ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ বিষয়ে এফবিআইর তদন্ত

১৩ রুশ নাগরিক অভিযুক্ত

প্রকাশিত: ০৩:৩৬, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

১৩ রুশ নাগরিক অভিযুক্ত

দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের দায়ে ১৩ রাশিয়ান নাগরিককে অভিযুক্ত করেছে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই)। এদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আর্থিক জালিয়াতি এবং পাঁচজনের বিরুদ্ধে অন্যের পরিচয় ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুলারের বিশেষ তদন্তে এদের নাম এসেছে। বিবিসি ও ইয়াহু নিউজ। ৩৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে সেন্ট পিটার্সবুর্গভিত্তিক একটি ইন্টারনেট গবেষণা সংস্থাসহ রাশিয়ার তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। এ কোম্পানিগুলো মার্কিন রাজনীতিতে অনৈক্যের বীজ বপন করার কৌশলগত লক্ষ্যে কাজ করছিল বলেও এফবিআইয়ের অভিযোগ। অভিযোগের বিষয়ে শুক্রবার সকালে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে বলে বলছে হোয়াইট হাউস। দিনের শেষভাগে এক টুইটে প্রেসিডেন্ট রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়টি কার্যত স্বীকার করে নিলেও এর সঙ্গে তার বা রিপাবলিকান শিবিরের কোন ধরনের সংযোগ ছিল না বলেও ফের দাবি করেন। এর আগে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মস্কোর হস্তক্ষেপ বিষয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার দাবিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখার কথা বলে আসছিলেন ট্রাম্প। এ নিয়ে কংগ্রেস ও বিচার বিভাগের তদন্তকেও বারবার একহাত নিয়েছিলেন তিনি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও অন্য কর্মকর্তারা সবসময়ই মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। মুলারের অভিযোগপত্রে রাশিয়ান নাগরিক ও কোম্পানিগুলোর নাম এলেও এদের সঙ্গে মস্কোর সরাসরি সংযোগের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। এফবিআই দাবি করেছে ২০১৪ সালের মে মাস থেকে প্রজেক্ট লাখতা নামে মার্কিন রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের কাজ শুরু করে অভিযুক্তরা। অভিযুক্তরা নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে মার্কিন নাগরিক সেজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে প্রচার চালায়। পরিচয় পাল্টে তারা আর্থিক লেনদেন ও রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনা করে, যেন সাধারণ আমেরিকানরা তাদের ভিনদেশী না ভাবে। রাশিয়ানরা বিভিন্নজনের কাছ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থও সংগ্রহ করে। ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারের সময় এ গোষ্ঠীর ব্যয় প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি ডলারে দাঁড়ায় বলেও অভিযোগ। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে ‘প্রাথমিকভাবে তাদের লক্ষ্য ছিল হিলারি ক্লিনটন সম্পর্কে অপমানজনক তথ্য সরবরাহ। তারা টেড ক্রুজ ও মার্কো রুবিও’র মতো অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রচারে কালি লাগানোর কাজেও নিয়োজিত ছিল। তাদের সমর্থন ছিল প্রথমে বার্নি স্যান্ডার্সের প্রতি এবং পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প।’ মার্কিন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল রড রজেনস্টাইন পরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অভিযুক্তরা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও প্রার্থীদের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ ছড়িয়ে দিতে তথ্য যুদ্ধ শুরু করেছিল। এদিকে ১৩ রুশ নাগরিক ও তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মার্কিন নির্বাচন প্রভাবিত করার অভিযোগকে হাস্যকর ও ভিত্তিহীন অ্যাখ্যা দিয়েছে মস্কো। অভিযোগপত্রে নাম থাকাদের একজন ইয়েভগেনি প্রিগোজিনও মার্কিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করার কথা অস্বীকার করেছেন। পুতিনের বাবুর্চিখ্যাত প্রভাবশালী রুশ ব্যবসায়ী প্রিগোজিন বলেন, ‘আমেরিকানরা খুব চিত্তাকর্ষক। তারা তাই দেখে, যা তারা দেখতে চায়। তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ আছে। তালিকায় নাম দেখে আমি খুব একটা চিন্তিত বোধ করছি না। তারা যদি শয়তানকে দেখতে চায়, দেখুক।’
×