ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ফুটবল দলের অনুশীলন শুরু;###;বিকেএসপিতে

একটি জয়ই পারে সবকিছু বদলে দিতে ॥ মামুনুল

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

একটি জয়ই পারে সবকিছু বদলে দিতে ॥ মামুনুল

রুমেল খান ॥ ‘ভুটান-লজ্জা’ পাবার পর অবশেষে দীর্ঘ ১৭ মাস পর আবারও একত্রিত হয়ে অনুশীলনে ঘাম ঝরাতে শুরু করল জাতীয় ফুটবলাররা। এশিয়ান গেমস বাছাই ও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে সামনে রেখে সাভারের বিকেএসপিতে আরম্ভ হয়েছে লাল-সবুজদের ক্যাম্প। কোচদের দাবি- সাম্প্রতিক সময়ে টানা খেলার মধ্যে থাকায় ফুটবলারদের ফিটনেস নিয়ে সমস্যা হবে না। ফুটবলাররাও অনেক প্রীত বহুদিন পর আবারও জাতীয় দলের ক্যাম্পে ফিরতে পেরে। স্বস্তিতে কোচ এ্যান্ড্রু অর্ডও। কেননা নিয়োগের আট মাস পর অবশেষে জাতীয় দল নিয়ে সরাসরি কাজ করতে পারছেন তিনি। আপাতত ২৬ ফুটবলারকে নিয়ে বিকেএসপিতে শুরু হয়েছে অনুশীলন। প্রথমদিন মামুনুলদের সাঁতার অনুশীলন করানো হয় ঘণ্টাখানেক। তারপর মাঠে ঘাম ঝরানো। জাতীয় দলে ফিটনেস নিয়ে সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন সহকারী কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি। সম্প্রতি পর্তুগীজ ফিজিও মারিও লেমোসের যোগ দেয়াটা ছিল ইতিবাচক। জানা গেছেÑ প্রতিদিন দুই বেলা চলবে অনুশীলন। ২১ ফেব্রুয়ারির পর দ্বিতীয় ধাপে আরও ৯ ফুটবলার যোগ দেবেন দলের সঙ্গে। জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরু হওয়ায় খুশি ফুটবলাররা। স্বপ্ন দেখছেন বর্তমান কঠিন সঙ্কট থেকে উত্তরণের। এই ক্যাম্পের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘদিনের জমে থাকা কষ্টের অবসান হয়েছে বলে মনে করেন মামুনুলরা। সাফের আগে বাফুফের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় নিজেদের তৈরি করতে কাজে আসবে বলেও মত তাদের। এবার প্রাথমিক দলে ৩৫ জনের মধ্যে নতুন মুখই ১৭ জন। এক সঙ্গে এত নতুন মুখ সুযোগ দেয়ার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন ফুটবল বোদ্ধারা। এতে ভবিষ্যতের জাতীয় দল আরও শক্তিশালী হবে বলেই মনে করেন দলের সিনিয়র ফুটবলাররা। ভুটান-ব্যর্থতার পর একরকম অন্ধকারই নেমে এসেছিল দেশের ফুটবলে। সমার সমালোচনা আর খেলতে না পারার কষ্ট সয়েছেন ফুটবলাররা। কেমন ছিল সেই দিনগুলো? মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘কষ্ট তো সবসময়ই পাই। কারণ জাতীয় দলের যখন খেলা থাকে না তখন লীগ খেললেও জাতীয় দলের হয়ে খেলার সেই আবেগ থাকে না। আমি মনে করি জাতীয় দলের এক বছর ধরে কোন খেলা নেই। তাই আমরা অনেক পিছিয়ে যাচ্ছি। আমাদের খুব খারাপ লাগে যখন দেখি ক্রিকেট দল বা হকি দল খেলছে। আমরা যদি আবারও একটা জয় দিয়ে শুরু করতে পারি, মানসিক চাপ এবং অবসাদ কাটিয়ে সবাই আবারও আত্মবিশ্বাস ফিরে পাব।’ নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ফিফা র‌্যাঙ্কিং ১৯৭তে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের প্রধান দায়িত্বটা যাদের, এবারের ক্যাম্পে ৩৫ জনের অর্ধেকটাই সেই তরুণ ফুটবলার। কঠিন পথ পাড়ি দিতে নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়তে চান তারা। ফিরিয়ে আনতে চান সুদিন আর কোচ জানালেন মূল দল নির্বাচনে গুরুত্ব দেয়া হবে ফিটনেসকে। দলের জুনিয়ররা যেমন নিজেদের প্রমাণ করতে চান। ফুটবলার তকলিস আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এটা আসলে সাফের প্রস্তুতি। বাফুফে যে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করেছে এটা আমাদের ফুটবলের জন্য খুবই ভাল।’ দলে ঠাঁই পাওয়া তরুণ ফুটবলার জাবেদ খান বলেন, ‘আমি এখানে মোস্ট জুনিয়র প্লেয়ার। প্রিমিয়ার লীগ দেখে আমাকে সিলেক্ট করা হয়েছে। সিনিয়র জুনিয়র সবার মোটামুটি কম্বিনেশন ভাল।’ সহকারী কোচ রক্সি বলেন, ‘এবারের দলটা সিনিয়র জুনিয়রের মিশেলে তৈরি হয়েছে। আমরা কিন্তু ১৯, ২০, ২২, ২৩, ২৫-এরও উর্ধেও কিছু প্লেয়ার রেখেছি। এটা খুব ভাল একটা কম্বিনেশন। যেটাকে ভবিষ্যত দল ধরা হচ্ছে। তারা এখন থেকে তৈরি হবে। যেন অনেকদিন সময় দিতে পারে এবং জাতীয় দলকে কিছু দিতে পারে।’ বিকেএসপিতে দু’সপ্তাহ কঠোর অনুশীলন করবেন মামুনুলরা। ২৮ ফেব্রুয়ারি কাতারে অনুশীলনের জন্য গেলেও দলটি দেশে ফিরবে ১৪ মার্চ। এরপর ১৯ মার্চ থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হবে জাতীয় ফুটবল দল। সেখানে ২১ ও ২৩ মার্চ স্থানীয় দু’টি ক্লাবের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলবে লাল-সবুজের দল। সেখান থেকেই দু’দিন পর তারা পৌঁছাবে লাওসে স্বাগতিক জাতীয় দলের বিপক্ষে একটি ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলতে। সেখান থেকে আবার ২৭ মার্চ ঢাকায় ফিরবে দলটি। এভাবেই চলবে সাফের প্রস্তুতি।
×