ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাংবাদিকদের উদ্দেশে রিয়ার এডমিরাল জন ফুলার

দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি থাকবে

প্রকাশিত: ০৩:৩৬, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি থাকবে

দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমায় মার্কিন বিমানবাহী রণতরী কার্ল ভিনসনের উপস্থিতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে যে তারও অধিকার আছে তার জানান দিল। এএফপি। কার্ল ভিনসনে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে রিয়ার এডমিরাল জন ফুলার বলেছেন, ‘এই অঞ্চলে মার্কিন উপস্থিতির গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য আছে। আমি এটি সকলকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই যে, আমরা দক্ষিণ চীন সাগরে আছি এবং এখানে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।’ প্রায় ১ হাজার ফুট লম্বা বিমানবাহী রণতরীটি অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র সজ্জিত। এতে আঘাত ও প্রত্যাঘাত করার সমস্ত উপকরণই বর্তমান আছেÑ যার মধ্যে একটি হচ্ছে গাইডেড মিসাইল ক্রুজার। এই রণতরী থেকে প্রতি দুই সেকেন্ডে একটি এফ-১৮ যুদ্ধবিমান ঘণ্টায় ২৯০ কিলোমিটার গতিতে উড্ডয়ন করতে পারবে। এই যুদ্ধজাহাজে নাবিক, পাইলট ও অন্যান্য ক্রু মিলে ৫৩০০ মেরিন সেনা আছে। সেই সঙ্গে আছে ৭২টি যুদ্ধবিমান। এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রণতরী বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে পাঠানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র প্রকারান্তরে চীনের প্রতি একটি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল। চীন অনেক দিন থেকেই এই সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ শুরু করে দিয়েছে। তারা সাগরে তাদের পূর্ণ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমুদ্রসীমায় ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া ও ব্রুনেই’র মতো দেশগুলোর মাছ ধরা ট্রলার ও অন্যান্য জাহাজ চলাচলের উপর নানা ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করছে। আঞ্চলিক সামরিক শক্তি হিসেবে চীনের বড় ভাইসুলভ আচরণে প্রতিবেশী সাগর তীরবর্তী দেশগুলো অনেকটা অসহায় অবস্থায় বিগত আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে এ নিয়ে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে। দক্ষিণ চীন সাগর শুধু সামরিক ও যোগাযোগের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এই সাগরের তলদেশে তেল ও গ্যাস সম্পদের বিশাল মজুদ আছে বলে ধারণা করা হয়। তাই এই সাগর ঘিরে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলোর তৎপরতা শীঘ্রই আরেকটি রাজনৈতিক সঙ্কট উস্কে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এডমিরাল জন ফুলার দক্ষিণ চীন সাগরের পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশের কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রশান্ত মহাসাগরীর এই দেশগুলোর স্থিতিশীলতা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়Ñ তাই এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বোধগম্য ও বাস্তব উপস্থিতি। গত মাসে ওয়াশিংটনে পেন্টাগনের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও রণকৌশল নিয়ে আলোচনায় চীনকে দক্ষিণ পূর্ব-এশিয়ার কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী বলে অভিহিত করা হয়। এতে আরও বলা হয় যে, দেশটি তার দুর্বল প্রতিবেশীদের কাছে ক্রমে ক্রমে ভয়ের কারণ হয়ে উঠছে এবং দ্রুত এই এলাকার সামরিক তৎপরতা জোরদার করছে। পেন্টাগনের পক্ষ থেকে এই সতর্কবার্তার মাসখানেক পর কার্ল ভিনসনের উপস্থিতি চীনের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল। কিন্তু মার্কিন কোন কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বিষয়টি স্বীকার করছেন না। গত মাসে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে দক্ষিণ চীন সাগর থেকে মার্কিন মিসাইল ডেস্ট্রয়ার তাড়িয়ে দেয়ার জন্য একটি যুদ্ধজাহাজ পাঠানো হয়। সে সময় চীন অভিযোগ করে যে, এই ডেস্ট্রয়ারটি দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমার কাছাকাছি বিচরণ করে তাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করছে। কিন্তু দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের একতরফা সার্বভৌমত্বের দাবি যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়া প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
×