ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মংলা বন্দরে রাজস্ব আয় বেড়েছে

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মংলা বন্দরে রাজস্ব আয় বেড়েছে

আহসান হাবিব হাসান, মংলা ॥ মংলা বন্দরের চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রাজস্ব আয় ও জাহাজ আগমন বিগত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে । মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুন-জানুয়ারি)) মংলা বন্দরের রাজস্ব আয় হয়েছে ১শ’ ৫৬ কোটি ৭১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। যা বিগত অর্থবছরের ঠিক একই সময় অর্থাৎ প্রথম সাত মাসে ছিল ১শ’ ২৮ কোটি ৬৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা। পরিসংখ্যান বলছে, গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের তুলনায় এ বছরের প্রথম সাত মাসে ২১ দশমিক ৮২ শতাংশ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সিদ্দিকুর রহমান আরও জানান, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে মংলা বন্দরে জাহাজ ভিড়েছে ৪৬৩টি। গত অর্থবছরের প্রথম সাতমাসের পরিসংখ্যান ছিল ৩৭৯টি। যা গত বছরের প্রথম সাত মাসের তুলনায় ২২ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি। এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে মংলা বন্দর দিয়ে পণ্য উঠানামা হয়েছে ৫৮ দশমিক ৯৮ লাখ মেট্রিক টন। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে সার, এলপি গ্যাস, জিপসাম (এক ধরনের কেমিক্যাল), কয়লা, লবণ, সয়াবিন, লাইন স্টোন, অপরিশোধিত তেল, ফ্লাই এ্যাশ, ক্লিংকার, মেশিনারি, রিকন্ডিশন গাড়ি এবং খাদ্য শস্য। অন্যদিকে গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে মংলা বন্দর দিয়ে পণ্য উঠানামা হয়েছে ৪৫ দশমিক ৪৫ লাখ মেট্রিক টন। সেই তুলনায় চলতি অর্থবছরে ২৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছ। জানতে চাইলে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর ফারুক হাসান বলেন, ‘জাহাজের আগমন বেড়ে যাওয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বন্দরের আয় বেড়ে যাচ্ছে। এগুলো সম্ভব হয়েছে কেবল নতুন নতুন যন্ত্রপাতির সংযোজন ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ফলে। আগামীতে আরও নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজিত হবে। বন্দর চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু এখনও হয়নি। এই সেতু সচল হলে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে মংলা বন্দরের দূরত্ব কম হবে, সময় কম লাগবে। এ কারণেই রফতানিযোগ্য তৈরি পোশাকও তখন মংলা বন্দর দিয়ে রফতানি হবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।’ ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর চালনা পোর্ট নামে এ বন্দরের যাত্রা শুরু হয়। যাত্রা শুরুর পর আমদানি-রফতানি ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে শুরু করে বন্দরটি। আশি ও নব্বই দশক পর্যন্ত এ বন্দরে বেশ কর্মচাঞ্চল্যতা ছিল। পরে বন্দরের কার্যক্রমে অব্যবস্থাপনা, শ্রমিক অসন্তোষ, নীতিনির্ধারক মহলের একচোখা নীতি, ভুল পরিকল্পনা এবং অদূরদর্শিতার কারণে সমুদ্রবন্দরটি জৌলুস হারাতে থাকে। এতে ব্যবসায়ীরা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। কমতে থাকে বন্দরের রাজস্ব আয়। বন্দরটি লোকসানী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। যার প্রভাব পড়ে জাতীয় অর্থনীতিতে। ২০০৭ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক লোকসান টানতে গিয়ে চরম দুরবস্থায় পড়ে বন্দরটি। এ অবস্থায় বন্দরটির ভবিষ্যত নিয়ে চরম হতাশা দেখা দেয় বিভিন্ন মহলে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামল ও মহাজোট সরকারের আমলে ফের বন্দরের মোড় ঘুরতে শুরু করে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কয়েক শ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয় বন্দরকে ঘিরে।
×