ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মৌসুমি জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে, উদ্বেগের কিছু নেই

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মৌসুমি জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে, উদ্বেগের কিছু নেই

নিখিল মানখিন ॥ গরম ও ঠাণ্ডা মিশ্রিত আবহাওয়ায় রাজধানীতে সর্দি-কাশি জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। নগরীর অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিকে এমন মৌসুমি জ্বরে আক্রান্তরা ভিড় জমাচ্ছে। রোগীর কাশি অনেক সময় রূপ নিচ্ছে শ্বাসকষ্টে। কেউ কেউ আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়ায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের মৌসুমি জ্বর নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। প্রতি বছরই এমন সময় সর্দি-কাশি জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ জ্বরের চিকিৎসা লাগে না। এ জ্বরে আক্রান্ত হলে মাথাব্যথা হতে পারে। তিনদিন পর্যন্ত এন্টিবায়োটিক খাওয়া ঠিক হবে না। প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। জ্বরে আক্রান্ত রোগীর গা হালকা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে দিনে কয়েকবার মুছে দিতে হবে। তিনদিন পরও জ্বর না কমলে, ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। রোগীকে স্বাভাবিক খাবার দেয়া অব্যাহত রাখতে হবে। ছোঁয়াচে হওয়ায় এ ধরনের জ্বর থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। দেশের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি রয়ে গেছে শীতের আমেজ। সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত বিরাজ করে শীতের আবহ। বর্তমানে গরম ও শীতের মাঝামাঝি অবস্থা বিরাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি বছরই এমন সময়ে মৌসুমি জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। এবারও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। মৌসুমি জ্বরে একজন আক্রান্ত হলে পরিবারের কোন সদস্যই রেহাই পাচ্ছে না। সব বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে কিছু ওষুধপত্র সেবন করলে কয়েকদিনের মধ্যেই সমস্যা কেটে যাবে। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে মৌসুমি জ্বরে আক্রান্তের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও বিএমএর সিনিয়র সহ-সভাপতি ডাঃ আব্দুর রউফ সরদার বলেন, সর্দি-কাশি জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের ভিড় বেড়েছে। প্যারাসিটামল ও এন্টিহিস্টাসিন খেলেই এটি ভাল হয়ে যায়। ছোঁয়াচে হওয়ার কারণে অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়াই ভাল। বিশ্রামে থাকতে হবে। হাঁচি দেয়ার সময় রুমাল বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে এমনটি হয়ে থাকে। নগরীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও (মিটফোর্ড হাসপাতাল) সর্দি-কাশি জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও মৌসুমি জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েও এসব রোগে আক্রান্ত রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল্লাহ জনকণ্ঠকে জানান, আগের তুলনায় মৌসুমি জ্বরে আক্রান্ত রোগীর ভিড় বেড়েছে। আমার ব্যক্তিগত চেম্বারেও এ ধরনের রোগীর আগমন বেড়েছে। সব বয়সের মানুষই আক্রান্ত হচ্ছে। চেম্বারে প্রতিদিন ১৬ থেকে ২০ জন রোগী আসছে। তিনি জানান, এটি ভাইরাসজনিত রোগ। আর ভাইরাসবাহিত এসব রোগ অন্য আরেকটি রোগে আক্রান্ত হতে সহায়তা দেয়। আবহাওয়ার বিরূপ আচরণের কারণে এসব রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। রোদে ঘোরাফেরা কমাতে হবে। বাইরের খোলা জায়গার খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। বেশি পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খাওয়া উচিত। নিয়মিত শরীর মুছে দিতে হবে। জ্বর থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে জ্বর কমানোর ও শরীরের ব্যথা কমার ওষুধ খেতে পারেন। খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক রাখতে হবে। শরীরে যাতে পুষ্টির অভাব না হয়, সে জন্য পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
×