ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রেকর্ড গড়েও হার বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রেকর্ড গড়েও হার বাংলাদেশের

মিথুন আশরাফ ॥ টি২০তে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্কোর গড়েছে। রেকর্ড গড়েছে। এই রেকর্ড গড়েও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। ১৯৩ রান করেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান করে ৬ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে। টেস্ট, ওয়ানডেতে নিজেকে মেলে ধরতে না পারলেও গত বছর টি২০তে দলের পক্ষে সৌম্য সবচেয়ে বেশি রান করেছিলেন। তাতে টেস্ট, ওয়ানডেতে এবার বাদ পড়লেও টি২০তেই ঠিকই সৌম্য টিকে যান। সৌম্য এমন ব্যাটিংই করেন, শুধু উজ্জ্বলতাই ছড়ান। কি আত্মবিশ্বাস ব্যাটিংয়ে। ৩০ বলেই হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেন। টি২০তে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করে দেখান। তার ব্যাটিংয়ে শুরুতেই উড়ন্ত পথ তৈরি করে বাংলাদেশ। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গে আর ১ রান করতেই এলবিডব্লিউ হয়ে যান সৌম্য। সৌম্য আউটের এক বল পর আফিফ হোসেন ধ্রুবও সাজঘরে ফেরেন। সৌম্য ও মুশফিক মিলে ৫১ রানের জুটি গড়েন। দুইজন মিলে ভালই খেলছিলেন। সৌম্য আউটের আগে মনে হয়েছিল বাংলাদেশের স্কোর বিশাল হবে। ২০১২ সালে বেলফাস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি২০তে ১৯০ রান করেছিল বাংলাদেশ। সেটিই টি২০তে বাংলাদেশের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান ছিল। সৌম্য থাকতে মনে করা হয় এই রান অনায়াসেই অতিক্রম করে ২০০ রানও ছাড়াবে বাংলাদেশ। সৌম্য আউটের পর মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ মিলে যেভাবে এগিয়ে যেতে থাকেন তাতে ভরসাও থাকে। মুশফিক তো ৩১ ম্যাচের পর টি২০তে হাফ সেঞ্চুরি করেন। মাহমুদুল্লাহও হাফ সেঞ্চুরির কাছে চলে যান। কিন্তু ৪৩ রান করে আউট হয়ে যান। টি২০ মেজাজে এমনই খেলা খেলতে থাকেন মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ ৭৩ রানের জুটি গড়েন। ইনিংস শেষ হওয়ার ১০ বল বাকি থাকতে আউট হয়ে যান মাহমুদুল্লাহ। তখন বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ১৭৩ রান যোগ হয়। মাহমুদুল্লাহ আউটের পর সাব্বির রহমান রুম্মন ব্যাট হাতে নেমে ব্যর্থ হন। তখন আর ৫ রান হলে সর্বোচ্চ স্কোর গড়ার রেকর্ড হবে বাংলাদেশের। আরিফুল ১ রান নেয়ার পর মুশফিক বাউন্ডারি হাঁকান। তাতে ১৯১ রান হওয়ায় দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোরটি হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আর ২ রান যোগ হয়। তাতে করে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৯৩ রান করে বাংলাদেশ। কিন্তু যেভাবে ব্যাটিং দেখার মিলছিল, মনে হচ্ছিল দুইশ’র বেশি হবে। তা থেকে ৭ রান কম হয়েছে। কিন্তু যে রান হয়েছে তাও অনেক। এই রান নিয়ে না জেতার কথা না। কিন্তু বোলারদের ব্যর্থতায় হারই হয়েছে নিয়তি। তাতে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। মেন্ডিস ও গুনাথিলাকা শুরুটা এমন করেন তাতেই শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাসী দেখা যায়। ৫৩ রানের সময় ৩০ রান করা গুনাথিলাকাকে আউট করে দেন নাজমুল ইসলাম অপু। এরপর ৯০ রানে গিয়ে হাফ সেঞ্চুরি করা কুশল মেন্ডিসকে (৫৩) যখন আফিফ হোসেন ধ্রুব আউট করে দেন তখন বাংলাদেশের মুঠোয় চলে আসে ম্যাচ। আর ২ রান হতেই যখন উপুল থারাঙ্গাকে সাজঘরে ফেরান অপু তখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। আউটটি করে অপু সেই তার ‘সাপুড়ে’ স্টাইলে ফুর্তিতে মাতেন। কিন্তু শানাকা এসে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করতে থাকেন। স্কোরবোর্ডে দ্রুত রান জমা করতে থাকেন। এরপর থিসারা পেরেরা এসে এমন ব্যাটিংই করেন, বাংলাদেশকে হারিয়েই দেন। শানাকা ৪২ রানে ও পেরেরা শেষ পর্যন্ত ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন। দলও ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬.৪ ওভারে ১৯৪ রান করে জিতে। সাকিব আল হাসান আগেই নেই। তামিম ইকবালও ছিটকে পড়েন। দুইজনই ইনজুরিতে প্রথম টি২০ খেলতে পারেননি। আর তাই বাংলাদেশ টি২০ দলে চার ক্রিকেটারের অভিষেক হয়। স্পিন অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন ধ্রুব, পেস অলরাউন্ডার আরিফুল হক, উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান জাকির হাসান, স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর অভিষেক হয়। মনে করা হয়, তরুণরাই কিছু করে দেখাবেন। কিন্তু সিনিয়ররাই যা করার করে ফেলেন। কিন্তু বোলাররা নৈপুণ্য দেখাতে না পারাতে হারে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ও ৬ নবেম্বর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দুটিতে সাকিব ও তামিম খেলেননি। চার বছর পর আবারও দুইজনকে ছাড়া বাংলাদেশ দল টি২০ খেলেছে। দুইজনের অনুপস্থিতিতে ম্যাচ দুটি হেরেছিল বাংলাদেশ। এবারও সেই একই ফল হলো। এবার তো রেকর্ড গড়ার পরও হারল বাংলাদেশ।
×