ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচন ॥ ক্রেমলিনের ডিজিটাল কৌশল বিভেদ আরও তীব্র করবে

রুশ হস্তক্ষেপের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রুশ হস্তক্ষেপের আশঙ্কা

মার্কিন কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে প্রভাব খাটানোর একটি সুযোগ হিসেবে নিতে পারে রাশিয়া। মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তরা মঙ্গলবার এ বিষয়ে তাদের মত প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, রাশিয়া এরই মধ্যে এ কাজ শুরু করে দিয়েছে। গোয়েন্দারা হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার ডিজিটাল কৌশল দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভেদ আরও তীব্র করবে।- নিউইয়র্ক টাইমস মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার জন্য রাশিয়ার সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছে। ইউরোপের নির্বাচন ব্যবস্থাও তাদের টার্গেটের মধ্যে আছে। তারা আশঙ্কা করছেন রাশিয়ার এই তৎপরতা কেবল চলতি বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক ড্যান কোটস বলেন, ‘আমরা ধারণা করি রাশিয়া সোশ্যাল মিডিয়া, ছদ্মবেশ কৌশল তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল লোকজনকে ব্যবহার করাসহ নানা উপায়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহের কোন কারণ নেই যে, রাশিয়া ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যা করেছে তা থেকে বিরত হবে। ওই কাজে সাফল্য তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। চলতি বছর কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে প্রভাব বিস্তারের আরেকটি প্রকল্প হিসেবে নিতে পারে রাশিয়া।’ সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির বৈশ্বিক হুমকি বিষয়ক বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রুশ হস্তক্ষেপ থেকে সুরক্ষার জন্য কোটস ও অন্যান্য শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দুটো বিষয়ের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। একটি হলো রুশ অপপ্রচার, অপরটি নির্বাচন ব্যবস্থা। মার্কিন নির্বাচন ব্যবস্থা বেশ পুরনো ধাচের এবং সেটি প্রতিটি অঙ্গরাজ্য পৃথকভাবে পরিচালনা করে থাকে। ব্যবস্থাটি যে কতটা নাজুক গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেই তা দেখা গেছে। কোটস ছাড়াও এ দিন সিনেট কমিটির শুনানিতে অংশ নেন সিআইএ’র পরিচালক মাইক পম্পেও ও এফবিআইয়ের পরিচালক ক্রিস্টোফর রে সহ সিনিয়র গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। কোটস আরও বলেন, এসব কিছুর পরও গত এক বছরে গোয়েন্দা ব্যবস্থায় কোন পরিবর্তন আমরা দেখিনি। কোটসের এই বক্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথার বিপরীত। নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ তিনি ইতোপূর্বে একাধিকবার উড়িয়ে দিয়েছেন। যারা এ রকম অভিযোগ করে তিনি তাদের নিয়েও উপহাস করেছেন। রুশ হস্তক্ষেপ রুখে দেয়ার জন্য কর্মকৌশল ঠিক করতে তিনি এখনও গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোকে কোন নির্দেশ দেননি। তবে পম্পেও বলেছেন, রাশিয়াসহ যে কোন বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতা রোধে সক্রিয় থাকা যে সিআইএ’র অন্যতম দায়িত্ব তা স্পষ্ট করে জানিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। রাশিয়া সঠিক ও ভুল দু রকম তথ্যই ছড়াচ্ছে। এর ফলে রাজনীতিতে বিভাজন আরও বাড়ছে। সম্প্রতি রিপাবলিকান পার্টি কংগ্রেসে একটি মেমো প্রকাশ করেছে। এতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সিনেটর ভার্জিনিয়ার মার্ক ওয়ার্নার বলেছেন এফবিআই এবং বিচার বিভাগ এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনার মুখে পড়ছে। তিনি বলছেন, রুশ প্রচার-প্রচারণায় প্রভাবিত হয়ে রাজনৈতিক নেতারা এ কাজ করে করছেন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিশ্বস্ততা প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং তাদের কাজের সমালোচনা করা ভাল লক্ষণ নয় বলে তিনি মনে করেন। মার্কিন নির্বাচন ব্যবস্থায় রাশিয়ার হস্তক্ষেপের কোন বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ এখনও পাওয়া না গেলেও পম্পেও বলছেন মস্কো মূলত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কৌশল গ্রহণ করেছে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রই নয় ইউরোপের দেশগুলোতেও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেয়ার কৌশল নিয়ে রাশিয়া অগ্রসর হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বহু লোকের সঙ্গে সাক্ষাতকার, যোগযোগ ব্যবস্থা ব্যবহার ও অন্যান্য সূত্রে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
×