ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুদের পদচারণায় মুখরিত মুন্সীগঞ্জের গণগ্রন্থাগার

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

 শিশুদের পদচারণায় মুখরিত মুন্সীগঞ্জের  গণগ্রন্থাগার

মুন্সীগঞ্জে সরকারী গণগ্রন্থাগারের শিশু কর্নার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বই পড়ার আন্দোলনকে জাগ্রত করতে গেল বছর এপ্রিল মাসে এই কর্নার উদ্বোধন করা হয়। এখানে প্রায় ৪ হাজার শিশুতোষ বইয়ের সমাহার রয়েছে। কী নেই এখানে? ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, বিজ্ঞানভিত্তিক, গল্পের বই, মনীষীদের জীবনী, নৈতিক শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা, হাস্যরস, কৌতুক, ছড়ার বই, সবই আছে। নান্দনিক সাজে সজ্জিত গণগ্রন্থাগারের শিশু কর্নারটি। শিশুদের আগ্রহী করতে এখানে রয়েছে নানা আয়োজন। এছাড়া একেবারে ছোট শিশুদের খেলার ছলে পড়ায় আগ্রহী করতে রয়েছে নানা উপকরণ। এই উদ্যোটি গ্রহণ করেছিলেন জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা। তিনি এই বিষয়ে বলেন, বর্তমানে ছেলে মেয়েরা ইন্টারনেটে ঝুঁকে যাচ্ছে। ইন্টারনেটই এখন তাদের বন্ধু। তাদের বই পড়ায় আগ্রহী করতে হবে। নতুবা তারা বাংলা ভাষার মর্যাদা বুঝবে না, সাহিত্য বুঝবে না। বুঝবে না আমাদের হাজার বছরের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি। তাদের চিন্তা চেতনার পরিবর্তন ঘটিয়ে বিশেষ করে যারা এখনও ছোট, যারা এখনও ইন্টারনেটে আসক্ত হয়নি তাদের বইমুখী করতেই এই উদ্যোগ। ছোটবেলা থেকেই এইসব শিশুদের বই সঙ্গী করে দিতে হবে। আর এই বই পড়তে তাদের আসতে হবে লাইব্রেরিতে। এই শিশু কর্নারে এসে এসব কোমলমতি শিশুরা বই পড়বে। নীতি, নৈতিকতা, সভ্যতা সংস্কৃতি জানবে। তারা আলোকিত হবে। তাদের আলোয় আলোকিত হবে দেশ। গড়ে উঠবে সোনার বাংলা। তিনি আরও বলেন সাবেক সংস্কৃতি সচিব এবং বর্তমান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সচিব আকতারি মমতাজ লাইব্রেরিটি পরিদর্শনে এসে এই আইডিয়াটি দেন। তারপর ঐ বছরই এপ্রিলে শিশু কর্নার করা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে শিশুদের খুব একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছিল না। তাই জেলার স্কুলগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা এই শিশু কর্নারে আসেন। তাদের বই পড়ার বিষয়ে আগ্রহী করে তোলেন। সরেজিমন গিয়ে দেখা যায় এই শিশু কর্নারে শিশু শিক্ষার্থীরা বই পড়ছে। প্রায় ৩০ শিক্ষার্থী এখানে ২ ঘন্টা সময় কাটায়। পালা করে প্রতিদিন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা এখানে আসছে। ছোট ছোট সোনামনিদের পদচারণায় সরব হয়ে উঠছে এই সরকারী গণগ্রন্থাগারটি। ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারিয়া রহমান বলে, ‘আমার এখানে এসে ভাল লাগে। বেশি ভাল লাগে গল্পের আর মুক্তিযুদ্ধের বই পড়তে। সঙ্গে আসা স্কুল শিক্ষিকা সম্পা রায় বলেন, শিশুদের লাইব্রেরি নিয়ে আসলে সঙ্গে শিক্ষকরাও বই পড়ার সুযোগ পাই। এতে নিজেকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করতে পারছি। আর শিশুদের বইয়ের প্রতি মনোযোগী করতে পারায় খুব আনন্দ পাচ্ছি। সংশ্লিষ্টরা জানান, তবে শিশুদের কর্নারটি চালুর আগে এমন সরব ছিল না এই লাইব্রেরিটি। গণগ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান রাফিয়া সুলতানা বলেন, শনিবার থেকে বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই লাইব্রেরি। গণগ্রন্থাগারটিতে প্রায় ৩০ হাজার বই রয়েছে। এর মধ্যে শিশু কর্নারে রয়েছে প্রায় ৪ হাজার বই। সব বয়সীদের জন্যই লাইব্রেরী উন্মুক্ত। সবাই এখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বই পড়তে পারেন। আবার চাইলে মাত্র ২শ’ টাকা দিয়ে সদস্য হয়ে লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে পড়ে আবার ফেরত দিতে পারে। -মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ থেকে
×