সমন্বয় করতে বিশেষ পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। গতবারের বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট রাজ্যের ৬০ আসনের ৫০টিতেই বিজয়ী হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল আদিবাসী অধ্যুষিত ২০ আসনের ১৯টিই। সেবার ভোট পড়েছিল ৯১ দশমিক ৮২ শতাংশ। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের লক্ষ্যে এবারও মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকেই ঢাল বানিয়েছে বামফ্রন্ট। জনপ্রিয় এ বাম নেতা নির্বাচনের প্রচারে ত্রিপুরার সবকটি আসন চষে বেড়ায়। অন্যদিকে বামপন্থীদের ভিত উপড়ে ফেলতে বিজেপি নরেন্দ্র মোদিসহ তাদের শীর্ষ নেতাদের প্রচারে নামিয়ে রাজ্যে পরিবর্তনের ডাক দেয়। বামফ্রন্ট বলছে, ত্রিপুরাকে দ্বিখন্ডিত করতেই আইপিএফটিকে সঙ্গে নিয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীনরা। বিজেপি এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। বামফ্রন্টের ৬০ আসনের ৫৭টিতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিপিএম প্রার্থীরা, তিনটি ছেড়ে দেয়া হয়েছে শরিক দলগুলোকে।
×