ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এফবিআইর অভিযোগ তালিকা প্রকাশের পর ট্রাম্প

রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাত হয়নি

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাত হয়নি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার প্রচার টিমের কেউ রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাত করেনি। শুক্রবার এ সম্পর্কিত এফবিআইর একটি অভিযোগ তালিকা প্রকাশের পর তিনি ওই মন্তব্য করেন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ তার দেশের ১৩ জন নাগরিককে নিয়ে করা এফবিআইর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এফবিআইর বিশেষ কৌঁসুলি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য ১৩ জন রুশকে অভিযুক্ত করেছে। বিবিসি ও ইয়াহু নিউজ। জার্মানিতে নিরাপত্তা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ এক সম্মেলনে লাভরভ বলেন, ‘সঠিক তথ্য’ না জেনে এ বিষয়ে তিনি আর কোন মন্তব্য করবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে রশ হস্তক্ষেপ নিয়ে এফবিআইর বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুয়েলার যে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন ১৩ রুশকে অভিযুক্ত করার তার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আর্থিক জালিয়াতি এবং পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অন্যের পরিচয় ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। সেন্ট পিটার্সবার্গভিত্তিক একটি ইন্টারনেট গবেষণা সংস্থাসহ রাশিয়ার তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামও এসেছে এই অভিযোগে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতারিত করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্তদের প্রথম পছন্দ ছিলেন ডেমোক্র্যাট মনোনয়ন প্রত্যাশী বার্নি স্যান্ডার্স এবং দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন ট্রাম্প। এফবিআইর অভিযোগের পর ট্রাম্প বলেন, এই অভিযোগ প্রমাণ করে তার টিম ভুল করেনি। লাভরভ এ বিষয়ে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন। লাভরভ বলেন, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও জিজ্ঞাসাবাদের তালিকা থেকে বাদ পড়েননি। তার মতে, এ হলো অন্তঃসারশূন্য দীর্ঘ কথাবার্তা। ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার বলেছেন, অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া যে হস্তক্ষেপ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করাই যে উদ্দেশ্য ছিল’ সেই ধারণা উড়িয়ে দেয়া এখন ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়েছে। ট্রাম্প টুইট বার্তায় রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়টি কার্যত স্বীকার করে নিলেও এর সঙ্গে তার বা রিপাবলিকান শিবিরের কোন ধরনের যোগ ছিল না বলেও ফের দাবি করেন। এর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মস্কোর হস্তক্ষেপ বিষয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার দাবিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে আসছিলেন ট্রাম্প। এফবিআইর সর্বশেষ অভিযোগ দেয়ার পর ট্রাম্প এ নিয়ে একের পর পর টুইট বার্তা পোস্ট করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে তার প্রচার টিমের গোপন যোগসাজশ বা কোন গোপন সমঝোতা হয়নি। ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল রড রোজেনস্টেইনের একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করে ট্রাম্প শনিবার বলেন, কোন মার্কিনী জ্ঞাতসারে রুশ তৎপরতার সঙ্গে জড়িত হয়নি। মুয়েলারের অভিযোগে একথা বলা হয়নি যে ট্রাম্পের প্রচার টিম বা হোয়াইট হাউসের কেউ রাশিয়ার সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করেছে। যে কারণে অভিযোগের তালিকা প্রকাশের পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে হোয়াইট হাউস। এ বিষয়ে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। অভিযুক্ত তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তাদের একজন হলেন ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। তিনি পুতিনের শেফ হিসেবে নিজের পরিচয় তুলে ধরেন। তার বক্তব্য উদ্ধৃত করে রুশ বার্তা সংস্থা রিয়া নভোস্তি শুক্রবার জানিয়েছে, ‘আমেরিকার লোকজন খুব সহজেই প্রভাবিত হয়। তারা নিজেদের পছন্দমতো সব কিছু দেখতে আগ্রহী। এফবিআইর অভিযোগের তালিকায় আমার নাম এসেছে বলে আমি চিন্তিত নই। তারা যদি নাটের গুরুকে দেখতে চায় তবে তাকে দেখতে পারে।’ প্রিগোজিন ১৯৯০ এর দশক থেকে পুতিনের বন্ধু। তিনি এক জন ব্যবসায়ী। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান তার মালিকানায় রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
×