ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কক্ষ সঙ্কটে সাতানিখিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

  কক্ষ সঙ্কটে সাতানিখিল সরকারী  প্রাথমিক বিদ্যালয়

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ সদর উপজেলার মহাকালীর দক্ষিণ কেওয়ার সাতানিখিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। মাত্র দু’টি ক্লাস রুম দিয়ে ২শ’ ৩৪ শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। রুম দু’টির পশ্চিম পাশের পঞ্চম শ্রেণীর রুমটিকে ভাগ করে শিক্ষকদের বসার স্থান বানানো হয়েছে। এরমধ্যে বসেই শিক্ষকরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কোনমতে। প্রধান শিক্ষকের জন্য আলাদা রুম নেই। স্কুলটির পূর্ব দিকের রুমটিকেও বেড়া দিয়ে দুই ভাগ করা হয়েছে। এই দুটি রুমে ১ম, ২য়, ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হয় পর্যায়ক্রমে। যা চোখে দেখলে অবিশ্বাস্য মনে হবে। অনেকটাই ঠাসাঠাসিভাবে বসে এদের ক্লাস করতে হচ্ছে। এখন শীতে যেমন তেমন, গরমের দিনে ঘাম ঝরে একাকার। বিদ্যালয়টিতে মোট ৮ জন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর অবসরে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত এখানে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। তাই শিক্ষা কার্যক্রম দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়টির ১জন সহকারী শিক্ষক অন্যত্র প্রেষণে থাকায় শিক্ষক সঙ্কট রয়েছে এখানে। প্রতিষ্ঠানটির মূল ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ২০১২ সালে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত নতুন ভবন তৈরি না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা কষ্টের মধ্য দিয়ে ক্লাস করে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা। তারা ২ রুম বিশিষ্ট ভবনের পূর্ব পাশের রুমের সরু বারান্দায় গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করছে। কিন্তু জড়োসড়ো হয়ে বারান্দায় বসে ক্লাস করাটা অনেকটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। পবিত্রতার প্রতীক শিশুরা সুন্দর শিক্ষার পরিবেশ না পেয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। স্কুলে আসা অভিভাবক নার্গিস আক্তার জানান, তার ছেলে সোহেল প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থী। সোয়া ৯টায় তিনি যখন বাচ্চাকে স্কুলে দিতে আসেন। তখন ছোট বারান্দায় তাকে এমনভাবে বসতে হয় যা আমার কাছে খুবই কষ্টকর বলে মনে হয়। গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে বাচ্চাদের বসতে হয়। অনেক সময় বাচ্চারা বিরক্তি প্রকাশ করলেও কিছু করার থাকে না। এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। স্কুলটির বর্তমান সমস্যা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রাশিদা বেগম জানান, দুটি রুম দিয়ে একটি স্কুল চালানো খুবই কষ্ট সাধ্য ব্যাপার। মাঝে মধ্যে আমরা ক্লাস নিতে হিমশিম খাচ্ছি। তিনি আরও জানান, আমাদের বসার স্থানটি ছোট্ট পরিসরের হওয়ায় ক্লাস শেষে অনেকেরই বারান্দায় পায়চারী করতে হয়। তিনি আরও জানান, এখানে নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত প্রকৃত শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত থেকে যাবে। দুই রুম বিশিষ্ট ছোট্ট পরিসরের এ প্রতিষ্ঠানটিকে তিনি ভীষণ অবহেলিত প্রতিষ্ঠান বলে আখ্যায়িত করেন এবং দ্রুত নতুন ভবন তৈরি করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাসলিমা বেগম জানান, বিষয়টি আমাদের সংসদ সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। অন্যদিকে উপজেলার যে সকল বিদ্যালয়গুলোতে এ ধরনের সমস্যা রয়েছে তা সমাধানের জন্য প্রকৌশল বিভাগের কাছে আমরা তালিকা পাঠিয়েছি।
×