ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আদালতের বিরুদ্ধে কর্মসূচী পালন করছে বিএনপি ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

 আদালতের বিরুদ্ধে কর্মসূচী পালন করছে বিএনপি ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলায় সাজা এবং কারাগারে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় লাখ লাখ লোকের ঢল নামবে এমন অপেক্ষায় ছিল বিএনপি। কিন্তু জনগণের সাড়া না পেয়ে বিএনপির অক্ষমতার অজুহাত হিসেবে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালনের কৌশল অবলম্বন করেছেন। তিনি বলেন, বেগম জিয়ার গ্রেফতারের পর ঢাকা সিটিতে প্রেসক্লাবের সামনে ও নয়া পল্টনে তারা অনশন করেছে, তারা সিটিং প্রোগ্রাম করেছে এবং তারা বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করেছে, কোথাও পুলিশ তাদের বাধা দেয়নি। তারা আদালতের বিরুদ্ধে কর্মসূচী পালন করছে, এটা মনে রাখতে হবে। এ কর্মসূচী সরকারের বিরুদ্ধে নয়। আদালতের বিরুদ্ধেই এই কর্মসূচী। তারপরও পুলিশ তাদেরকে বাধা বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। শুক্রবার সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর সুপার স্ট্রাকচার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- নির্মাণাধীন তিনটি সেতুর প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল হক, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মঈনুল হক, হাইওয়ে পুলিশের এসপি শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শরফুদ্দীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজিদুর রহমান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের প্রমুখ।। ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে তারা জনগণের পক্ষ থেকে মামলায় সাজা এবং বেগম জিয়ার বন্দী হওয়া যে প্রতিক্রিয়া এভাবে জনগণের কোন সাড়া শব্দ থাকবে না এটা বিএনপি কখনও ভাবেনি। সেখানেই তাদের ভুল। তাদের অক্ষমতাকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী হিসেবে প্রচার করছে এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। মন্ত্রী বলেন, বিএনপির যদি নিজেরাই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় এবং সরে দাঁড়ানোর অজুহাত প্রদর্শন করতে চায়, তাহলে আমাদের তো কিছু বলার নেই। আমরা বার বার একটা কথা বলেছি, আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নিরামিশ নির্বাচনে যেতে চাই না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের কোন অর্থই নেই। নির্বাচনকে মিনিং ফুল করতে হলে অর্থবহ নির্বাচনের জন্য অর্থবহ অংশগ্রহণ চাই। সেখানে বিএনপি একটি বড় দল আমরা চাইব বিএনপি নির্বাচনে অংগ্রহণ করুক। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেতারা একবার বলে তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে যাবে না, খালেদা জিয়াকে ছাড়া যাবে, নাকি খালেদা জিয়াকে সঙ্গে নিয়ে যাবে সেটাতো আদালতের বিষয়। এখানে সরকারের কোন বিষয় নেই। তিনি বলেন, বার বার মির্জা ফখরুল সরকারকে অভিযুক্ত করছেন। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, আদালতের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারছেন না। কারণ কোর্ট অব কনটেম হবে। কিন্তু এটা আদালতের আদেশ, এ আদেশ সরকারের না, এটা তাদের বুঝা উচিত। তারা (বিএনপি) যদি নিজেরা নির্বাচন থেকে সরে যেতে চায় সেটা তাদের ব্যাপার। আমরা তাদেরকে সরাব না। কোন প্রকার চেষ্টাও করব না। সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়াকে তো নেনসন ম্যান্ডেলার মতো রোবনাইলেন দ্বীপে পাঠানো হয়নি। কারাগারে জনাকীর্ণ পরিবেশ তার জন্য কি করে রাখব। কারাগার চলবে জেলকোড অনুযায়ী। এখানে তার জন্য বিশাল জনতার সমাবেশ বা কারাগারের মধ্যে সরব তো করতে পারব না। আমি একটা কথা বলতে পারি তিনি যেখানে আছেন, আমিও জেলে ছিলাম ওয়ান ইলেভেনের আগে এবং পরে। কারাগারে ডিভিশন প্রিজনাররা যেভাবে থাকেন বেগম জিয়া সেই স্ট্যাটাস মর্যাদা নিয়ে থাকার ব্যবস্থা, খাবার দাবার, এমনকি তার গৃহকর্মীকেও তিনি সঙ্গে নিয়ে আছেন। যেটা এদেশে নজিরবিহীন ঘটনা। তার গৃহকর্মীও তার সঙ্গে কারাগারে থাকবে। সেই সুযোগটাও তিনি পাচ্ছেন। এই সুযোগ বাংলাদেশের কেউ পায়নি। কাজেই আর কি চান। এটাকে নির্জন বলবেন? ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, গৃহকর্মী নিয়ে কারাগারে আছেন, তিনি যে রুমে থাকেন সেই রুমটা গিয়ে দেখে আসেন। এটা জেল সুপারের রুম অনেক সুন্দর রুম। এ রুম যদি পরিত্যক্ত হয় সে হিসেবে তো ঢাকা জেলই তো পরিত্যক্তই। নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে ১০ হাজার লোক থাকত। সেখানে এখন সামান্য কিছু লোক আছে। একটা নিরিবিলি পরিবেশ আছে। বেগম জিয়া গান শুনতে পারবেন, বই পড়তে পারবেন, কারাগারে যা হয়। তিনি বলেন, বিএনপির ডাকে জনগণ সাড়া দিচ্ছে না, আন্দোলনে যেতে পারছে না, নিজেরাই দুই একজন কান্নাকাটি করছে মিডিয়ার সামনে। পাবলিক কোথাও কেঁদেছে এটা আমাদের জানা নেই। কাজেই জনগণের সহানুভূতি অর্জনের জন্য বিএনপি নেতারা বার বার নির্জন কারাগারে কথা বলে বেড়াচ্ছেন। এটা কিন্তু ঠিক নয়।
×