ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থবছরের প্রথম সাত মাস

যুক্তরাজ্যে রফতানি আয় বেড়েছে ১৭ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

যুক্তরাজ্যে রফতানি আয় বেড়েছে ১৭ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশের রফতানি আয় বেড়েছে ১৭ শতাংশ। মুদ্রাবাজারে ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে পাউন্ডের বিনিময় হার, যার প্রভাবে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশের রফতানি আয়েও দেখা দিয়েছে ব্যাপক উলম্ফন। জানা গেছে, যুক্তরাজ্যে ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় ২০১৭ সালের মার্চে। এর ফলশ্রুতিতে অবমূল্যায়ন ঘটে পাউন্ডের। সে সময় বাংলাদেশী মুদ্রায় পাউন্ডের বিনিময় হার ১২৮ টাকা থেকে নেমে আসে ৯৫ টাকায়। বর্তমানে সে পরিস্থিতি বদলেছে। আবার শক্তিশালী হয়ে উঠছে পাউন্ড। প্রতি পাউন্ডের বিপরীতে এখন পাওয়া যাচ্ছে ১২৮ টাকা করে, যার ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের রফতানি আয়ে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশের রফতানি আয় হয়েছে ২৩৪ কোটি ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫৮ হাজার ডলারের সমপরিমাণ অর্থ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ২০০ কোটি ৪০ লাখ ৮৩ হাজার ডলারের সমপরিমাণ। এ হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে পণ্য রফতানি বাবদ বাংলাদেশের আয় বেড়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যমুখী রফতানি পণ্যের মধ্যে ওভেন ও নিট পোশাক, হোম টেক্সটাইল, কৃষিপণ্য, হিমায়িত মাছ, চামড়া-চামড়াজাতপণ্য ও ফুটওয়্যার, কাঁচাপাট ও পাটপণ্য এবং বাইসাইকেল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এসব পণ্যের রফতানিকারকরা বলছেন, ব্রেক্সিট সিদ্ধান্তের পরপরই পাউন্ডের ব্যাপক অবমূল্যায়ন ঘটে, যার প্রভাব দেখা গেছে বাংলাদেশের রফতানি আয়ে। তবে মুদ্রাটি এখন বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাও ইতিবাচক, যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের রফতানি আয়ে। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সভাপতি মোঃ আমিন উল্লাহ বলেন, যুক্তরাজ্যের বাজারে হিমায়িত মাছ বিশেষ করে চিংড়ির রফতানি চাহিদা স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমানে দেশটির বাজার নিয়ে উদ্বেগের কোন কারণ দেখতে পাচ্ছি না। যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া অন্যতম প্রধান পণ্য পোশাক। চলতি বছর দেশটিতে পোশাক রফতানি বাবদ আয়ের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক। এ বিষয়ে বিজিএমইএর সঙ্কলিত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি আয় বেড়েছে ২০ শতাংশ। চলতি বছর জুলাই থেকে ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যে পোশাক রফতানি বাবদ আয় হয়েছে ১৮৫ কোটি ১ লাখ ৮ হাজার ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১৫৩ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার ডলার। পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইয়ের সাবেক সভাপতি ও রফতানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, গত দুই বছর আমরা ইউরোর দরপতন মোকাবেলা করেছি, এক পর্যায়ে পাউন্ডের দরপতনের প্রভাবও দেখতে পেয়েছি। বর্তমানে যুক্তরাজ্য থেকে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হওয়ায় ভবিষ্যতে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য আরও বাড়বে বলে আশা করছি।
×