ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মী নিয়োগে আগামী মাসে বাংলাদেশ-আমিরাত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

 কর্মী নিয়োগে আগামী মাসে বাংলাদেশ-আমিরাত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক

ফিরোজ মান্না ॥ সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে আগামী মাসেই দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এবার বৈঠক হবে ঢাকায়। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের পর দেশটিতে শ্রমবাজার খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে দেশটিতে কর্মরত ৭ লাখ বাংলাদেশী কর্মীর আকামা (চাকরি) পরিবর্তনের বিষয়টি অনুমোদন করেছে কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে বাংলাদেশী কর্মীরা তাদের ইচ্ছে মতো চাকরি পরিবর্তন করতে পারবেন। ঘোষণা দেয়ার পর ৮ মাস কেটে গেলেও বাংলাদেশী কর্মীরা এখনও সেই সুযোগ পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে। তবে আকামা পরিবর্তনের বিষয়টিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে, এটি একটি বড় অর্জন হিসেবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সম্প্রতি বলেছেন, দেশটির মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশনমন্ত্রী সাকর গোবাশ সাঈদ গোবাশের সঙ্গে তার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে অধিকসংখ্যক কর্মী নেয়া ও কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দেশটির মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে সরকারের কাছে বাংলাদেশী কর্মীর চাহিদাপত্র পাঠানো হবে। এই চাহিদার অনুকূলে কত সংখ্যক কর্মী তারা নেবে সে বিষয়টি ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে ঠিক হবে। আগামী মাসেই উচ্চপর্যায়ের আরব আমিরাতের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। তারা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে ঠিক করবেন কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া কি হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানব সম্পদমন্ত্রী গোবাশ আশ্বাস দিয়েছিলেন, বাংলাদেশী কর্মীদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া হবে। দুই দেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক, মুসলিম প্রধান দেশ, একই ধর্মীয় মূল্যবোধের অনুভূতি ও পারস্পরিক অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা বজায় রাখার জন্য পরস্পরের প্রতি একটা ঘনিষ্টতা আগে থেকেই বিরাজমান রয়েছে। বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত অভিবাসন ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে একযোগে কাজও করে যাচ্ছে। উভয় দেশ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরামসমূহে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে সুষ্ঠু ও নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের বিভিন্ন ইস্যুতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে। এতে কর্মীদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষা হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রণালয় বিদেশী কর্মীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জারীকৃত সর্বশেষ ডিক্রীসমূহের উদ্যোগকে প্রশংসা করেন। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে আরও অধিকসংখ্যক দক্ষ কর্মী নেয়ার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকে মন্ত্রণালয় সবচেয়ে ইতিবাচক হিসাবে বলা হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হয় সেই অপেক্ষা করতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০১৬ সালে অন্যান্য দেশগুলোর কর্মীদের জন্য আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া হয়। সেই সময় বাংলাদেশের কর্মীদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। গতবছর মন্ত্রীর সফরের সময় দেশটির মানব সম্পদমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশী কর্মীদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেবেন তারা। কিন্তু এখনও এ সুযোগ বাংলাদেশী কর্মীরা ভোগ করতে পারছেন না। উল্লেখ্য ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৩ লাখ অধিক কর্মীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজারের বেশি নারী কর্মী দেশটিতে কর্মরত রয়েছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণে জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে।
×